প্রতীকী ছবি।
পাত্র জানিয়েছিলেন, তিনি সুরাতে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। সেটা শুনে তাঁর সঙ্গে পনেরো বছরের বোনের বিয়ে দিয়েছিলেন মেয়েটির দাদা। বিয়ের পরে ওই নাবালিকাকে সুরাতে নিয়ে যান ছেলেটি। সেখানে গিয়ে মেয়েটি দেখে, ছেলেটি মিথ্যা বলেছেন। শুধু তাই নয়, ভাড়াবাড়িতে তাকে দিয়ে সব কাজ করাত স্বামী। ভুল হলে জুটত মার।
অন্য দিকে, গয়নার কাজ শেখানোর নাম করে ১০-১২ বছরের এক বালককে সেখানে নিয়ে যায় ওই যুবকের এক আত্মীয়। তাকে দিয়েও ঘরের কাজ করানো হত। ভুল হলে মারধর করা হত বলে অভিযোগ। অত্যাচার থেকে বাঁচতে সেখান থেকে পালিয়ে ছেলেটিকে নিয়ে হুগলিতে নিজের বাড়িতে ফিরে এল মেয়েটি। প্রশাসনের কাছে গোটা ঘটনা জানানোর পরে তাদের হোমে ঠাঁই হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, মেয়েটির বাড়ি ধনেখালি সিনেমাতলার কাছে। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছে। বাবা-মা মারা গিয়েছেন। দাদা শারীরিক প্রতিবন্ধী। ছোটখাট কাজ করেন। কয়েক মাস আগে তিনি বোনের বিয়ে ঠিক করেন। খবর পেয়ে প্রশাসন হস্তক্ষেপ করায় বিয়ে বন্ধ হয়।
যদিও তার পরে গুড়াপের বাসিন্দা এক যুবকের সঙ্গে মেয়েটির বিয়ে হয়। পাত্র জানান, সুরাতে তাঁর গয়নার দোকান আছে। বড় বাড়িতে থাকেন। প্রশাসনের আধিকারিকদের কাছে মেয়েটি জানা, সেখানে গিয়ে সে দেখে, ছেলেটি অপরের দোকানে কাজ করে। থাকে ভাড়াবাড়িতে। তাকে বাড়ির সব কাজ করতে হত।
অন্য দিকে, সম্প্রতি ওই যুবকের এক আত্মীয় চাঁপাডাঙার বছর দশ-বারোর এক বালককে সেখানে নিয়ে যায় গয়নার কাজ শেখানোর নাম করে। কিন্তু মেয়েটির পাশাপাশি তাকেও বাড়ির কাজে লাগানো হয়। শৌচাগার পর্যন্ত পরিষ্কার করতে হত। কাজে ভুল হলেই মারধর করা হত বলে অভিযোগ ওই দুই কিশোরী-কিশোরের।
অত্যাচার থেকে বাঁচতে দিন কয়েক আগে ছেলেটিকে নিয়ে ওই কিশোরী পালায়। ট্রেন ধরে রবিবার রাতে হাওড়ায় আসে। সেখান থেকে লোকাল ট্রেনে ধনেখালিতে নিজের বাড়িতে পৌঁছয়। সোমবার সকালে মেয়েটির দাদা চাইল্ড লাইনে ফোন করে গোটা বিষয়টি জানান। তাদের তরফে সংশ্লিষ্ট দফতরে জানানো হয়। এ দিকে, মেয়েটির স্বামী এবং আত্মীয় সুরাত থেকে ফিরে লোকজন নিয়ে ওই বাড়িতে এসে চেঁচামেচি শুরু করে।
চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির (সিডব্লিউসি) নির্দেশে পুলিশ এবং জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের প্যারালিগ্যাল ভলান্টিয়ার ওই বাড়িতে গিয়ে ওই কিশোরী এবং বালককে উদ্ধার করেন। সিডব্লিউসি-তে হাজির করানো হলে দু’জনকেই হোমে পাঠানো হয়।
মেয়েটি জানায়, সুরাতে ভাড়াবাড়িতে অনেক উটকো লোকের আনাগোনা ছিল। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, মেয়েটির চোখেমুখে ভয়ের ছাপ রয়েছে। তার কাউন্সেলিং করানো হচ্ছে। তার সঙ্গে কথা বলে আরও তথ্য জানার চেষ্টা করা হবে। চাঁপাডাঙার বালকটির পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
ডালসার সচিব অনির্বাণ রায় বলেন, ‘‘ছেলে-মেয়ে দু’টিকে সমাজের মূল স্রোতে ফেরানোর জন্য আইন অনুযায়ী সব চেষ্টাই করা হবে। প্রয়োজনে নিখরচায় চিকিৎসা, পড়াশোনার ব্যবস্থাও করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy