উলুবেড়িয়া সুপারস্পেশ্যালিটি হাসপাতালের নতুন ভবন। ফাইল চিত্র
চিঠিচাপাটি করে চিকিৎসকেরা অব্যাহতি পেয়েছেন। কিন্তু নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের কী হবে? এ বার ভোটের কাজে তাঁদেরও ডাকা হয়েছে। শুরু হয়ে গিয়েছে প্রশিক্ষণও। তাই ভোট-পর্বে স্বাস্থ্য পরিষেবা বজায় রাখা নিয়ে বেজায় চিন্তায় পড়েছে হাওড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর।
জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা জানান, সুপার, চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে শুধু উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতাল থেকেই মোট ৫৩ জনকে নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করতে হবে বলে চিঠি দিয়েছিল জেলা নির্বাচন কমিশন। চিঠি দেওয়ায় কমিশন সুপার এবং পাঁচ চিকিৎসককে ছাড় দিয়েছে। কিন্তু ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান, রেডিওলজিস্ট, ব্লাড ব্যাঙ্কের টেকনিশিয়ান, ফার্মাসিস্টের মতো স্বাস্থ্যকর্মীদের ভোটের কাজে প্রশিক্ষণ নিতে যেতে হচ্ছে। বিভিন্ন গ্রামীণ হাসপাতাল, ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকেও স্বাস্থ্যকর্মীদের ডাকা হয়েছে। রেহাই পাননি মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীরাও।
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাসের ক্ষোভ, ‘‘প্রতিবারেই স্বাস্থ্যকর্মীদের নির্বাচনের কাজে ডাকা হয়। কিন্তু আমরা চিঠি দিলে তাঁদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতিও দেওয়া হয়। এ বারে কিন্তু চিকিৎসক এবং মুষ্টিমেয় কয়েকজন স্বাস্থ্যকর্মী ছাড়া বেশির ভাগেরই অব্যাহতির চিঠি এখনও পাইনি। কী ভাবে চলবে, বুঝতে পারছি না।’’ তাঁর দাবি, উলুবেড়িয়া হাসপাতালের সুপার এবং চিকিৎসক-সহ ১৪ জনের নাম বাতিলের জন্য নির্বাচন দফতরে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সুপার, পাঁচজন চিকিৎসক ও একজন স্বাস্থ্যকর্মীর নাম বাতিল করা হয়েছে। এ নিয়ে জেলা নির্বাচনী আধিকারিক তথা জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী অবশ্য দাবি করেন, ‘‘যাঁদের না-হলে হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্র চলবে না, তাঁদের আমরা নির্বাচনের কাজ থেকে অব্যাহতি দিয়েছি।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
ওই হাসপাতাল সূত্রের খবর, স্বাস্থ্যকর্মীরা যে দিনগুলিতে প্রশিক্ষণ নিতে যাচ্ছেন, তখন নানা ক্ষেত্রে পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে। সেখানে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী পর্যাপ্ত নেই। যে ক’জন আছেন, তাঁদেরও প্রশিক্ষণ নিতে হচ্ছে। সুপার সুদীপরঞ্জন কাঁড়ার বলেন, ‘‘আমরা নতুন করে রক্তদান শিবিরের অনুমতি দিচ্ছি না। কর্মীরা নির্বাচনের প্রশিক্ষণ নিতে যাচ্ছেন। কাদের নিয়ে শিবির হবে? ভোটের সময় তিন দিন জরুরি পরিষেবা ব্যাহত হবে।’’
গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রেও সঙ্কট দেখা দিয়েছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি। ডোমজুড় গ্রামীণ হাসপাতালে মোট ১৯ জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর মধ্যে আছেন মাত্র ১১ জন। তাঁদের বেশিরভাগকে নির্বাচনের কাজ দেওয়া হয়েছে। চার জন সাফাইকর্মীরও ডাক পড়েছে নির্বাচনের কাজে। ডোমজুড় ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানান, ডোমজুড় গ্রামীণ হাসপাতালে বিভিন্ন বিভাগে প্রতিদিন গড়ে এক হাজার রোগী আসেন। দু’জন ফার্মাসিস্ট তাঁদের ওষুধ দেন। ওই দু’জন ফার্মাসিস্টকেই নির্বাচনের কাজ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা যে দিন প্রশিক্ষণ নিতে যান পরিষেবা অচল হওয়ার জোগাড় হয়। তাঁরা নির্বাচনের কাজে গেলে হাসপাতাল বন্ধ করে দিতে হবে, স্বাস্থ্যকর্তাদের আশঙ্কা।
এমন ত্রাহি রব শোনা যাচ্ছে বিভিন্ন ব্লকের স্বাস্থ্যকর্তাদের মুখেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy