হাসপাতালে বৃদ্ধা। নিজস্ব চিত্র
নিজের জমি বিক্রি করতে চাইছেন না এক বৃদ্ধা। কিন্তু নাছোড়বান্দা দুই দালাল। বৃদ্ধাকে এ জন্য হুমকিও শুনতে হচ্ছিল বলে অভিযোগ। বৃদ্ধা প্রথমে আদালতে, পরে পুলিশের দ্বারস্থ হওয়ায় রাস্তায় ফেলে তাঁকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল দুই দালালের দলবলের বিরুদ্ধে।
শনিবার রাতে বলাগড়ের ফকিরডাঙার বাসিন্দা, সুফিয়া বিবি নামে বছর সত্তরের ওই বৃদ্ধাকে বাড়ির কাছেই মার খেতে দেখে বাঁচাতে যান তাঁর ছেলে শেখ আলাউদ্দিন এবং পরিবারের অন্যেরা। তাঁদেরও রেয়াত করেনি হামলাকারীরা। চেঁচামেচিতে লোকজনকে বেরিয়ে আসতে দেখে হামলাকারীরা পালায়। বৃদ্ধাকে ব্যান্ডেল ইএসআই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
হুগলি জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের এক কর্তা জানান, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই বৃদ্ধার জমি টিন দিয়ে ঘিরে দখলের চেষ্টা হচ্ছিল। তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রবিবার হাসপাতালে বৃদ্ধা বলেন, ‘‘জমিটা অনেকদিন ধরেই দখলের চেষ্টা হচ্ছিল। আমি মামলা করায় ওরা পারছিল না। এ বার ওরা আমাকে প্রাণে মেরে গোটা জমি দখলের মতলবে ছিল।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ফকিরডাঙার চাঁদরা কলোনির বাসিন্দা ওই বৃদ্ধা নিজের বাড়ি সংলগ্ন চার শতক জমির মধ্যে বছর কয়েক আগে এক প্রতিবেশীকে এক শতক বিক্রি করেন। তার কিছুদিন পর থেকেই বাকি তিন শতক জমিও বিক্রি করার জন্য বৃদ্ধার উপরে এলাকার দুই দালাল সামশের আলি ও আনসার আলি চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন বলে অভিযোগ। বৃদ্ধা রাজি না-হওয়ায় তাঁকে এবং পরিবারের অন্যদের ওই দালালেরা প্রাণনাশের হুমকি দেন বলে অভিযোগ। কিছুদিন আগে নিজের জমি টিন দিয়ে ঘেরা হচ্ছে দেখে চুঁচুড়া আদালতে ওই দু’জনের নামে মামলা করেন বৃদ্ধা। তাতে লাগাতার হুমকি আসতে থাকে বলে অভিযোগ।
শনিবার বিকেলে সুফিয়া বিবি থানায় ওই দুই দালালের নামে অভিযোগ জানান। ফেরার পথে বাড়ির কাছেই আক্রান্ত হন। চার-পাঁচ জন হামলাকারী চলে যাওয়ার সময় হুমকিও দেয়। রবিবার সকালে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন সুফিয়া বিবির ছেলে শেখ আলাউদ্দিন। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, ওই এলাকারই বাসিন্দা তোহেরা খাতুন বলেন, ‘‘বৃদ্ধাকে রাস্তায় ফেলে মারা হচ্ছিল। আমরা না-গেলে হয়তো খুনই হয়ে যেতেন।’’
শেখ আলাউদ্দিন বলেন, ‘‘জমিটা মায়ের নামে রয়েছে। ওটাই সামশেররা দখল করার পরিকল্পনা করেছে।’’ পক্ষান্তরে, মারধরের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন সামশের। তাঁর দাবি, বৃদ্ধা আমাদের জমিটা বিক্রি করবেন বলে কথা দিয়েছিলেন। কিন্তু না-করায় আমরা কারণ জানতে চেয়েছি, এটা ঠিক। কিন্তু হুমকি দিইনি। অথচ, উনি আগে আমাদের নামে মামলা করে দেন। মারধরের অভিযোগ মিথ্যা। কারা তাঁকে মারধর করল জানি না।’’ এ দিন আনাসারের ফোন বেজে গিয়েছে। অভিযোগ নিয়ে তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy