থমকে: হাওড়া ব্রীজে যানযট।—ফাইল চিত্র।
হাওড়ায় যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্ন রাখতে বেশ কয়েকটি রাস্তা চওড়া করা, রাস্তা সম্প্রসারণ এবং রাস্তার পাশ থেকে দখলদার হটানোর মতো একগুচ্ছ প্রস্তাব দিয়েছে হাওড়া সিটি পুলিশ।
কলকাতায় টালা সেতু বন্ধ হওয়ার পরে হাওড়াতেও চাপ বেড়েছে যানবাহনের। হাওড়া শহরে প্রয়োজনের তুলনায় রাস্তা এমনিতেই কম। এর মধ্যে পূর্ব রেল জানিয়েছে, হাওড়ার চাঁদমারি সেতু এবং বামনগাছি সেতু ভেঙে নতুন সেতু তৈরির কাজ হবে। দক্ষিণ ও মধ্য হাওড়া থেকে উত্তর হাওড়া এবং হাওড়া সেতুর দিকে যাওয়ার জন্য বঙ্কিম সেতুর পরেই চাঁদমারি সেতু হল দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ সেতু। বেনারস রোডের সঙ্গে সালকিয়া ও বালির সংযোগ করে বামনগাছি সেতু। চাঁদমারি সেতুর পাশে তৈরি হবে চার লেনের একটি কেবল স্টেজড সেতু এবং বামনগাছি সেতুর পাশে হবে চার লেনের একটি রেল ওভারব্রিজ। এই কাজের জন্য বন্ধ থাকবে বেশ কিছু রাস্তা। এর সঙ্গে পরিকল্পনাহীন হাওড়া ময়দান চত্বরের দুরবস্থা যুক্ত হয়ে শহর কার্যত অচল হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে হাওড়া সিটি পুলিশ। পরিস্থিতি সামাল দিতে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে।
সম্প্রতি রেলের পক্ষ থেকে হাওড়া সিটি পুলিশকে জানানো হয়েছে, আগামী বছরের মার্চ মাস থেকে চার মাসের জন্য বামনগাছি ব্রিজ বন্ধ করে দেওয়া হবে। তাই সালকিয়া ও বালিমুখী সমস্ত যানবাহনকে বিকল্প রাস্তায় পাঠাতে হবে। এর পরেই পুলিশ কমিশনারের দফতরে উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠক হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন পরিবহণ দফতরের বিশেষ সচিব-সহ জেলাশাসক, পুলিশ কমিশনার, পুর কমিশনার, পূর্ত দফতরের অফিসার, রেল ও বন্দর কতৃর্পক্ষ।
ওই বৈঠকে হাওড়া সিটি পুলিশ যে প্রস্তাবগুলি রেখেছে। প্রথমত, হাওড়া-আমতা রোড চওড়া করতে হবে। যাতে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের চাপ কমাতে সলপ দিয়ে গাড়ি এসে ড্রেনেজ ক্যানাল রোড হয়ে বিদ্যাসাগর সেতু ধরতে পারে। দ্বিতীয়ত, চওড়া করতে হবে ইস্ট-ওয়েস্ট বাইপাস রোড। ওই রাস্তার পাশে থাকা পুরসভার নিকাশি ব্যবস্থাকে উন্নত করে আলো, রোড মার্কিং ও ফেন্সিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। তৃতীয়ত, বামনগাছি সেতু বন্ধ হলে যাতে বালিগামী গাড়ি যাতে লিলুয়া থানার পাশ দিয়ে এ রোড হয়ে বেরোতে পারে এবং অন্য দিকে বেলগাছিয়া মোড় থেকে চ্যাটার্জিপাড়া মোড় হয়ে ইস্ট-ওয়েস্ট বাইপাস ধরতে পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে। তার জন্য এ রোড চওড়া করতে হবে। চতুর্থত, দিঘার সব বাস হাওড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে সরিয়ে রেল মিউজ়িয়ামের কাছে নিয়ে যেতে হবে।
পঞ্চমত, জি টি রোড থেকে দখলদার হটিয়ে সেখানে দ্বিমুখী যান চলাচল ফের চালু করতে হবে। পুলিশের দাবি, জি টি রোড দ্বিমুখী হলেই রাস্তার পাশে হকার বসা বন্ধ হবে। ষষ্ঠত, কোল ডিপো পর্যন্ত গ্র্যান্ড ফোরশোর রোড সম্প্রসারণের প্রস্তাব দিয়েছে হাওড়া সিটি পুলিশ। তা হলে হাওড়া স্টেশন থেকে দক্ষিণ হাওড়া যাওয়ার একটি বিকল্প রাস্তা তৈরি হয়।
হাওড়ার পুলিশের আরও বক্তব্য, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো চালু হয়ে গেলে প্রচুর যানবাহন হাওড়া ময়দান এলাকায় ঢুকবে। যাত্রীসংখ্যাও বাড়বে। তা সামাল দেওয়ার অবস্থা হাওড়া ময়দান চত্বরের নেই। তাই আগেই হাওড়া ময়দান থেকে চলা ২৫০টি বাসের জন্য হাওড়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের পাশে বা ময়দানের কাছে মাল্টি লেভেল পার্কিং তৈরি করা প্রয়োজন।
হাওড়ার পুলিশ কমিশনার গৌরব শর্মা বলেন, ‘‘রেলের দু’টি নতুন ব্রিজের জন্য রাস্তা বন্ধ হলে যে বিকল্প রাস্তা ঠিক করা হয়েছে, সেগুলির সম্প্রসারণ ও মেরামতির কাজের জন্য পূর্ত দফতরকে বলা হয়েছে।’’ পুলিশ কমিশনার জানান, পূর্ত দফতর ইতিমধ্যে কয়েক জায়গায় কাজ শুরু করেছে। তবে আরও কয়েকটি নতুন রাস্তা তৈরি করার প্রয়োজন রয়েছে। তার সঙ্গে পুরনো কিছু রাস্তায় ফেন্সিং ও রোড মার্কিং করাও প্রয়োজন। না হলে হাওড়া শহরে সুষ্ঠু ভাবে গাড়ি চলাচল করতে পারবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy