রাতে চণ্ডীতলা থেকে বিয়ের নিমন্ত্রণ খেয়ে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে ধরে উত্তরপাড়া ফিরছিলেন মঞ্জুশ্রী মুখোপাধ্যায়। কিন্তু ডানকুনি ব্রিজের কাছে এসে প্রায় এক ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকল গাড়ি। সোজা পথে যেতে না পেরে গাড়ি ঘুরিয়ে চণ্ডীতলার গোবরা হয়ে ঘুরপথে বাড়ি ফেরেন তিনি।
শুধু মঞ্জুশ্রীদেবী নন, দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে অনেকেই এই সমস্যায় পড়েছেন। দুপুর হোক কিংবা গভীর রাত— দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে যানজটের বিরাম নেই। যদিও প্রায় প্রতি দিনই নেতা, মন্ত্রী-সহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কর্তারা গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তা ব্যবহার করেন। পুলিশ এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে নজরদারি চালানো হয়। কিন্তু যানজট কমে না। মাঝে মধ্যেই ঘটে দুর্ঘটনা। হয় প্রাণহানি। মাস কয়েক আগে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতেই তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাড়ি দুর্ঘটনার পড়েছিল। এই এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন লোকশিল্পী কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্য। এছাড়া ছোটখাট দুর্ঘটনার লেগেই রয়েছে।
কেন এই অবস্থা?
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে ‘ওভারলোডেড’ ট্রাকের যাতায়াত আটকাতে ডানকুনি এবং পালসিট টোলপ্লাজার সামনে গাড়ির ওজন মাপার যন্ত্র বসানো হয়েছে। এছাড়া ‘ওভারলোডেড’ গাড়ি থেকে চড়া হারে জরিমানা আদায় শুরু হয়েছে।
যানজট ও দুর্ঘটনা কমাতে এই দু’টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও ফল হয়েছে উল্টো। বাড়তি জরিমানা এড়াতে বালি বোঝাই ট্রাকগুলি পালসিটের টোলপ্লাজা এড়িয়ে নিয়ম বর্হিভূতভাবে বর্ধমানের রসুলপুর পর্যন্ত গিয়ে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে ধরছে। তার পর কোনও গাড়ি ডানকুনির কালীপুর দিয়ে মুম্বই রোডে উঠছে। কেউ কেউ ডানকুনি চৌমাথা হয়ে কলকাতার রাস্তা ধরছে।
এর ফলে রাত বাড়লেই ডানকুনির মাইতিপাড়া থেকে টোলপ্লাজা এবং ডানকুনি ফ্লাইওভার ছাড়িয়ে গরলগাছা, চণ্ডীতলার অহল্যা বাই রোড পর্যন্ত যানজট তৈরি হচ্ছে। বিপত্তি বাড়ছে সঠিক নিয়ম মেনে চলা গাড়িগুলির।
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের এক কর্তা বলেন, “যানজটের বিষয়ে আমরা হুগলি এবং বর্ধমানের জেলাশাসকদের চিঠি দিয়েছি। ডানকুনিতে অ্যাপ্রোচ রোড তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেখানে বিভিন্ন কারখানার ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকে।’’ ওই কর্তার অভিযোগ, দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে নিয়মভাঙা গাড়ি এবং ট্রাকের বিরুদ্ধে পুলিশ সেভাবে সক্রিয় নয়।
হুগলি জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে রাতে পুলিশের গাড়ি এবং অফিসার থাকেন। তবে রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা অনেক বেশি। কিছু সমস্যা রয়েছেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy