Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
হুগলিতে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্প

লক্ষ্যমাত্রা পূরণে নাজেহাল পঞ্চায়েত

একশো দিনের কাজ প্রকল্পে লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে গিয়েছে হুগলি জেলা প্রশাসন। আর সেই মতো কাজ করাতে গিয়ে নাকাল হচ্ছেন পঞ্চায়েত স্তরের কর্তারা! এর জেরে নানা অনিয়মও হচ্ছে বলে অভিযোগ।

পী়যূষ নন্দী
আরামবাগ শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৭ ০১:৫৬
Share: Save:

একশো দিনের কাজ প্রকল্পে লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে গিয়েছে হুগলি জেলা প্রশাসন। আর সেই মতো কাজ করাতে গিয়ে নাকাল হচ্ছেন পঞ্চায়েত স্তরের কর্তারা! এর জেরে নানা অনিয়মও হচ্ছে বলে অভিযোগ।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এপ্রিলের মাঝামাঝি জেলায় বৈঠক ডেকে ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, প্রতিটি পঞ্চায়েতকে প্রতিদিন ৪০০টি করে শ্রমদিবস (এক জন শ্রমিকের একদিনের কাজকে একটি শ্রমদিবস ধরা হয়) তৈরি করতে হবে। অর্থাৎ, জেলার ২০৭টি পঞ্চায়েত থেকে প্রতিদিন ৮২ হাজার ৮০০টি শ্রমদিবস তৈরি করতে হবে।

কিন্তু হঠাৎ লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হল কেন?

প্রশাসনের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি মাসের মাঝামাঝি হুগলিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক সভা হওয়ার কথা। আর সেই কারণেই এই প্রকল্পে জোর দেওয়া হচ্ছে। যদিও কোনও কর্তা এ কথা সরাসরি স্বীকার করছেন না। অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) প্রদীপ আচার্য জানান, চলতি অর্থবর্ষের প্রথম থেকেই যদি প্রকল্পের কাজে গতি থাকে, সে জন্য লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে পঞ্চায়েতগুলিকে। কাজটি চাপিয়ে দেওয়া হয়নি। লক্ষ্যমাত্রা পূরণে কোনও অনিয়ম যাতে না-হয়, তা নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। অনিয়ম হলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রশাসনিক সতর্কবার্তা সত্ত্বেও অনিয়ম আটকানো যাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠছে বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকা থেকেই। সেই অভিযোগ তুলছেন নির্মাণ সহায়কেরাই। এপ্রিল-মে মাস এমনিতেই ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের ‘মন্দা মরসুম’ বলে চিহ্নিত। কারণ, এই সময় বোরো ধান কাটা, বাদাম তোলা বা তিল-পাট চাষের সময়। ফলে, কাজ চেয়ে পঞ্চায়েতে গ্রামবাসীদের আবেদন কম আসে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিভিন্ন পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়কদের অভিযোগ, এই সময় কাজ বলতে মূলত নিকাশি-নালা সংস্কার, নদীবাঁধ বা গ্রামীণ রাস্তা সংস্কার। নদীবাঁধ ছাড়া বাকি দু’টি কাজ আগে একাধিকবার হওয়ার পরেও অনেক জায়গায় ফের হচ্ছে। যে সব কাজে ২০০ শ্রমিকের দরকার, সেখানে ৫০০ শ্রমিক দেখানো হচ্ছে। টাকাও নয়ছয় হচ্ছে।

সমস্যার কথা মানছেন কিছু ব্লকের বিডিও-রাও। তাঁদের মতে, এই সময়ে সত্যিকারের কাজ করতে হলে লক্ষ্যমাত্রার বড়জোড় ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ ছোঁয়া সম্ভব। কিন্তু জেলা প্রশাসনেরই হিসেব বলছে, চলতি অর্থবর্ষের গোড়া থেকে ২ মে পর্যন্ত জেলায় মোট ৭ লক্ষ ৮৯ হাজার ৬০০ শ্রমদিবস তৈরি হয়ে গিয়েছে। যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন পঞ্চায়েত স্তরের অনেকেই।

অন্য বিষয়গুলি:

Panchayet Target
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE