ফাইল চিত্র।
বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস-বামফ্রন্টের জোট হবে কিনা, সময় বলবে। তবে, কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকার মতো হাওড়া জেলাতেও দু’পক্ষ নানা কর্মসূচিতে পরস্পর একসঙ্গেই এগোচ্ছে। রবিবার তার নবতম নজির দেখা গেল আমতায়। খালনা মোড়ে আয়োজিত প্রয়াত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের স্মরণসভায়।
জেলার ১৬টি বিধানসভার মধ্যে একমাত্র আমতা কংগ্রেসের দখলে আছে। স্মরণসভার আয়োজক ছিল আমতা কেন্দ্র কংগ্রেস। হাজির ছিলেন বিধায়ক অসিত মিত্র। তাঁর আমন্ত্রণে এসেছিলেন এই কেন্দ্রের (সাবেক কল্যাণপুর) সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মিত্র। ২০১১ সালে তাঁকে হারিয়েই বিধায়ক হন অসিতবাবু। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস-বামফ্রন্টের জোট হয়। অসিতবাবু জোটপ্রার্থী হিসাবেই জেতেন। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে অবশ্য দু’পক্ষ আলাদা লড়াই করে।
সম্প্রতি ফের বিভিন্ন আন্দোলন-কর্মসূচিতে দু’পক্ষকে কাছাকাছি আসতে দেখা যাচ্ছে। সে রাজ্য সরকারের আমপান-ক্ষতিপূরণের তালিকা তৈরিতে দুর্নীতির অভিযোগ হোক বা অন্য কিছু। সেই ছবিই ফের দেখা গেল সোমেনবাবুর স্মরণসভায়। এখানে রবীন্দ্রনাথবাবু ছাড়াও হাজির ছিলেন এলানকার প্রাক্তন জেলা পরিষদ সদস্য সিপিআইয়ের সরিফুল আনোয়ার। হাওড়া শহরেও গত ৭ অগস্ট সোমেনবাবুর স্মরণসভা হয়। হাজির ছিলেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক বিপ্লব মজুমদার, ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রাক্তন বিধায়ক জগন্নাথ ভট্টাচার্যের মতো নেতারা।
দু’টি স্মরণসভাকেই ‘অরাজনৈতিক’ এবং ‘সৌজন্যমূলক’ বলে বর্ণনা করলেও কংগ্রেস ও সিপিএম নেতারা স্বীকার করেছেন, এর আগে বিভিন্ন বিষয়ে যে ভাবে যৌথ আন্দোলন হয়েছে, সেই ধারাবাহিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়া থেকে দু’টি স্মরণসভাকে আলাদা করা যাবে না।
আগামী বিধানসভা নির্বাচনে জোটের অন্যতম প্রবক্তা ছিলেন সোমেনবাবু। তাই তাঁর স্মরণসভায় বামনেতাদের হাজির হওয়ার আলাদা তাৎপর্য রয়েছে বলে মনে করছেন জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাঁরা জানান, ভোটে বামফ্রন্টের সঙ্গে জোট হবে কিনা, সেটা ঠিক করবেন রাজ্য নেতারা। কিন্তু জেলায় তাঁরা অনেক বিষয়ে একসঙ্গেই আন্দোলন করছেন।
জেলা কংগ্রেস সভাপতি সুনীল আদক বলেন, ‘‘সোমেনদার স্মরণসভায় সব দলকে ডাকা হয়েছিল। কিন্তু বামফ্রন্টের নেতারা ছাড়া বাকিরা আসেননি। এই স্মরণসভাকে আমরা রাজনীতির সঙ্গে জড়াতে না-চাইলেও ব্যক্তি যে হেতু সোমেনদা, তাই বাম নেতাদের হাজির হওয়া আমাদের কাছে আলাদা গুরুত্বের। খোদ সোমেনদা লকডাউনের আগে উলুবেড়িয়াতে এমনই এক যৌথ আন্দোলনে পথে নেমেছিলেন। হাওড়া এবং উলুবেড়িয়ায় পুরভোট স্থগিত হয়ে গিয়েছে। আমরা জোট করে ভোটে লড়ব বলে প্রাথমিক ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’’ একই কথা বলেন অসিতবাবুও।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক বিপ্লববাবুও সৌজন্যকেই প্রাধান্য দেন। একইসঙ্গে তিনিও এর রাজনৈতিক গুরুত্বের কথা মনে করিয়ে দেন। বিপ্লববাবু বলেন, ‘‘সোমেনবাবু একজন দক্ষিণপন্থী দলের রাজ্য সভাপতি হিসেবে আমাদের সঙ্গে জোট করার জন্য যে ভাবে এগোচ্ছিলেন, তার তাৎপর্য অস্বীকার করা যাবে না। এই কৌশল হয়তো তাঁর দলেরও একাংশ মানেননি। আবার আমাদেরও কেউ কেউ অখুশি ছিলেন।’’ একই সঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দেন, ‘‘সোমেনবাবুর চেষ্টা কংগ্রেস এবং বামফ্রন্টের অনেকের সমর্থনও পেয়েছিল। আমরা রাজনৈতিক ভাবে পরস্পরের অনেক কাছাকাছি এসেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy