সেলুনে কাজে ব্যস্ত পিন্টু। ছবি: দীপঙ্কর দে
দারিদ্র সততাকে অনেক সময়ই টলিয়ে দেয়। কিন্তু সকলের ক্ষেত্রে তা সত্যি হয় না। উত্তরপাড়ার পিন্টু মান্নার ক্ষেত্রেও হয়নি। পথে কুড়িয়ে পাওয়া ৫০০ টাকার নোটের বান্ডিলে মোট ২১ হাজার টাকা পেয়েও তিনি থানায় জমা দিয়ে দিয়েছেন। উত্তরপাড়ার ক্রাউন গেটের কাছে জিটি রোড লাগোয়া জে কে স্ট্রিটে চার বাই আট ফুটের একটি সেলুন চালান বছর বিয়াল্লিশের ওই যুবক। কাছেই বাড়ি। মা, স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে তাঁর সংসার। করোনা আবহে সেলুন প্রায় পাঁচ মাস বন্ধ ছিল। তার জেরে ঘরে দারিদ্রের ক্ষত ক্রমেই চওড়া হয়। আনলক পর্বে সেলুন খুললেও আয় তলানিতে। প্রতিবার উৎসবের মুখে বাঙালির সেই চেনা ‘পুজোর ছাঁট’ দেওয়ার ধুমও এ বার একেবারেই ছিল না পিন্টুর সেলুনে।
ষষ্ঠীর দিন সকালেও চুপচাপ দোকানের বাইরে বসেছিলেন পিন্টু। খদ্দের নেই। হঠাৎই তাঁর চোখে পড়ে, দোকান থেকে কয়েক পা দূরেই রাস্তায় একটি ৫০০ টাকার বান্ডিল পড়ে। পিন্টু এগিয়ে যান। পিছন থেকে হঠাৎই একটা মাঝবয়সি এসে পা দিয়ে চাপা দিয়ে দেন সেই বান্ডিল। তা নিজের বলেও পিন্টুর কাছে দাবি করেন। পিন্টু টাকার পরিমাণ জানতে চাওয়ায় মানুষটি উত্তর দিতে পারেননি। স্বীকার করেন, তাঁর টাকা নয়। আর কথা বাড়াননি। পিন্টু বান্ডিলটা নেন। তাঁর কথায়, ‘‘আশপাশের দোকানদারদের সাক্ষী রেখে গুনে দেখি বান্ডিলে মোট ২১ হাজার টাকা আছে। সবাই আমাকে অপেক্ষা করতে বললেন কিছুদিন। কেউ যদি টাকাটা চাইতে আসে। অনেকের পরামর্শে ফেসবুকে সেই টাকা পাওয়ার কথাও লিখি। কিন্তু সেই টাকার কোনও দাবিদার পেলাম না।’’পরের টাকা নিয়ে কী করবেন?পিন্টু পড়ে যান চিন্তায়। ঘুম উড়ে যায় তাঁর। সকলের সঙ্গে আলোচনা করে তিনি ওই টাকা থানায় জমা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সেইমতো স্ত্রী রূপালিকে সঙ্গে নিয়ে গত শুক্রবার থানায় যান। পুরো ঘটনাটা জানান আইসি সুপ্রকাশ পট্টনায়েককে। বিধি মেনে টাকার বান্ডিল জমা করে দেন থানায়।দরিদ্র যুবকের এই সততাকে কুর্নিশ জানিয়েছে পুলিশ। পিন্টু বলছেন, ‘‘পরের টাকা নিয়ে আমার কী হবে? তাই দিয়ে দিলাম। ব্যবসা ভাল চললেই আমি খুশি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy