Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
‘নির্মল’ হাওড়ায় নয়া প্রকল্প জেলা প্রশাসনের
Waste management

পঞ্চায়েতে বর্জ্য ফেলার জায়গা গড়তে উদ্যোগ

সম্প্রতি উলুবেড়িয়া রবীন্দ্রভবনে জেলার উন্নয়ন সংক্রান্ত বৈঠক হয়। জেলাশাসক-সহ জেলা প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিকরা হাজির ছিলেন। সেখানে বিডিওদের হাতে-কলমে প্রকল্পটি রূপায়ণের বিষয়ে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নুরুল আবসার
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৯ ০১:৩৫
Share: Save:

খাতায়-কলমে দু’বছর আগে ‘নির্মল’ হয়েছিল হাওড়া জেলা। জেলা প্রশাসনের পরবর্তী পদক্ষেপ হাওড়াকে ‘নির্মলোত্তর জেলা’ হিসেবে তৈরি করা। সেই কর্মসূচির অঙ্গ হিসাবে জেলার ১৫৭টি পঞ্চায়েতেই বর্জ্য ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা তৈরি এবং প্রতিস্থাপন ব্যবস্থা গড়ে উঠতে চলেছে। আগামী ২ অক্টোবরের মধ্যে এ বিষয়ে প্রাথমিক রূপরেখা চূড়ান্ত করতে ১৪টি ব্লক প্রশাসনকেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন
সূত্রের খবর।

সম্প্রতি উলুবেড়িয়া রবীন্দ্রভবনে জেলার উন্নয়ন সংক্রান্ত বৈঠক হয়। জেলাশাসক-সহ জেলা প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিকরা হাজির ছিলেন। সেখানে বিডিওদের হাতে-কলমে প্রকল্পটি রূপায়ণের বিষয়ে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। প্রশাসনের কর্তারা জানান, নতুন প্রকল্পের জন্য এক-একটি পঞ্চায়েতকে ৪০ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে। তবে, জমি সংগ্রহ করতে হবে পঞ্চায়েতগুলিকেই। সরকারি জমি পাওয়া গেলে ভাল, নয়তো পঞ্চায়েতগুলি তাদের নিজস্ব তহবিল এবং উন্নয়নমূলক কাজের টাকা বাঁচিয়ে জমি কিনতে পারে। জেলাশাসক মুক্তা আর্য বলেন, ‘‘এই প্রকল্প রূপায়ণে কোনও ঢিলেমি হবে না।’’

জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ‘মিশন নির্মল বাংলা’ প্রকল্পে জেলায় দারিদ্রসীমার নীচে থাকা ৮০ শতাংশ পরিবারের জন্য শৌচাগার তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। দারিদ্রসীমার নীচে রয়েছে, অথচ, সরকারি তালিকায় নাম নেই— এমন প্রায় ১৪ হাজার পরিবারকেও সরকারি সহায়তায় শৌচাগার করে দেওয়া হচ্ছে। এরই পরবর্তী পদক্ষেপ নির্দিষ্ট জায়গায় বর্জ্য ফেলা এবং তা প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা করা।

জেলার দুই পুরসভায় আগে থেকেই বর্জ্য ফেলার ব্যবস্থা আছে। কিন্তু পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত। পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতে দেখা যায় যত্রতত্র জঞ্জাল জমে রয়েছে। বিশেষ করে রাস্তার ধারগুলি নরককুণ্ড। বিয়ে বা অনুষ্ঠান-বাড়ির উচ্ছিষ্ট,
বাসি-পচা খাবার ফেলা হয় রাস্তার ধারে। ফলে, পরিবেশ দূষিত হয়। কিছু কিছু এলাকায় পরিবেশপ্রেমী সংগঠনগুলি যত্রতত্র বর্জ্য না-ফেলতে প্রচার চালায়। বীরশিবপুরে একটি ক্লাব প্রচারের সঙ্গে বাজারে এবং বাড়ি বাড়ি বর্জ্য ফেলার পাত্রও রেখে আসে। ক্লাবের সদস্যেরা পনেরো দিন অন্তর সেই বর্জ্যভর্তি পাত্র তুলে এনে গ্রামের প্রান্তে ফেলে দেন। সম্প্রতি উলুবেড়িয়া দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক পুলক রায় তাঁর বিধায়ক তহবিল থেকে সাড়ে ৮ লক্ষ টাকা দিয়ে বর্জ্য নিয়ে যাওয়ার গাড়ি বানিয়ে দিয়েছেন। সেই গাড়ি বাজার থেকে বর্জ্য তুলে এনে উলুবেড়িয়া পুরসভার বর্জ্য ফেলার জায়গায় ফেলছেও। কিন্তু এই প্রচেষ্টা সমস্যার সমাধান করতে পারছে না।

পরিবেশপ্রেমী সংগঠনগুলি বার বার বর্জ্য ফেলার ব্যবস্থা করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে। জাতীয় গ্রিন বেঞ্চও পঞ্চায়েত এলাকাকে দূষণমুক্ত করার জন্য ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকারকে। জেলা প্রশাসনের নতুন উদ্যোগে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। ‘বাগনান থানা নাগরিক সমিতি’র পক্ষে প্রসূন রায় বলেন, ‘‘যেখানে-সেখানে বর্জ্য ফেলার ফলে নাকে রুমাল চেপে হাঁটতে হয়। সেই পরিস্থিতির অবসান ঘটবে।’’ সমিতির আর এক সদস্য বিভাস সামন্ত বলেন, ‘‘অনেক দিনের দাবি পূরণ হল।’’ বীরশিবপুরের ক্লাবটির কর্তা তপন সেন বলেন, ‘‘বহুদিন ধরে বর্জ্য সংগ্রহ করলেও ফেলার জায়গা নিয়ে সমস্যায় পড়ি। আশা করি সেই সমস্যা মিটবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Waste management Panchayet area Uluberia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy