Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Strike

কর্মীদের মজুরি কে দেবে? বন্‌ধে প্রতিবাদ

সকালে চা-বিস্কুট, ডিম টোস্ট, ঘুগনি আর দুপুরে ভাল-ডাল মাছের ঝোল বিক্রি করে যাঁর দিন চলে, সেই ছাপোষা তাপসের এমন রুদ্রমূর্তি! দেখে বৃহস্পতিবার সকালে শুধু ওই এলাকার লোকজনই নন, চমকে গিয়েছিলেন বন্‌ধ সমর্থকেরাও।

উত্তরপাড়ার প্রতিবাদী হোটেল মালিক। — নিজস্ব চিত্র।

উত্তরপাড়ার প্রতিবাদী হোটেল মালিক। — নিজস্ব চিত্র।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
উত্তরপাড়া শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২০ ০০:৫৪
Share: Save:

বন্‌ধ সমর্থকেরা হাজির। দোকানে দোকানে শাটার নামানো শুরু। উত্তরপাড়ার জে কে স্ট্রিটের হোটেল মালিক তাপস শর্মা সে পথে হাঁটলেন না। রুখে তো দাঁড়ালেনই, বন্‌ধ সমর্থকদের সটান প্রশ্ন ছুড়লেন, ‘‘হোটেল বন্ধ করলে কর্মীদের মজুরি কে দেবে? আপনারা?’’

সকালে চা-বিস্কুট, ডিম টোস্ট, ঘুগনি আর দুপুরে ভাল-ডাল মাছের ঝোল বিক্রি করে যাঁর দিন চলে, সেই ছাপোষা তাপসের এমন রুদ্রমূর্তি! দেখে বৃহস্পতিবার সকালে শুধু ওই এলাকার লোকজনই নন, চমকে গিয়েছিলেন বন্‌ধ সমর্থকেরাও। সংখ্যায় তাঁরা ছিলেন জনা বারো। শেষমেশ সরে গেলেন। যাওয়ার আগে তাঁরা হোটেলের কাচের বয়াম ভেঙে দেওযার হুমকি দেন বলে অভিযোগ। তবু ডরাননি তাপস।

স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্ব অবশ্য পুরো ঘটনাটিকে ব্যতিক্রমী বলে দাবি করেছেন। দলের উত্তরপাড়া এরিয়া কমিটির নেতা সলিল দত্ত বলেন, ‘‘মানুষ বন্‌ধে স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া দিয়েছেন। কোথাও কোনও ব্যতিক্রমী ঘটনা হতেই পারে। আমাদের ছেলেরা কোথাও কোথাও ব্যবসায়ীদের আবেদন করেছে মাত্র।’’

কেন্দ্রীয় কৃষি আইন ও শ্রম আইনের প্রতিবাদে এ দিন সকাল থেকেই পথে নামে বাম ও তাদের সহযোগী দলগুলো। ট্রেন অবরোধের পাশাপাশি উত্তরপাড়ায় কলেজের কাছে জিটি রোড অবরোধ করা হয়। কোনও কোনও ক্ষেত্রে ব্যবসায়ী ও দোকানদারদের বন্ধী সমর্থকেরা ব্যবসা বন্ধ রাখতে বলেন। অনেকেই তা মেনে নেন। কিন্তু ছোট হোটেল মালিক তাপসবাবু বেঁকে বসেন।

কেন?

তাপসবাবুর কথায়, ‘‘আমি না দিলে এখানকার কিছু নির্মাণকর্মী সকালের চা-টুকুও পাবেন না। হোটেল বন্ধ করব কেন? সারাদিনে ১০০ টাকা রোজগার করতে আমাদের মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয়। তিন-চার জন কর্মীকে রোজ ২৫০ টাকা মজুরি দিতে হয়। সেই টাকা ওঁরা (বন্‌ধ সমর্থকেরা) আমাকে দিয়ে যান? আমি কোনও দলেরই বন্‌ধ সমর্থন করি না।’’

তাপসবাবু রুখে দাঁড়ানোয় রীতিমতো সাড়া পড়ে যায় ওই এলাকায়। অনেকেই তাঁর কথার সমর্থন করেন। তাপসবাবুকে কুর্নিশ জানিয়েছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব। তিনি বলেন, ‘‘বন্‌ধ-অবরোধে মানুষের রেগে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। পশ্চিমবঙ্গে ওইসব এখন অতীত। মানুষ একেবারেই সমর্থন করেন না কর্মনাশা বন্‌ধ সংস্কৃতি। ওই ছোট হোটেল ব্যবসায়ী যে মুখের উপর বলেছেন, তাঁকে আমার কুর্নিশ।’’

অন্য বিষয়গুলি:

strike Hotel owner
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy