Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

পড়শিকে গুলি করে ‘খুন’, বেপাত্তা তরুণ

বুকে ওয়ান শটার ঠেকিয়ে প্রতিবেশী তরুণকে গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠল সদ্য প্রাপ্তবয়স্ক এক তরুণের বিরুদ্ধে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৬ ০০:৫১
Share: Save:

বুকে ওয়ান শটার ঠেকিয়ে প্রতিবেশী তরুণকে গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠল সদ্য প্রাপ্তবয়স্ক এক তরুণের বিরুদ্ধে। বুধবার রাতে জগদ্দল আতপুর শাস্ত্রীনগর পঞ্চাননতলা ঘাটের ওই ঘটনার পরে এলাকাবাসীরা অবশ্য জানাচ্ছেন, মারধর, ভাঙচুর, শ্লীলতাহানির মতো অপরাধে বেশ কিছু দিন ধরেই জড়াচ্ছিল অভিযুক্ত সোমনাথ দাস। পুলিশের ক্রাইম রেকর্ড অনুযায়ী, পাঁচ বছরে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে খুনে অভিযুক্তদের একটা বড় অংশের বয়স বয়স ষোলো থেকে বাইশের মধ্যে। তালিকায় নবতম সংযোজন জগদ্দলের এই ঘটনাটি উদ্বেগ বাড়িয়েছে পুলিশের।

পুলিশ জানায়, পঞ্চাননতলা ঘাটের কাছে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় স্থানীয় বাসিন্দা সঞ্জয় লোহার (১৮)-কে। হাসপাতালের পথেই তাঁর মৃত্যু হয়। মৃতের মা ও পড়শিদের দাবি, ওয়ান শটার ঠেকিয়ে সঞ্জয়কে খুন করে সোমনাথ। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত অবশ্য খুনের কারণ নিয়ে ধন্দে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, সঞ্জয় ওরফে টুসু পেশায় রাজমিস্ত্রির জোগাড়ে। মা লক্ষ্মীদেবী পুলিশকে জানান, ঘটনার কিছু আগেও রাস্তায় সিমেন্ট-বালি মাখছিল সঞ্জয়। ছেলেকে খেতে ডাকলে বাড়িতে এক বার গেলেও সঙ্গে সঙ্গেই সাইকে‌ল নিয়ে বেরিয়ে যায় সঞ্জয়। লক্ষ্মীদেবী বলেন, ‘‘জোরে সাইকেল চালিয়ে এক বার আতপুর ফাঁড়ির দিকে, তার কিছুক্ষণের মধ্যেই পঞ্চাননতলা ঘাটের দিকে যেতে দেখি ওকে। তখন সওয়া ন’টা। রাত দশটা নাগাদ পাড়ার অনেকে এসে বলল, সোমনাথ আমার ছেলেকে গুলি করেছে। গিয়ে দেখি, যেখানে বালি সিমেন্ট মাখছিল, সেখানেই রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।’’

পুলিশ জেনেছে, সোমনাথের দলের সঙ্গে বচসা বেধেছিল সঞ্জয়ের। তা চলাকালীন রাত পৌনে দশটা নাগাদ হঠাৎই সোমনাথ গুলি চালিয়ে দেয়। ঘটনাস্থলের কাছে পুলিশ ফাঁড়ি। পুলিশ পৌঁছতেও খুব সময় লাগেনি। কিন্তু ততক্ষণে সোমনাথ বেপাত্তা। সঞ্জয়কে প্রথমে ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতাল ও পরে সেখান থেকে কল্যাণী জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয় তাঁর। এর জেরে সোমনাথের বাড়িতে ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত জনতা।

অভিযুক্তের বাবা-মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। সোমনাথের বাবা, পেশায় রাজমিস্ত্রি বলাই দাসের দাবি, ‘‘কোনও ভাবে ঘটে গিয়েছে। আগে ওকে পুলিশ ধরলেও ছাড়া পেয়ে গিয়েছে।’’ সদ্য আঠেরো পেরোনো ছেলের বিরুদ্ধে অস্ত্র রাখা, খুনের অভিযোগ ও তাঁর বাবার বক্তব্য দুই-ই চিন্তা বাড়িয়েছে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশকর্তাদের।

কমিশনার তন্ময় রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘কড়া পদক্ষেপ করা না হলে অল্পবয়সীদের অপরাধ প্রবণতা আরও বেড়ে যাবে। যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। কোন আক্রোশে এই বয়সের একটি ছেলে সমবয়সী কাউকে খুন করতে পারে, তা জানা দরকার।’’

বুধবার রাতের পরে এলাকায় পুলিশ পিকেট বসেছে। মোতায়েন হয়েছে র‌্যাফ ও মহিলা পুলিশও। জিজ্ঞাসাবাদে সোমনাথ সম্পর্কে পড়শিদের বক্তব্য, ‘‘ও তো যাকে ইচ্ছে মারধর করত।’’ ছেলের মৃত্যুতে ভেঙে পড়লেও পুলিশকে লক্ষ্মীদেবী বলেন, ‘‘একশো টাকা নিয়ে গণ্ডগোলের জেরে আমার মেজ ছেলে সুজয়কে মাস পাঁচেক আগে মেরেছিল সোমনাথ। কুপিয়ে খুনের হুমকিও দিয়েছিল। সঞ্জয়ের সঙ্গে কী নিয়ে গোলমাল, কিছুই জানি না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

neighbor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE