আক্রান্ত: হাওড়া হাসপাতালে সুনীলবাবু। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
রাত হলেই এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল দুষ্কৃতীরা। গৃহস্থের বাড়ির সামনেই বসছিল মদের আসর। প্রতিবাদ করলে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে হুমকি দিচ্ছিল তারা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশকে বার বার জানিয়েও লাভ হয়নি। এ বার এলাকায় একটি মন্দির তৈরির জন্য টাকা চেয়েও না পাওয়ায় ওই দুষ্কৃতীরাই গুলি করে খুন করার চেষ্টা করল এলাকার এক ব্যবসায়ীকে।
মঙ্গলবার বিকেলে ওই ঘটনা ঘটেছে মধ্য হাওড়ার জগাছা থানা এলাকার ইছাপুরের একটি ক্লাবের কাছে, কেদার ভট্টাচার্য লেনে। পুলিশ সূত্রের খবর, নিজের কারখানার সামনেই এ দিন গুলিবিদ্ধ হন সুনীল ভৌমিক ওরফে বুলু নামে এক লোহার ব্যবসায়ী। চার-পাঁচ জন দুষ্কৃতী হাঁটতে হাঁটতে এসে তাঁকে গুলি করে পালায় বলে অভিযোগ। এক দুষ্কৃতী এক জন মোটরবাইক আরোহীর থেকে তাঁর বাইকটি ছিনিয়ে নিয়ে চম্পট দেয়। পুলিশ জানায়, ওই ব্যবসায়ীকে গুরুতর জখম অবস্থায় হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছু দিন ধরেই একটি মন্দির তৈরি করাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা ছড়াচ্ছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, একটি রাজনৈতিক দলের মদতপ্রাপ্ত কয়েক জন দুষ্কৃতী ওই মন্দির তৈরির জন্য ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের কাছ থেকে মোটা টাকা তুলছিল। এ দিনও ওই দুষ্কৃতীরা সুনীলের কাছে ‘চাঁদা’ চাইতে যায়। টাকা দিতে না-চাওয়ায় চেয়ারে বসে থাকা ওই ব্যবসায়ীর বুকে পরপর দুটো গুলি করে তারা।
সুনীলের দাদা অনিল ভৌমিক বলেন, ‘‘এলাকার কিছু ছেলে চাঁদা তোলার নামে জুলুম করছে গত কয়েক দিন ধরে। ওরাই গুলি করে ভাইকে খুনের চেষ্টা করে।’’ এলাকার আর এক বাসিন্দা তপনকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘দু’দিন আগেও দীনেশ নামে এক যুবককে গুলি করা হয়। তিনি এখন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। নিত্যদিনই এখানে মোটরবাইক চুরি, ছিনতাই থেকে শুরু করে নানা অপকর্ম হচ্ছে। পুলিশ আসছে। দেখে চলে যাচ্ছে।’’
বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেখানে দুষ্কৃতীরা এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে, রাত নামলেই বিভিন্ন বাড়ির সামনে মদ্যপান করছে। গালিগালাজ করছে। কিছু বললেই ধারালো অস্ত্র বা আগ্নেয়াস্ত্র বার করে হুমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বললেন, ‘‘ওই এলাকায় দুষ্কৃতী কার্যকলাপ বাড়ার অভিযোগ কেউ করেননি। কয়েক দিন আগে এক যুবককে গুলি করা হয়েছিল। পুলিশ তদন্ত করছে। এ দিন যারা গুলি চালিয়েছে, সেই দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। পুলিশ ব্যবস্থা নেয়নি, এমন অভিযোগ ঠিক নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy