শব্দবাজির দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে প্রচারে নেই হাওড়া জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের কর্তারা। প্রতীকী ছবি।
আর এক দিন বাদে কালীপুজো। ডিজে এবং শব্দবাজির দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়েছে হাওড়া সিটি পুলিশ। কিন্তু গ্রামীণ হাওড়ায় পুলিশের সেই উদ্যোগ নেই। অথচ, এ ধরনের কর্মসূচির যে গুরুত্ব আছে, তা মানছেন জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের কর্তারা। তা হলে? ওই পুলিশকর্তাদের দাবি, সময়ের অভাবে হয়ে উঠছে না। শব্দ-দৈত্যকে রুখতে তাঁরা জোর দিচ্ছেন নজরদারিতে।
প্রতি বছরই বাগনান, আমতা, জগৎবল্লভপুর, বাগনান-সহ গ্রামীণ হাওড়ার নানা জায়গায় কালীপুজোয় শব্দবাজি ফাটে। বিসর্জনে ডিজে-র কানফাটানো শব্দে অতিষ্ঠ হন বহু মানুষ। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সরব পরিবেশপ্রেমীরা। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এ নিয়ে গ্রামীণ হাওড়ায় প্রচারে নেমেছে ঠিকই, কিন্তু সরকারি উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। এ নিয়ে তারা হতাশাও প্রকাশ করেছে। তপন কর নামে এক পরিবেশকর্মী মনে করেন, শব্দবাজি বা ডিজে-র বিরুদ্ধে আইননানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা পুলিশের হাতে আছে। পুলিশ নিজে থেকে প্রচারমূলক কর্মসূচি নিলে তার একটা আলাদা তাৎপর্য থাকে। আইন ভাঙা হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কী হতে পারে, তা নিয়ে পুলিশ প্রকাশ্যে বার্তা দিলে কিছুটা হলেও কাজ হতে বাধ্য। কিন্তু তা হচ্ছে না।
শব্দ-তাণ্ডব রুখতে গ্রামীণ হাওড়ার পুলিশ যে প্রচারে নামবে না তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন জেলা পুলিশের কর্তারা। তাঁদেরই এক জন বলেন, ‘‘প্রচারে নামলে ভাল হতো। কিন্তু সামনে ছটপুজো। সে জন্য প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে। সময়ের অভাবেই শব্দবাজি বা ডিজে নিয়ে প্রচারাভিযান সম্ভব হচ্ছে না।
তিন মাস আগেও সাঁকরাইল এবং ডোমজুড় থানা ছিল জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের আওতায়। বর্তমানে ওই দুই থানা সিটি পুলিশে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এ বার সেখানেও শব্দবাজি এবং ডিজে-র বিরুদ্ধে প্রচার কর্মসূচি চালাচ্ছে পুলিশ। গত রবিবার সাঁকরাইলে প্রচার হয়। সোমবার হয় ডোমজুড়ে। সেখানে পুলিশ কমিশনার গৌরব শর্মা নিজে হাজির ছিলেন। নিষিদ্ধ শব্দবাজি ব্যবহার না-করার জন্য তিনি আবেদন করেন। বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিও নেওয়া হয়। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে পুলিশ কমিশনারও গাছ লাগান। এখনও পর্যন্ত গ্রামীণ হাওড়ায় সচেতনতামূলক প্রচার যা হয়েছে, তা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে। গত রবিবার তারা উলুবেড়িয়া আদালত থেকে থানা পর্যন্ত একটি শোভাযাত্রা করে। আমতায় তারা বুধবার প্রচার করে।
প্রচারে না-নামলেও শব্দবাজি এবং ডিজের প্রকোপ রুখতে নজরদারি বহুগুণ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের কর্তারা। জেলা পুলিশ সুপার সৌম্য রায় বলেন, ‘‘আমরা সচেতনতামূলক প্রচার হয়তো করতে পারিনি। সেই ঘাটতি পূরণ করে দেওয়া হবে নজরদারি অনেকটা বাড়িয়ে।’’
জেলা পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, পুজো কমিটিগুলিকে আগের থেকেও বেশি সতর্ক করা হয়েছে। বিভিন্ন থানা সমন্বয় কমিটির বৈঠকগুলিতে পুজো কমিটির কর্তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ডিজে বাজানো নিয়ে অভিযোগ উঠলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ধরা হবে যে সংস্থা ডিজে ভাড়া দিয়েছে তাদেরও। খালনায় লক্ষ্মীপুজোর বিসর্জনে ডিজে বাজানোর অভিযোগ আসায় প্রচুর ডিজে বক্স বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। কালীপুজোর সময়েও এই রকম কড়া মনোভাব দেখানো হবে। নিষিদ্ধ শব্দবাজির বিরুদ্ধেও পুলিশের টহল চলবে। অভিযোগ এলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy