Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
HighCourt

সন্তান ফিরে পেতে আদালতে

মামলাকারীর অভিযোগ, গত ৮ অক্টোবর ওই দম্পতির বাড়িতে আসেন কয়েক জন ব্যক্তি।

হাই কোর্ট। ফাইল চিত্র।

হাই কোর্ট। ফাইল চিত্র।

মারাজীব চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২০ ০৬:১২
Share: Save:

সন্তানকে ফিরে পেতে হুগলি জেলার চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন তারকেশ্বরের এক মহিলা। মামলার প্রথম শুনানির পরে বিচারপতির নির্দেশ, সন্তানকে যে হোমে রাখা হয়েছে, নির্দিষ্ট সময়ান্তরে সেখানে যাবেন আবেদনকারী। হোমের আধিকারিকদের নজরদারিতে সন্তানকে খাওয়াবেন তিনি। কেন শিশুটিকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে তা আদালতকে জানানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটিকে।

গত বছরের ১৮ নভেম্বর হরিপালের গজারমোড় এলাকার একটি নার্সিংহোমে এক পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন ওই মহিলা। তারপর গত ৩ ফেব্রুয়ারি ‘অ্যাডপশন ডিড’ (কোর্টপেপারে দত্তক দেওয়ার ঘোষণাপত্র) তৈরি করে সন্তানকে হরিপালের এক দম্পতিকে দত্তক দেন তিনি। মহিলার দাবি, ওই দম্পতি তাঁর পরিচিত।

মামলাকারীর অভিযোগ, গত ৮ অক্টোবর ওই দম্পতির বাড়িতে আসেন কয়েক জন ব্যক্তি। নিজেদের জেলাশাসকের প্রতিনিধি দাবি করে তাঁরা শিশুটিকে জোর করে নিয়ে যান। সরকারি কোনও নথি তাঁদের দেখানো হয়নি। কেন শিশুটিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তার-ও কারণ ওই ব্যক্তিরা জানাননি বলে অভিযোগ। পরে তাঁরা জানতে পারেন শিশুটিকে উত্তরপাড়ার এমন একটি হোমে রাখা হয়েছে, যেখানে অনাথ শিশুরা থাকে।

গত মাসে শিশুর মা এবং ওই দম্পতি চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি, জেলাশাসক, পুলিশ সুপার-সহ প্রশাসনের একাধিক আধিকারিকের কাছে শিশুটিকে তাঁদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার আবেদন করেন। কিন্তু তাতে কাজ না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করা হয়।

আদালতের কাছে ওই মহিলার আবেদন, সন্তানকে তাঁর কাছে অথবা দত্তক নেওয়া দম্পতির কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হোক।

আবেদনকারীর আইনজীবী ফিরদৌস শামিম জানান, গত বৃহস্পতিবার মামলার শুনানি শেষে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহ নির্দেশ দেন, কেন শিশুটিকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে, তার কারণ ব্যখ্যা করে আগামী ২০ নভেম্বরের মধ্যে আদালতে হলফনামা দিতে হবে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটিকে। পাশাপাশি ওই মহিলা যাতে নির্দিষ্ট সময়ান্তরে নিজের সন্তানকে খাওয়াতে পারেন, তার জন্য তাঁকে হোমে ঢুকতে দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন বিচারপতি। শিশুটির দেখভাল ঠিকমতো হচ্ছে কিনা, তা আদালতকে জানাতে বলা হয়েছে। শামিমের বক্তব্য ‘‘জন্মদাত্রী এবং দত্তক নেওয়া বাবা-মা থাকা সত্ত্বেও এক জন শিশুকে অনাথ বলা যায় না। অনাথ আশ্রমে রাখা যায় না।’’

আদালতের রায়ে উল্লেখ রয়েছে, ওই শিশুটিকে পাচার করা হয়েছিল বলে মামলার শুনানিতে সরকার পক্ষের আইনজীবী দাবি করেছেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, ‘অ্যাডপশন ডিড’-টি আইনত বৈধ নয়। ‘অ্যাডপশন ডিড’ করে সন্তানকে দত্তক দেওয়া ঠিক হয়নি। বাচ্চাটিকে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির হেফাজতে রাখা হয়েছে। শিশুটির কল্যাণের বিষয়টি সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই মুহূর্তে আবেদনকারী বা ওই দম্পতির কাছে এখনই তাকে ফিরিয়ে দেওয়া নিয়ে কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি। আগামী ২৪ নভেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি।

জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারম্যান শুভাশিস নন্দী বলেন, ‘‘আদালতের রায় সম্পর্কে মন্তব্য করার কিছু নেই। এ বিষয় নিয়ে আমি কিছু বলব না। তবে সাধারণ ভাবে অনেক ঘটনা দেখে মনে হয়েছে, দত্তক দেওয়া বা নেওয়া সংক্রান্ত আইনি বিষয় নিয়ে অনেকেরই সম্যক জ্ঞান নেই।’’

অন্য বিষয়গুলি:

HighCourt Child Welfare Committee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy