ভিড় বাসে এ ভােবই বাড়ি ফেরা। ছবি: কেদারনাথ ঘোষ
দুই ছেলে, স্ত্রী আর পোঁটলা-পুঁটলি নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে হন্যে হয়ে ডানকুনিতে বাস খুঁজছিলেন আফসার মোল্লা। মহারাষ্ট্র থেকে দীর্ঘ ট্রেন যাত্রার পরে অবশেষে রাজ্যে ফিরতে পেরেছেন পেশায় রাজমিস্ত্রি হাসনাবাদের যুবকটি।
কিন্তু বাসে উঠতে গিয়ে অন্তত জনা চল্লিশের পিছনে দাঁড়াতে হল। কারণ, লাইন গিয়েছে এঁকেবেঁকে। ভিড় দেখে ভয় পেয়ে যান আফসার, ‘‘ট্রেনে অসুবিধা হয়নি। কিন্তু এখানে যা ভিড়, এ বার না করোনা হয়!’’
কৃষ্ণনগরের বাপ্পা মণ্ডল মহারাষ্ট্রের একটি হোটেলের ‘সেফ’। পড়ে গিয়ে তাঁর হাত-পা ভাঙে। তিনিও এ দিন ফিরলেন। তাঁর গলাতেও আতঙ্ক, ‘‘ভাই আর ওর স্ত্রী ছিল বলে কোনওক্রমে এসেছি। ভয় লাগছে, এ বার না করোনা হয়! যা ভিড়!’’
ভিন্ রাজ্য থেকে এ দিন বিশেষ ট্রেনে রাজ্যের যে সব শ্রমিক ডানকুনি হয়ে ফিরলেন, তাঁদের জন্য অন্তত ৬০টি বাসের ব্যবস্থা করেছিল প্রশাসন। কিন্তু কয়েক হাজার শ্রমিকের ভিড় নিয়ন্ত্রণে তেমন ব্যবস্থাই ছিল না। ডানকুনি রেল ইয়ার্ডে তাঁদের বাসে তোলা হয়। অনেকের অভিযোগ, সেখানে বিধির কোনও বালাই ছিল না। স্যানিটাইজ়ার বা মাস্কও দেওয়া হয়নি। বাসের একই সিটে পাশাপাশি তিন জনকেও বসতে দেখা গিয়েছে। ট্রেনযাত্রী খানাকুলের নিমাই সামন্ত বলেন, ‘‘যতটা পেরেছি নিয়ম মানার চেষ্টা করেছি। কিন্তু এখানে যে ভাবে ভিড় বাসে উঠতে হচ্ছে, জানি না কী হবে!’’ কেন এমন হল?
জেলা প্রশাসন সূত্রের দাবি, একদিকে সমন্বয়ের অভাব, অন্যদিকে একই দিনে প্রচুর ট্রেন ঢোকায় ভিড় সামলানো যায়নি। বুধবার মধ্যরাতে মহারাষ্ট্র থেকে একটি ট্রেন আসে ডানকুনিতে। জেলা প্রশাসনের কাছে সেই মর্মে আগাম কোনও নির্দেশিকাই ছিল না। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ১১টি ট্রেন আসে ডানকুনিতে। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তা জানান, স্যানিটাইজ়ার ব্যবহারের কিছু বিধি আছে। সব ক্ষেত্রে তা রক্ষিত না-হওয়ার আশঙ্কাতেই দেওয়া হয়নি।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা অবশ্য আশ্বস্ত করেছেন, হুগলিতে ফেরা শ্রমিকদের বিধি অনুযায়ী স্বাস্থ্য পরীক্ষার কাজ হয়েছে। শ্রীরামপুরে দিল্লি রোডের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। চিকিৎসকের নির্দেশমতো কিছু শ্রমিককে সরকারি কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছে। বাকিদের বাড়িতেই থাকতে বলা হয়েছে। তবে রাত পর্যন্ত কত জনের স্বাস্থ্য পরীক্ষার কাজ হয়েছে, তা নির্দিষ্ট করে জানা যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy