ফাইল চিত্র।
দীর্ঘদিন কাজ করেও বেতন পাচ্ছিলেন না উত্তরপাড়া মাখলার টি এন মুখার্জী রোডের বাসিন্দা সুশান্ত ঘোষ। গরিব মানুষ। চাকরি ছাড়েন কী ভাবে? তার উপর তাঁর বেতন সরাসরি সরকারি হাউসিং বোর্ড থেকে আসে। ডানকুনি হাউসিংয়ের ওয়েস্টার্ন কমপ্লেক্সে একটি ঠিকাদারি সংস্থায় নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করেন তিনি। রাজ্য সরকারের ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি হকের বেতন পেতে অনেকটাই সুরাহার পথ করে দিয়েছে, জানালেন সুশান্তবাবুই।
সুশান্তবাবু বলেন, ‘‘আমরা ২০১৮ সালের অক্টোবর মাস থেকে বেতন পাচ্ছিলাম না। বারবার আমাদের এজেন্সির মালিককে জানিয়েও সুরাহা মিলছিল না। এরপর ‘দিদিকে বলো’ তে ফোন করতেই ওঁরা আমার থেকে সব জেনে নেন। দিন দুয়েক বাদে আমাকে ওঁরা ফোন করতে বলেছিলেন। আমি ফের ওঁদের ফোন করে জানতে পারি, হাউসিং বোর্ড আমাদের বেতন ঠিক সময়েই দিয়েছে। কিন্তু সংস্থার মালিক তা দিচ্ছিলেন
না আমাদের।’’
শুধু সুশান্তবাবুই নন, অসুস্থ শ্বশুরকে নিয়ে দাদপুরের গোঁসাই মালপাড়ার বাসিন্দা ইবাদুর রহমান সম্প্রতি বেজায় ফাঁপরে পড়েছিলেন। অভিযোগ, চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালের চিকিৎসকেরা দেখছিলেন না তাঁকে। ইবাদুরের কথায়, ‘দিদিকে বলো’ নম্বরে ফোন করে হাসপাতালের চিকিৎসা পেতে ‘ম্যাজিকের মতো’ কাজ হয়েছে।
ইবাদুর বলেন, ‘‘সম্প্রতি আমার শ্বশুর আইনাল হক বাথরুমে পড়ে গিয়ে কোমরে এবং পায়ে মারাত্মক চোট পান। আমরা ওঁকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ভর্তি করাই। কিন্তু কোথায় চিকিৎসক? এরপর সোজা ‘দিদি বলো’ নম্বারে ফোন। ব্যস, কেল্লা ফতে। হাসপাতাল সুপারের নির্দেশে তিনজন চিকিৎসক সব ব্যবস্থা করে দেন। আমি আমার সব বন্ধুদেরও বলেছি কোনও সমস্যা হলেই ওই নম্বরে ফোন করতে।’’
তবে সকলের অভিজ্ঞতা কিন্তু সমান নয়। যেমন অল বেঙ্গল চিটফান্ড সাফারার্স ওয়েলফেরার অ্যাসোশিয়েসনের সদস্যদের অভিজ্ঞতা। সংগঠনের অন্যতম সদস্যা অমিতা বাগ বলেন, ‘‘আমরা ইতিমধ্যে চিটফান্ডের ভুক্তভোগীদের সংগঠিত করে অন্তত ২৫ হাজারের উপর এসএমএস পাঠিয়েছি। কিন্তু এখনও সাড়া পাইনি।’’
ধনেখালির বাসিন্দা মহাদেব কোলে একটি বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থায় বহু টাকা রেখেছিলেন। তাঁর মতোই তারকেশ্বরের বাসিন্দা অমর সামন্তও ওই সংস্থায় টাকা রেখেছিলেন। টাকা ফেরত পাননি। সুরাহার আশায় ‘দিদিকে বলো’ নম্বরে এসএমএস করেছেন তাঁরা। কিন্তু তাঁদের অপেক্ষা এখন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। ফল হয়নি কিছুই।
ফোনে উত্তর না পাওয়ার বিষয়টি মানতে নারাজ উত্তরপাড়া পুর পরিষদের সদস্য ইন্দ্রজিৎ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির মূল ভাবনাই দলের সাধারণ মানুষের সমস্যা সমাধানের। মানুষ ফল পেতে শুরুও করেছেন। তার সবটা হয়তো সংবাদমাধ্যমে আসছে না।’’
ধনেখালির বিধায়ক অসীমা পাত্র বলেন, ‘‘এটা তো ঠিক, সাধারণ মধ্যবিত্ত মানুষ নানা সমস্যা নিয়ে সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যান। অনেক সময় তাদের অযথা হয়রানিও হতে হয়। ধনেখালির যে ছেলেটি নির্দিষ্ট অ্যাপে ফোন করে বাবার চিকিৎসা পেয়েছেন সেটা তো ভাল। আমরা এই পথেই মানুষের সমস্যার সমাধান করতে চাইছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy