হাসপাতালে রাজেনবাবু। শুক্রবার। ছবি: নিজস্ব চিত্র
কোল্যাপসিবল গেটে তালা ঝুলছে। ভিতরে কাঠের দরজাও বন্ধ। বারবার ডাকাডাকিতেও দরজা খুলছিলেন না বৃদ্ধ। শেষে ফ্ল্যাটের পিছনের জানলা দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখা গেল, মেঝেতে পড়ে চাপ চাপ রক্ত!
শুক্রবার দুপুরে এই দৃশ্য দেখার পরেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে বালির গোস্বামীপাড়ায়। বৃদ্ধ কী অবস্থায় আছেন, তা নিয়ে দেখা দেয় সংশয়। শেষে প্রায় দু’ঘণ্টা পরে দরজা ভেঙে দেখা যায়, বৃদ্ধ জীবিত রয়েছেন। তাঁর কনুই ফেটে গিয়েছে। এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়েরা। তাঁদের অভিযোগ, খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে এসেও পুলিশ দরজা ভাঙেনি। তারা অপেক্ষা করে ওই বৃদ্ধের পরিজনেদের আসার জন্য। হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। কর্তব্যে গাফিলতি প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
স্থানীয় সূত্রের খবর, বালির গোস্বামীপাড়ায় একটি চারতলা আবাসনের একতলায় পিছনের দিকের ফ্ল্যাটে একাই থাকেন রাজেন গঙ্গোপাধ্যায় (৬০)। বালির ৫৪ নম্বর বাসস্ট্যান্ডে তাঁর একটি সাইকেল জমা রাখার দোকান রয়েছে। রোজ ভোর ৫টা নাগাদ দোকানে চলে যেতেন রাজেনবাবু। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ বাইরে থেকে খাবার কিনে ফ্ল্যাটে ফিরতেন। বৃহস্পতিবার রাতেও রাজেনবাবুকে রুটি ও মিষ্টি কিনে বাড়ি ঢুকতে দেখেছিলেন স্থানীয়েরা।
স্থানীয়েরা জানান, এ দিন দুপুরে রাজেনবাবুর খোঁজ করতে আসেন তাঁর কয়েক জন পরিচিত। কিন্তু ফ্ল্যাটের পিছন দিকে যাওয়ার জন্য ‘কমন প্যাসেজ’-এর চাবি না থাকায় তাঁরা ঢুকতে পরছিলেন না। আর এক বাসিন্দার সহযোগিতায় রাজেনবাবুর ঘরের সামনে গিয়ে ডেকেও সাড়া মেলেনি। এর পরে ওই ব্যক্তিরা ফ্ল্যাটের পিছন দিকে গিয়ে ভাঙা জানলা দিয়ে দেখেন, মেঝেতে পড়ে আছে রক্ত। রয়েছে রক্তমাখা একটি লুঙ্গিও। এর পরেই খবর পেয়ে আসে পুলিশ।
স্থানীয় বাসিন্দা রুচিতা দে বলেন, ‘‘কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারকে বারবার দরজা ভাঙতে অনুরোধ করলেও তিনি তা করেননি।’’ ঘণ্টাখানেক কেটে যাওয়ার পরেও বৃদ্ধ উদ্ধার না হওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন বাসিন্দারা। তাঁরা জানান, এর পরে সাদা পোশাকের পুলিশবাহিনী এসে শাবল, হাতুড়ি দিয়ে দরজা ভাঙে। পুলিশ ঢুকতেই হুড়মুড়িয়ে উঠে বসেন বৃদ্ধ। তাঁকে পুলিশের গাড়িতেই বেলুড় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
চিকিৎসকেরা বৃদ্ধকে পরীক্ষা করে জানান, উচ্চ রক্তচাপজনিত কারণে পড়ে গিয়ে তাঁর হাতে চোট লেগেছিল। তাতেই রক্তক্ষরণ হয়েছে। বৃদ্ধ জানান, বাথরুমে মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলেন। এর পরে হাত দিয়ে রক্ত বেরোতে থাকে। কোনও ভাবে ঘষটে ঘষটে বাথরুম থেকে ঘরে এসে জ্ঞান হারান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy