Advertisement
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
শিকেয় করোনা নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি
Public Gatherings

বিয়েবাড়িতে মাস্কহীন অতিথির ভিড়, আশঙ্কা

ট্রেন চালু হয়েছে কুড়ি দিন আগে। হুগলিতে করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা ২৫ হাজার পেরিয়ে গিয়েছে।

বেলাগাম: উত্তরপাড়ার একটি অনুষ্ঠান-বাড়ি। — নিজস্ব চিত্র

বেলাগাম: উত্তরপাড়ার একটি অনুষ্ঠান-বাড়ি। — নিজস্ব চিত্র

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় 
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২০ ০৫:৫৩
Share: Save:

করোনার রেখচিত্র ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় কলকাতার কিছু জায়গাকে ফের ‘গণ্ডিবদ্ধ এলাকা’ ঘোষণা করা হয়েছে। বিভিন্ন জেলাতেও সংক্রমণ এখনও বাগে আসেনি। এর মধ্যে বিয়ের মরসুম হাজির। সরকারি নির্দেশিকায় পারিবারিক উৎসব-অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতের সংখ্যা দু’শোর মধ্যে বেঁধে দেওয়া হলেও বাস্তব চিত্র বলছে অন্য কথা। শিকেয় উঠছে স্বাস্থ্যবিধি। তাতে আশঙ্কার কথা শোনা যাচ্ছে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মুখে।

ট্রেন চালু হয়েছে কুড়ি দিন আগে। হুগলিতে করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা ২৫ হাজার পেরিয়ে গিয়েছে। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন বলছে, নভেম্বরের ৫ তারিখ থেকে পরবর্তী দশ দিনে হুগলিতে দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল গড়ে আড়াইশোর বেশি। তার পরে সংক্রমণের হার কিছুটা কমলেও পুরোপুরি বাগে আসেনি। এই দু’সপ্তাহে (রবিবার পর্যন্ত) মোট সংক্রমিত ৩২১৬ জন। গড়ে দৈনিক প্রায় ২৩০ জন। রবিবার সংক্রমিত হয়েছেন ১৯০ জন। ২২ নভেম্বর সংক্রমিত হয়েছিলেন ৩৬৮ জন। তবে অ্যাক্টিভ আক্রান্তের সংখ্যা আটশোর ঘরে নেমেছে। এই সময়ের মধ্যে জগদ্ধাত্রী, কার্তিক পুজো চলে গিয়েছে। যদিও, স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের আশঙ্কা, করোনাকে হেলাফেলা করলে বিপদ বাড়বে। তাই সতর্কতা অবলম্বনের উপরেই তাঁরা জোর দিচ্ছেন।

যদিও, পুলিশ-প্রশাসনের নজরদারির ঢিলেমির সুযোগ নিয়ে অনুষ্ঠান-বাড়িতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সংখ্যার সীমা মানা হচ্ছে না। যথাযথ ভাবে সব কিছু স্যানিটাইজ় করা হচ্ছে না। তার উপরে অনুষ্ঠান-বাড়িতে বিশেষত মহিলারা মাস্ক পরছেন না। পুরুষদের ক্ষেত্রে আবার অনেকের মাস্ক থুতনির নীচে ঝুলতে দেখা যাচ্ছে। ফলে, কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। এক শ্রেণির মানুষের মধ্যে সতর্কতা ছেড়ে এই বেপরোয়া ভাবকেই ডরাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

রবিবার রাতে উত্তরপাড়ার বিভিন্ন অনুষ্ঠান-বাড়ির বাইরে দেখা গিয়েছে, থিকথিকে ভিড়। অন্তত ২৫-৩০টি মোটরবাইক দাঁড়িয়ে। সঙ্গে গাড়ির লাইন। অনুষ্ঠান-বাড়ির মালিকদের দাবি, কেউ ভাড়া নিতে এলেই সরকারি নির্দেশিকার কথা তাঁরা জানিয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু বাড়তি লোক এলে ফিরিয়ে দেওয়া তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়। যাঁরা বাড়ি ভাড়া নিচ্ছেন, দায় তাঁদের। একটি অনুষ্ঠান বাড়ির-মালিক বলেন, ‘‘প্রশাসন নজরদারি চালিয়ে ব্যবস্থা নিতেই পারে। তাতে আমাদের কিছু বলার নেই।’’

প্রশাসনিক নজরদারি যে নেই, রবিবার রাতে উত্তরপাড়ার শিবমন্দির ক্লাবের কাছে একটি অনুষ্ঠান-বাড়ির সামনে উপছে পড়া ভিড়েই তার প্রমাণ মিলেছে। একই ছবি উত্তরপাড়া স্টেশনের কাছে সিএ মাঠ লাগোয়া একটি অনুষ্ঠান-বাড়ির সামনেও দেখা গিয়েছে।

চিকিৎসক শুভদীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শীতে এমনতিই ভাইরাসের কারণে অসুস্থতার হার বাড়ে। তার উপরে অনুষ্ঠান-বাড়িতে কেউ কিছু মানছেন না। অতিরিক্ত লোকের জমায়েত হচ্ছে। এই বেলাগাম

নৈকট্য করোনা ছড়ানোর পক্ষে

আদর্শ হতে পারে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘শরীর খুব খারাপ না হলে অনেকের মধ্যে করোনা পরীক্ষা করার ক্ষেত্রে অনীহা, চেপে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।’’ সব মিলিয়ে পরিস্থিতি বিশেষ অনুকূলে নেই বলে তিনি মনে করছেন।

তথ্য সহায়তা: প্রকাশ পাল

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Public Gatherings No Mask No Corona Protocols
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE