Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
দিল্লির দূষণ থেকে কি শিক্ষা নেবে রাজ্য, উঠছে প্রশ্ন

নাড়া পোড়া বন্ধে যথেষ্ট প্রচার নেই

আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না পরিবেশপ্রেমীরা। আমন ধান কাটার মরসুম আসছে। এ বারও এই জেলার গ্রামাঞ্চলের বহু জমিতে নাড়া (ধান গাছের গোড়া) পোড়ানো বন্ধ হবে না বলেই মনে করছেন তাঁরা।

দূষণ: এরকমই চিত্র গত বছর দেখেছে হুগলি। —ফাইল চিত্র

দূষণ: এরকমই চিত্র গত বছর দেখেছে হুগলি। —ফাইল চিত্র

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় 
সিঙ্গুর শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:৪৬
Share: Save:

কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী কি এ বারও দেখা যাবে হুগলির আকাশে?

আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না পরিবেশপ্রেমীরা। আমন ধান কাটার মরসুম আসছে। এ বারও এই জেলার গ্রামাঞ্চলের বহু জমিতে নাড়া (ধান গাছের গোড়া) পোড়ানো বন্ধ হবে না বলেই মনে করছেন তাঁরা। কারণ, এখনও সরকারি প্রচারে জোর নেই। সম্প্রতি দিল্লিতে দূষণের পিছনে পঞ্জাব, হরিয়ানা এবং উত্তরপ্রদেশে এই রকম নাড়া পোড়ানোই কারণ বলে অভিযোগ উঠেছে। অবিলম্বে ওই তিন রাজ্যকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। চাষিরা সতর্ক না হলে তেমনই দূষণ-চিত্র হুগলিতে এ বারও ফিরে আসবে বলে মনে করছেন অনেকে।

রাজ্যের অন্যতম প্রধান ধান উৎপাদক জেলা হুগলি। তাই নাড়া পোড়ানোর সমস্যা হুগলিতে যথেষ্টই বেশি। গতবারও ধান ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই চণ্ডীতলা-১ ও ২ ব্লক, জাঙ্গিপাড়া, সিঙ্গুর, হরিপাল, আরামবাগ, ধনেখালি এবং বলাগড়ের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ধানজমিতে নাড়া পোড়াতে দেখা গিয়েছে চাষিদের। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে ধরে যেতে গিয়ে বহুবারই চোখে পড়েছে কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী। যার জেরে অনেকে শ্বাসকষ্টেও ভুগেছেন।

পরিবেশ দফতর এবং কৃষি দফতর নিয়মমাফিক চাষিদের নাড়া পোড়াতে বারণ করে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে সেই নিষেধ কতটা মানা হয়, সে প্রশ্ন উঠছেই। অনেক পঞ্চায়েতের প্রধানই সে ভাবে দূষণ রোখার মর্মে এ পর্যন্ত নির্দিষ্ট কোনও ‘গাইড লাইন’ পাননি বলে দাবি করেছেন। জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘বাতাসের মান ঠিক রাখতে নাড়া পোড়া বন্ধে আমরা প্রচার শুরু করেছি। সার্বিক আরও পরিকল্পনা করা হচ্ছে। নাড়া না পুড়িয়ে জমিতেই যাতে সার তৈরি করা যায়, সে বিষয়ে আমরা পরামর্শ দিচ্ছি চাষিদের।’’

কিন্তু হুগলির বেশ কিছু পঞ্চায়েত ঘুরেও সেই প্রচার তেমন নজরে পড়েনি। তবে, নাড়া পোড়া থেকে যে বায়ু দূষণ হচ্ছে, সে ব্যাপারে ওয়াকিবহাল সিঙ্গুরের কেজেডি পঞ্চায়েতের প্রধান নবনীতা অধিকারী। তিনি বলেন, ‘‘ধানের গোড়া অনেক সময়েই চাষিরা জমিতে জ্বালিয়ে দেন। তাতে বাতাস তো নষ্ট হচ্ছেই। কৃষিজমিও খারাপ হচ্ছে। এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত ব্লক অফিস থেকে আমরা গাইড-লাইন পাইনি। একদিন সামান্য আলোচনা হয়ে। তবে ধান ওঠার সময় এসে যাচ্ছে।, এ নিয়ে কথা বলব।’’ জাঙ্গিপাড়ার রসিদপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান স্বপন পাত্রের গলাতেও একই সুর। তিনি বলেন, ‘‘আমরা প্লাস্টিক প্রতিরোধে কাজ করলেও নাড়া নিয়ে গ্রামস্তরে এখনও কোনও কাজ শুরু হয়নি।’’

শিয়াখালা পঞ্চায়েতের প্রধান পুজা মালিক অবশ্য দাবি করেছেন, তাঁদের পঞ্চায়েতে নাড়া পোড়ানোর বিরুদ্ধে প্রচার শুরু হয়েছে। তিনি বলেন,‘‘আমরা মাইকে প্রচার করছি। চাষিদের সচেতন করতে ব্যানারও টাঙানো হয়েছে।’’ চণ্ডীতলার কৃষি আধিকারিক সৌরভ চট্টোপাধ্যায় বলেন,‘‘আমরা ইতিমধ্যেই চাষিদের নিয়ে মোট তিনটি বৈঠক করেছি। তাঁদের নাড়া না-পোড়াতে পরামর্শ দিয়েছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Stubble Burning West Bengal Singur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy