ফাইল চিত্র
ফের বাগনানের সামতাবেড়ে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাসভবনকে কেন্দ্র করে একটি অ্যাকাডেমি তৈরির দাবি উঠল। বৃহস্পতিবার ছিল সাহিত্যিকের ১৪৪ তম জন্মবার্ষিকী। সামতাবেড়ে তাঁর বাসভবনে নানা অনুষ্ঠান হয়। তাঁর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে আমতার বিধায়ক অসিত মিত্র বলেন, ‘‘এখানে শরৎ অ্যাকাডেমি গড়তে হবে। তাতে শরৎচন্দ্রের সব লেখা, তাঁর সংগ্রহে থাকা বইপত্র, তাঁকে নিয়ে যে সব বই রয়েছে, সেগুলি রাখতে হবে। যাতে সাধারণ মানুষ দেখতে পান এবং গবেষকরা কাজ করতে পারেন।’’ বিষয়টি তিনি একাধিকবার বিধানসভায় তুলেছেন বলে জানান অসিতবাবু।
ওই দাবির সঙ্গে সহমত পোষণ করেন ‘শরৎচন্দ্র জন্মবার্ষিকী পালন কমিটি’র অন্যতম কর্তা নিখিল বেরা। কমিটিও এ দিন সকাল থেকে অনুষ্ঠান করে। নিখিলবাবুর আরও দাবি, দেউলটি স্টেশনের নামকরণ শরৎচন্দ্রের নামে করতে হবে। দেউলটি স্টেশন থেকে সাহিত্যিকের বাড়ি পর্যন্ত তিন কিলোমিটার রাস্তাকে ‘শরৎচন্দ্র সরণি’ করারও দাবি তোলেন নিখিলবাবু।
জীবনের শেষ ১২টি বছর শরৎচন্দ্র সামতাবেড়ে কাটিয়েছিলেন। দিদি অনিলাদেবীর বিয়ে হয়েছিল পাশের গ্রাম গোবিন্দপুরে। সেখানে বেড়াতে আসার সূত্রেই সামতাবেড়ে জমি কিনে দোতলা বাড়ি তৈরি করেন শরৎচন্দ্র। এলাকার মানুষজনের সঙ্গে তাঁর প্রায় আত্মীয়তার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এলাকায় বন্যা প্রতিরোধে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়ে তিনি উলুবেড়িয়ার মহকুমাশাসকের সঙ্গে কথা বলেন। গরিব ও প্রান্তিক মানুষদের তিনি বিনা পয়সায় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করাতেন। এখানে থাকাকালীন তিনি রচনা করেছিলেন ‘পথের দাবি’, ‘বিপ্রদাস’, ‘শ্রীকান্ত’-এর চতুর্থ পর্বের মতো উপন্যাস। তাঁর বহু উপন্যাসের পটভূমিকায় এসেছে হাওড়া জেলার এই ছোট্ট জনপদ। অগ্নিযুগের বিপ্লবী, তৎকালীন সাহিত্য, সংস্কৃতি ও রাজনীতির জগতের মানুষ তাঁর কাছে নিয়মিত দেখা করতে আসতেন।
এলাকার মানুষজন কথাশিল্পীর বাসভূমিকে ‘তীর্থক্ষেত্র’-এর মর্যাদা দেন। স্থানীয় পঞ্চায়েতের নামকরণ হয়েছে শরৎচন্দ্রের নামে। পাশের গ্রাম পানিত্রাসে গড়া হয়েছে ‘শরৎ স্মৃতি গ্রন্থাগার’। সাহিত্যিকের ব্যবহৃত বহু জিনিস এখানে সংরক্ষিত আছে। পাশে গোবিন্দপুর গ্রামে গরিব মৎস্যজীবীদের সরকারি উদ্যোগে বাড়ি তৈরি করে দিয়েছে জেলা পরিষদ। প্রকল্পটি করা হয়েছিল শরৎচন্দ্রের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানাতে। শরৎচন্দ্রের বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে করা হচ্ছে ‘শরৎচন্দ্র স্মৃতি উদ্যান’। বাগনান-২ পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদের যৌথ উদ্যোগে এই প্রকল্পে খরচ হবে প্রায় ৪০ কোটি টাকা। রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের টাকায় ১৯৭৮ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কথাশিল্পীর বাসভবনের সংস্কার করা হয়েছে। নানা জায়গা থেকে পর্যটকেরা এখানে বেড়াতে আসেন। প্রতি বছর জানুয়ারি মাসে পানিত্রাস হাইস্কুল মাঠে সাত দিন ধরে চলে ‘শরৎ মেলা’। যা জেলার অন্যতম ‘সেরা মেলা’ হিসেবে স্বীকৃত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy