বিক্ষোভ: স্মারকলিপি দিতে যাওয়ার পথে। নিজস্ব চিত্র
দিন কয়েক আগে হুগলির প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পান্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সভাপতি চম্পা হাজরা বলেছিলেন, পান্ডুয়ায় সব কাজ হয়ে গিয়েছে। নতুন কোনও প্রকল্পের চাহিদা নেই। চম্পাদেবীর ওই বক্তব্যের পরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে পান্ডুয়া জুড়ে। বিরোধী দলগুলি এবং গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি, পান্ডুয়া ব্লকের নানা জায়গায় এখনও অনেক কাজ বাকি। শুধু মুখে নয়, সভাপতির বক্তব্যের বিরোধিতায় এ বার পথে নামল বিজেপি।
চম্পাদেবীর বক্তব্যের প্রতিবাদে এবং পান্ডুয়ায় বিভিন্ন প্রকল্পের দাবিতে সোমবার বিজেপির তরফে বিডিও-র কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হল। আন্দোলনকারীদের দাবি, ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় পানীয় জলের সঙ্কট রয়েছে। অনেক রাস্তাঘাট এখনও কাঁচা। কোনও রাস্তা ভেঙে গিয়েছে। এই সব না হওয়া কাজগুলি অবিলম্বে শুরু হোক। ব্লক প্রশাসনের এক কর্তা জানান, দাবি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পান্ডুয়ার বিজেপি নেতা দেবপ্রসাদ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সভাপতি বলেছেন, পান্ডুয়ার সব উন্নয়ন হয়ে গিয়েছে। অজ্ঞতাবশত হোক বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত— তিনি অসত্য বলেছেন। পান্ডুয়ায় তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আসলে পুতুলমাত্র। তাঁকে সামনে রেখে তাঁর দলের কয়েকজন নেতা ছড়ি ঘোরান।’’
২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে পান্ডুয়ায় পঞ্চায়েত সমিতির ৪৬টি আসনের মধ্যে বামেরা জিতেছিল ৩৫টি (সিপিএম ৩৪টি, ফরওয়ার্ড ব্লক ১টি)। তৃণমূল পেয়েছিল মাত্র ১১টি আসন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে তৃণমূল ওই পঞ্চায়েত সমিতিতে অনাস্থা এনে ক্ষমতা দখল করে। বিরোধীদের অভিযোগ, টাকা ছড়িয়ে এবং ভয় দেখিয়ে বামেদের কয়েকজন সদস্যকে দলে টেনেছে তৃণমূল। তবে তিন মাস কেটে গেলেও তৃণমূল এখনও ওই পঞ্চায়েত সমিতিতে স্থায়ী বোর্ড তৈরি করতে পারেনি। অর্থ কমিটি বা স্থায়ী কমিটি না থাকায় ২০১৭-’১৮ সালের বাজেটও পেশ করা যায়নি বলে সিপিএমের অভিযোগ।
বিরোধীদের অভিযোগ, স্থায়ী কমিটি না থাকায় কোপ পড়ছে উন্নয়নে। ভোটে জিতে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হয়েছিলেন সিপিএমের চম্পা মাঝি। তাঁর ক্ষোভ, ‘‘তৃণমূল আমাদের মেরে তাড়াল। পুলিশ-প্রশাসন কিছু করল না। ওদের হাতে পড়ে এখন পান্ডুয়ার উন্নয়ন স্তব্ধ। বাজেট না হওয়ায় পঞ্চায়েত সমিতির টাকাও খরচ করা যাবে না।’’ পান্ডুয়ার সিপিএম বিধায়ক আমজাদ হোসেনের প্রতিক্রিয়া, ‘‘খালি চোখে পঞ্চায়েত সমিতির উন্নয়ন দেখা যাচ্ছে না। তাই মিথ্য বলা ছাড়া উপায় কী!’’
পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি চম্পা হাজরার বক্তব্য, ‘‘স্থায়ী সমিতি গঠন করা প্রশাসনের ব্যাপার।’’ তাঁর দাবি, ‘‘উন্নয়নের কাজ সুষ্ঠুভাবেই চলছে। আমরা বাজেট করে সেটি অনুমোদনের জন্য জেলায় পাঠিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy