দোকানে ঝুলছে টুনি লাইট।
এক সময় যাঁদের হাতে তৈরি মাটির প্রদীপে ঝলমল করেছে উৎসবের আঙিনা, সেই সেই মৃৎশিল্পীদের ঘরেই এখন অন্ধকার! সৌজন্যে বৈদ্যুতিক মোমবাতি, টুনি লাইট।
কালীপুজো এলেই ঘর আলো করতে মাটির প্রদীপের চাহিদা বেশ থাকত। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে গৃহস্থরা ঝুঁকেছেন তুলনায় সস্তা এবং বাহারি বৈদ্যুতিক আলোর দিকে। এই পরিস্থিতিতে কালীপুজোর মুখে চিন্তায় হুগলির পান্ডুয়ার কুমোররা। মাটির প্রদীপের কদর কমতে থাকায় এই কাজ ছেড়ে অনেকেই অন্য পেশার দিকে ঝুঁকছেন।
কেমন অবস্থা এই মৃৎশিল্পীদের?
প্রায় দেড় দশক ধরে দইয়ের ভাঁড়, চায়ের ভাঁড় তৈরি করে আসছেন পান্ডুয়ার বাসিন্দা শিবলাল প্রজাপতি। কালীপুজোর আগে মাটির প্রদীপ তৈরিতে ব্যস্ত থাকেন। তিনি বললেন, ‘‘দিন দিন মাটির তৈরি জিনিসের চাহিদা কমে যাচ্ছে। আগে দীপাবলির জন্য মাটির প্রদীপের প্রচুর চাহিদা ছিল। কিন্তু এখন তা আর নেই!’’ তিনি জানান, গঙ্গার মাটি দিয়ে তাঁরা প্রদীপ তৈরি করেন। কিন্তু মাটির দাম অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। তাই প্রদীপের দামও কিছুটা বাড়াতে হয়েছে। ছোট প্রদীপ ১০০টির দাম পঞ্চাশ টাকা। বড় প্রদীপ ৭০ টাকা। সেই তুলনায় বৈদ্যুতিক প্রদীপ ও মোমবাতি সস্তা।
কুমোরদের অনেকেই জানান, এই শিল্পই দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের জীবন-জীবিকার একমাত্র অবলম্বন ছিল। কিন্তু বর্তমানে মাটির জিনিস বিক্রি করে সংসার চালানো যাচ্ছে না। সুকুমার বাগ, সঞ্জীব পাল, দীপক পালদের বক্তব্য, ‘‘একটা সময় মাটির প্রদীপের এত চাহিদা ছিল যে, কালীপুজোর আগে নাওয়া-খাওয়ার সময় থাকত না। এখন আর সেই পরিস্থিতি নেই।’’ সুকুমারবাবু বলেন, ‘‘পঁয়ত্রিশ বছর ধরে এই কাজ করছি। কিন্তু সমস্যাটা হল, গত কয়েক বছর ধরে মাটির জিনিসের বিক্রিবাট্টা তলানিতে ঠেকেছে। গত বছর ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৫০ হাজার প্রদীপ তৈরি করেছিলাম। এ বার সংখ্যাটা ৫ হাজারে এসে ঠেকেছে।’’ অজয় পাল গত বছর ২০ হাজার প্রদীপ তৈরি করেছিলেন। এ বার তিনি ৬ হাজার প্রদীপ তৈরির বরাত পেয়েছেন।
তাঁরা চান, ফের গেরস্থের পছন্দের তালিকায় উঠে আসুক মাটির প্রদীপ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy