বেহাল: ফেটেছে এই ট্যাঙ্কই। নিজস্ব চিত্র
গত বছর অক্টোবর মাসে জেলা পরিষদের পরিকল্পনায় পাতুলসারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সৌর বিদ্যুৎ পরিচালিত জল প্রকল্প চালু হয়। স্কুলের ছাত্রছাত্রী এবং এলাকাবাসীকে পানীয় জল সরবরাহ করার উদ্দেশ্যে এই পরিকল্পনাটি নেওয়া হলেও তিন মাসের মধ্যেই ট্যাঙ্ক ফেটে যায়। তারপর থেকে অবিরাম জলের অপচয় ঘটছে। কিন্তু ট্যাঙ্ক পরিবর্তনে প্রশাসন উদ্যোগী নয় বলে অভিযোগ।
পাতুলসারা প্রাথমিক বিদ্যালয়টি গোঘাট ১ ব্লকের কুমুড়শা পঞ্চায়েতের অন্তর্গত। গত বছর সৌরবিদ্যুৎ চালিত ক্ষুদ্র জল সরবরাহ প্রকল্প অনুযায়ী এই স্কুলে ৫ হাজার লিটারের একটি ট্যাঙ্ক বসানো হয়। স্কুলের পাশাপাশি দু’টি কলের মাধ্যমে এলাকাবাসীর জন্য পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু মাস তিনেকের মধ্যেই জলের ট্যাঙ্কটি ফেটে যায়। তারপর থেকে যথেচ্ছ জল অপচয় হচ্ছে বলে অভিযোগ।
স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় মানুষ বিষয়টি পঞ্চায়েতে বারবার জানালেও কোনও লাভ হয়নি। চলতি বছরের মে মাসে লোকসভা ভোটের সময় ভোটকর্মীদের সুবিধার জন্য স্কুলে ৫০০ লিটারের একটি ট্যাঙ্ক বসানো হয়। সেই ট্যাঙ্ক থেকেই আপাতত স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা জল পাচ্ছে। কিন্তু সমস্যায় পড়েছেন স্থানীয় মানুষেরা। তাঁদের অভিযোগ, “পঞ্চায়েতের উদাসীনতার জন্য জল অপচয় হচ্ছে, পাশাপাশি পরিশ্রুত পানীয় জল থেকে বঞ্চিত হচ্ছি আমরা। ৫ হাজার লিটারের ট্যাঙ্কটির সংস্কার দরকার। কিন্তু পঞ্চায়েত ব্যবস্থা না নিয়ে জেলা পরিষদের মুখাপেক্ষী হয়ে আছে।”
গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য চন্দনা পাল বলেন, “বিষয়টি পঞ্চায়েত প্রধান এবং ব্লক প্রশাসনে একাধিকবার জানানো হয়েছে। ভোটের সময় একটি ৫০০ লিটারের ট্যাঙ্ক দেওয়া হলেও স্থায়ী সমাধান হয়নি।” কুমুড়শা পঞ্চায়েত প্রধান উত্তম মুদি বলেন, “গ্রামবাসীর অভিযোগ পেয়েছি। প্রকল্পটি নিয়ে আমার বিশেষ কিছুই জানা নেই। বিষয়টা জেলা পরিষদকে জানানো হবে।’’
গোঘাট ১ ব্লক প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে, “গোটা বিষয়টি জেলা পরিষদে জানানো হয়েছে।” অন্যদিকে, জেলা পরিষদের সভাধিপতি মেহবুব রহমান বলেন, “আমাদের কিছু জানানো হয়নি। খোঁজ নিয়ে খুব তাড়াতাড়ি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, পাতুলসারা প্রাথমিক স্কুলের জল সরবরাহ প্রকল্পটি থেকে প্রথম দফায় স্কুল এবং স্থানীয় গ্রামবাসীর ব্যবহারের জন্য মোট ৩টি ট্যাপের ব্যবস্থা হয়। পরবর্তীকালে আরও ১০০টি জলের সংযোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা এখনও কার্যকর হয়নি। ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাহেব মণ্ডল বলেন, “যতক্ষণ সূর্যের আলো থাকে ততক্ষণই পাম্প থেকে জল ওঠে। স্কুল চলাকালীন আমরা দেখভাল করায় ওই সময়ের মধ্যে জল অপচয় রোখা যায়। বাকি সময় বা ছুটির দিনে কেউ দেখার থাকে না। ইদানীং জল নিয়ে প্রচার হওয়ায় এলাকার মানুষ অনেকটা সচেতন হয়েছেন।’’
তাঁর অভিযোগ, “২০১৮ সালের ২০ ডিসেম্বর থেকে প্রশাসনকে অভিযোগ জানাচ্ছি। স্থায়ী সমাধান হয়নি। খুব অসুবিধার মধ্যে আছি।” একই সমস্যার কথা বলেছেন পাতুলসারা অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী বিদ্যুৎলতা ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি পানীয় জলের জন্য পাতুলসারা বিদ্যালয়ের ট্যাঙ্কটির উপর নির্ভরশীল। ট্যাঙ্ক ফেটে যাওয়ায় এখানেও জলের সমস্যা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy