শৈলেশ রাই। —ফাইল চিত্র
হাওড়ায় নিরাপত্তারক্ষীকে খুনের মামলা দায়ের হওয়ার চার বছর পরে রায় ঘোষণা করল আদালত। চাঞ্চল্যকর এই খুনের ঘটনায় ধৃত, হাওড়া পুরসভার প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর শৈলেশ রাইকে সোমবার বেকসুর মুক্তি দিয়েছে হাওড়া আদালত। গত তিন বছর তিনি জেল হেফাজতেই ছিলেন। এক বছর আগে এই মামলার রায়দানের কথা থাকলেও বার বার তার তারিখ পিছিয়ে যাওয়ায় আদালত চত্বরেই সমালোচনা শুরু হয়েছিল। শেষে এ দিন হাওড়া আদালতের প্রথম জেলা দায়রা বিচারক সর্বাণী মল্লিক চট্টোপাধ্যায় অভিযুক্ত ছ’জনকেই বেকসুর মুক্তি দেন।
২০১৬ সালের ১৭ জুন হাওড়া থানার রাউন্ড ট্যাঙ্ক রোডে একটি আবাসনের সামনে মোটরবাইকে এসে বিজয় মল্লিক নামে এক নিরাপত্তারক্ষীকে গুলি করে পালায় এক দুষ্কৃতী। সেই ঘটনার পরেই এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর শৈলেশ দুষ্কৃতীকে অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানান। যৌথ ভাবে ওই ঘটনার তদন্তে নামে হাওড়া থানা ও সিটি পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। শহরের বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে নেতাজি সুভাষ রোডের বিক্রম মণ্ডল এবং গঙ্গাধর মুখার্জি রোডের বাসিন্দা দিলীপ সাউ, সোমনাথ দাস ও প্রহ্লাদ সিংহ নামে চার জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের দাবি ছিল, গঙ্গাধর মুখার্জি রোডে একটি জমির প্রোমোটিংকে কেন্দ্র করেই খুন হন ওই নিরাপত্তারক্ষী।
এর পরেই খুনের মূল অভিযুক্ত হিসেবে শৈলেশকে গ্রেফতারের দাবিতে সরব হন বিজেপি ও কংগ্রেসের কয়েক জন নেতা। এ নিয়ে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভও দেখান তাঁরা। এর মধ্যে এই খুনের ঘটনায় ‘সুপারি কিলার’ বলে অভিযুক্ত, আইটিবিপি-র কর্মী সঞ্জয় যাদবকে শ্রীনগর থেকে গ্রেফতার করে আনে হাওড়া সিটি পুলিশ। তার পরেই তদন্তের গতি অন্য দিকে বাঁক নেয়। তদন্তকারীরা দাবি করেন, সঞ্জয়কে খুনের সুপারি দিয়েছিলেন শৈলেশ। আরও দাবি করেন, খুনের আগের দিন সঞ্জয়কে মোটরবাইকে বসিয়ে শৈলেশ যে তাঁকে হাওড়ার কয়েকটি জায়গা ঘুরিয়ে দেখিয়েছিলেন, তা রাস্তার পাশের বিভিন্ন সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ধরা পড়েছে। এর পরেই ২০১৭ সালের ১৩ জুন গ্রেফতার করা হয় শৈলেশকে।
আদালত সূত্রের খবর, বছর দুয়েক আগেই এই মামলার শুনানি এবং সাক্ষ্যদান পর্ব শেষ হয়ে গিয়েছিল। তত দিনে অভিযুক্তদের মধ্যে শৈলেশ এবং সঞ্জয় ছাড়া বাকি চার জনের জামিনও হয়ে গিয়েছিল। পরবর্তী কালে সরকারি কৌঁসুলির পক্ষ থেকে কয়েক জন সাক্ষীকে ফের প্রশ্ন করার আবেদন করায় বার বার এই মামলার রায়দান পিছিয়ে যেতে থাকে।
এ দিনের রায়দানের পরে শৈলেশের আইনজীবী স্বপনকুমার কোলে বলেন, ‘‘আমার মক্কেলকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে এত দিন জেল খাটানো হয়েছে। ৩৯ জন সাক্ষীকে প্রশ্ন করা হয়েছে। কিন্তু কিছু প্রমাণ হয়নি।’’ হাওড়া আদালতের মুখ্য সরকারি আইনজীবী সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই মামলা প্রথম থেকেই জোরালো ছিল না। পুলিশের দেওয়া চার্জশিটে শৈলেশ রাইয়ের নামই ছিল না। শেষে হাইকোর্টে মামলা করে চার্জশিটে নাম তোলা হয়। এর পরে দু’জন সাজানো সাক্ষী এনে প্রমাণের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু এ ভাবে তো কাউকে খুনি প্রমাণ করা যায় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy