আরামবাগের আনাজ বাজার। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
লকডাউন অনেকেরই রোজগারে থাবা বসিয়েছে। তার উপরে ফলমূলের দাম আগুন। লক্ষ্মীপুজোর বাজারে গিয়ে তাই হাত পুড়ছে মধ্যবিত্তের। অনেকেই জানিয়েছেন, পরিস্থিতির চাপে কোনও রকমে কার্যত নমো নমো করে ধনদেবীর আরাধনা সারতে হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার অর্থাৎ পুজোর আগের দিন হুগলির বিভিন্ন বাজারে আপেলের দাম ছিল ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি। দামে শাঁকালু ও শশাও সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে। ফলের বাজারে হালে পানি পায় না পানিফল। এ দিন সেই পানিফলের দাম উঠেছিল ৮০-৯০ টাকা প্রতি কেজি। পান্ডুয়ার হাটতলা, স্টেশন বাজারে গত বছর যে নারকেল ৪০ টাকায় বিকিয়েছিল, এ বার তার দাম ছিল ৬০-৬৫ টাকা। একটি আখের দাম বিক্রেতা হেঁকেছেন ৩০-৪০ টাকা। কাঁঠালি কলা ৬০ টাকা ডজন। শ্রীরামপুর, উত্তরপাড়া, চুঁচুড়া, চন্দননগর, মগরা, চণ্ডীতলা, সিঙ্গুর— সর্বত্রই বাজারে গিয়ে ফলের দাম শুনে চোখ কপালে উঠেছে গৃহস্থের।
টুম্পা গুঁই নামে পান্ডুয়ার বেনেপাড়ার এক বধূর কথায়, ‘‘যে ফলেই হাত দিচ্ছি, আগুন দাম। অল্প করে ফল কিনেই পুজো সারব।’’ একই বক্তব্য ভায়রা গ্রামের অর্পিতা ঘোষের। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের ভূমিকা কী? সাধারণ মানুষের কথা একটু ভাবা উচিত।’’ গৃহস্থেরা জানাচ্ছেন, লক্ষ্মী প্রতিমা, সরার দামও বেড়েছে গত বছরের তুলনায়। শ্রীরামপুরের মাহেশ বাজারের এক বিক্রেতার কথায়, ‘‘পুজোর সময় দাম একটু বেশিই থাকে। সবাই দু’টো পয়সা বেশি লাভ করতে চায়। তবে, এ বারের দাম যেন অনেকটাই বেশি। আমাদেরও বেশি দামে কিনতে হয়েছে। সাধারণ মানুষের সমস্যা হচ্ছে, এটা ঠিক।’’
দাম বেশি থাকলেও ফল ব্যবসায়ীদের মুখে অবশ্য হাসি নেই। তাঁদের বক্তব্য, জোগান যথেষ্ট থাকলেও সেই তুলনায় বিক্রি নেই। বেশির ভাগ মানুষ অন্য বছরের তুলনায় কম পরিমাণ ফল কিনছেন। শেওড়াফুলি বাজারের ফল বিক্রেতা স্বাধীন সাহা বলেন, ‘‘বাজারে ভিড় আছে। কিন্তু সেই তুলনায় বেচাকেনা নেই। করোনার জন্য রোজগার কমেছে। তাতেই এই পরিস্থিতি।’’ মশাটের ফল বিক্রেতা শ্রীকান্ত ঘোষেরও একই বক্তব্য। কামারপুকুর ডাকবাংলো সংলগ্ন বাজারে মাটির ঘট ও প্রদীপ বিক্রেতা নারায়ণ পালও বিক্রি দেখে খুশি হতে পারছেন না। অনেকে আবার করোনা-আবহে ধুমধাম করে পুজো করতে নারাজ। তাই বাড়িতে পাড়া-পড়শিদের ভোগ খাওয়ানোর পাট এ বার বন্ধ রেখেছেন তাঁরা। বৈদ্যবাটীর বাসিন্দা চিন্ময়ী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শ্বশুরবাড়িতে রাতে শ’খানেক লোকের ভোগের আয়োজন হয়। এ বার করোনার জন্য তা হচ্ছে না। ছোট করে পুজো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy