Advertisement
২১ জানুয়ারি ২০২৫
Coronavirus

স্মার্টফোন নেই, মোবাইল কনফারেন্সেই পড়াশোনা  

বাড়িতে পড়াশোনা করতে গিয়ে পড়ুয়াদের এমন নানা সমস্যার সমাধানে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

প্রকাশ পাল
শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২০ ০৫:৩০
Share: Save:

‘ভয়েস চেঞ্জ’-এর নিয়মগুলো সবে শেখানো শুরু হয়েছিল। তার মধ্যেই ক্লাস বন্ধ।

বেশ কয়েক দিনের অনভ্যাসে বীজগণিতের সূত্রগুলো কেমন গুলিয়ে যাচ্ছে!

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপট একটু ভাল করে বোঝা দরকার!

বাড়িতে পড়াশোনা করতে গিয়ে পড়ুয়াদের এমন নানা সমস্যার সমাধানে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। চেষ্টা করছে বিভিন্ন স্কুলও। প্রযুক্তিকে হাতিয়ার করে ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনেক স্কুলে পঠনপাঠন চালুও হয়েছে। মোবাইলের সামনে বসে শিক্ষকের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে হচ্ছে পড়ুয়াদের। চলছে ‘ভার্চুয়াল ক্লাস’।

কিন্তু গ্রামাঞ্চলের বহু গরিব ছাত্রছাত্রীর বাড়িতে স্মার্টফোন নেই। তারা কী ভাবে শিক্ষকদের কথা শুনবে? এই বিষয়টিও ভাবাচ্ছে অনেককেই। হুগলির কয়েকটি স্কুল তাই সাধারণ মোবাইলের ‘কনফারেন্স কল’-এ পড়ানোতে উদ্যোগী হয়েছে।

মগরার বাগাটি রামগোপা‌ল ঘোষ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম মুখোপাধ্যায় জানান, বাড়িতে স্মার্টফোন না থাকায় অনলাইনে পড়াশোনার সুবিধা অনেক ছাত্রছাত্রী নিতে পারবে না। বিষয়টি ভেবেই তাঁরা সেই পথে এগোননি। পরিবর্তে পড়ুয়াদের ছোট ছোট দলে ভাগ করে মোবাইলে ‘কনফারেন্স কল’ করে শিক্ষকরা পড়াচ্ছেন। এতে অতি সাধারণ ফোনেও পড়ুয়ারা যোগ দিতে পারছে। গত ৫ তারিখ থেকে দশম শ্রেণির পড়ুয়াদের নিয়ে এই ভাবে ক্লাস চালু হয়েছে। ওই শ্রেণিতে ১৬০ জন পড়ুয়া আছে। তাদের মধ্যে ৯৫ জন এখনও পর্যন্ত যুক্ত হয়েছে। বুধবার থেকে একাদশ শ্রেণিতে বৃত্তিমূলক শিক্ষার বিভাগের পড়ানোও এই ভাবে চালু হয়েছে।

প্রধান শিক্ষকের কথায়, ‘‘আপাতত সকাল-বিকেল দু’ঘণ্টা করে ইংরেজি, ইতিহাস এবং ভৌতবিজ্ঞানের ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। বাকি বিষয়ও দ্রুত শুরু হবে। একটি গ্রুপে ৮-১০ জন পড়ুয়া থাকছে। আলাদা ভাবে তাদের কথা শোনা, প্রশ্নোত্তর পর্ব চালানো, কোনওটাই কঠিন হচ্ছে না।’’

স্কুলের দশম শ্রেণির পড়ুয়া গোপাল দাস বলে, ‘‘বাড়িতে স্মার্টফোন নেই। সাধারণ মোবাইল রয়েছে। স্যার একসঙ্গে কয়েক জনকে ফোন করে পড়াচ্ছেন। ভালই হচ্ছে। বন্ধুর ফোনে ওয়েবসাইট দেখেও পড়াশোনা চলছে আমার।’’ জাঙ্গিপাড়ার আঁটপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বীরেশ দাস বলেন, ‘‘শিক্ষক-শিক্ষিকারা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ করে পড়াচ্ছেন। যাদের সেই সুবিধা নেই, তাদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করতে বলেছি। প্রয়োজনে ফোনেই তাঁদের পড়া বোঝানোর ব্যবস্থার কথা ভাবছি।’’

শিক্ষক-শিক্ষিকারা মানছেন, স্মার্টফোনের মাধ্যমে সব পড়ুয়ার কাছে পৌঁছনো যাচ্ছে না। হরিপালের গজা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কৃষ্ণচন্দ্র সিংহ বলেন, ‘‘আমরা স্কুলের ফেসবুক পেজে পড়াশোনার বিভিন্ন বিষয় এবং প্রশ্ন আপলোড করছি। পড়ুয়ারা তা দেখে নিতে পারছে। কিন্তু এ ভাবে সবার কাছে পৌঁছনো যাবে না। সেই জন্য মোবাইলে ক‌নফারেন্স কল‌ করে বা অন্য কোনও মাধ্যমের আশ্রয় নেওয়া যায় কিনা, আমরাও ভাবছি।’’

আরও কয়েকটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, পড়ুয়াদের নথিপত্র স্কুলে থাকায় ফোনে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে, কী ভাবে মোবাইলের মাধ্যমে সবাইকে ক্লাসে যুক্ত করা যায়, সেই বিষয়ে তাঁরাও ভাবছেন।

পাঠক্রম তো শেষ করতে হবে।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেনআপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy