Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Flood

সেচ দফতরের ভাঁড়ার খালি, বন্যা নিয়ন্ত্রণের কাজে অর্থাভাব

হাওড়ার আমতা-২ এবং উদয়নারায়ণপুর— এই দুই ব্লক বন্যাপ্রবণ।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নুরুল আবসার
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:৪৭
Share: Save:

একাধিক জায়গায় নদীবাঁধে ধস নেমেছে সম্প্রতি। হাওড়া জেলায় আরও বহু জায়গায় বাঁধ বেহাল আগে থেকেই। কিন্তু সারানো হবে কী ভাবে? জেলা সেচ দফতরের হাতে টাকাই নেই। টাকার অভাবে ত্রাহি রব সেচকর্তাদের। বকেয়া না-মেটায় ঠিকা সংস্থাগুলিও কাজ করতে চাইছে না। ফলে, এই বর্ষার মরসুমে জেলায় বন্যা নিয়ন্ত্রণের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ আদৌ শেষ হবে কিনা, তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিয়েছে।

হাওড়ার আমতা-২ এবং উদয়নারায়ণপুর— এই দুই ব্লক বন্যাপ্রবণ। উদয়নারায়ণপুর থেকে আমতা পর্যন্ত দামোদরের বাঁধের বহু জায়গায় ভাঙন আছে। বিভিন্ন মহল থেকে বার বার বলা সত্ত্বেও এই অংশগুলিতে মেরামতির কাজে হাত দেওয়া হয়নি। যদি বন্যা হয় তা হলে কোনও মতে ঠেকা দেওয়ার জন্য বালির বস্তা মজুত করে রেখেছে সেচ দফতর।

জেলা সেচ দফতরের অধীন নিম্ন দামোদর নির্মাণভুক্তি-১ এবং ২— এই দু’টি বিভাগই বন্যা নিয়ন্ত্রণের যাবতীয় কাজ করে। গত এক বছর ধরে অর্থাভাবে ঠিকা সংস্থাগুলির প্রায় ৭০ কোটি টাকা যে মেটানো যায়নি, তা স্বীকার করেছেন দুই বিভাগের কর্তারা। তাঁরা জানিয়েছেন, অর্থাভাবের কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

রাজ্য সেচ দফতরের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘সমস্যা গোটা রাজ্যেরই। অর্থ দফতরকে জানানো হয়েছে। তবে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিলে যাতে কোনও অসুবিধা না-হয়, সে জন্য আপৎকালীন তহবিল রয়েছে।’’

জেলা সেচ দফতর সূত্রের খবর, টাকার অভাবে বন্যা নিয়ন্ত্রণের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলির অধিকাংশ শুরুই করা যায়নি। ‌কিছু কাজ শুরু হলেও শেষ পর্যন্ত তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বহু জায়গা বাঁধ মেরামতি করা হচ্ছে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে।

সম্প্রতি জেলায় একটি নদীবাঁধ সংস্কারের জন্য তিন কোটি টাকার টেন্ডার হয়। অন্য সময়ে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের জন্য ঠিকা সংস্থাগুলি ভিড় করে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে দু’বার টেন্ডার হলেও কোনও ঠিকা সংস্থা অংশগ্রহণ করেনি। তৃতীয়বারে সেচ দফতরের কর্তারা একটি ঠিকা সংস্থাকে বুঝিয়ে-সুজিয়ে টেন্ডারে অংশ নিতে রাজি করান। এই রকম ঘটনা ‘নজিরবিহীন’ বলে রাজ্য সেচ দফতরের এক কর্তা জানিয়েছেন।

একটি ঠিকা সংস্থার কর্ণধার জানান, কোটি কোটি টাকা বকেয়া থাকায় তাঁদের হাতে নতুন কাজ করার আর টাকা নেই। তা ছাড়া, নতুন কাজ যে তাঁরা করবেন‌, তার পাওনা কবে মিলবে তারও কিছু ঠিক নেই। ফলে, নতুন করে কোনও কাজ তাঁরা আর নিতে চাইছেন না। তাঁরা নিরুপায়।

জেলা সেচ দফতরও কার্যত নিরুপায়। কিছুদিন আগে আমতা-২ ব্লকের চিৎনান দক্ষিণপাড়ায় রূপনারায়ণের ভেড়ি বাঁধ ভেঙে কয়েক হাজার বিঘা ধানজমি প্লাবিত হয়। বাগনানের নসিবপুরে রূপনারায়ণের পাড়ে ধস নামে। শ্যামপুর-১ ব্লকের গাদিয়াড়ায় হুগলি নদীর বাঁধে এবং শ্যামপুর-২ ব্লকের অনন্তপুরেও রূপনারায়ণের বাঁধে ধস নামে। সব ক্ষেত্রেই স্থানীয় প্রশাসনের দাবি, আগে থেকে বলা হলেও সেচ দফতর ব্যবস্থা নেয়নি।

জেলা সেচ দফতরের কর্তারা মানছেন, সমস্যা টাকার। নসিবপুরের ধস মেরামতিতে সঙ্গে সঙ্গে কাজে নামা হলেও আংশিক শেষ করেই রণে ভঙ্গ দিতে হয়। পরে ওখানে বাঁধ মেরামতিতে পাকাপাকি ব্যবস্থা করা হবে। উলুবেড়িয়ায় হুগলি নদীর বাঁধ মেরামতিও জরুরি। সেই কাজও শুরু হয়নি। এখন শুধু জরুরি কিছু কাজ হচ্ছে। তা-ও দায়সারা ভাবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Flood
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy