প্রতীকী ছবি
সকাল থেকেই শ্রমিকদের আনাগোনা আর হইচই আরম্ভ হয়ে যায় এখানে। ঘরঘর শব্দে চলতে থাকে কাজ। গত এক মাস ধরে আবহটা সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে। শ্রমিকদের দৌড়ঝাঁপ নেই। জায়গাটা এখন সুনসান।
লকডাউনের ফলে বিভিন্ন শিল্পে সঙ্কট দেখা দিয়েছে। একই পরিস্থিতি দড়ি শিল্পেও। হুগলির চণ্ডীতলা-২ ব্লকের কাপাসাহাড়িয়া পঞ্চায়েতের তিষা, সাহানা, সনকা, কাপাসাহাড়িয়া, বড় তাজপুর, খরসরাই প্রভৃতি গ্রামে ছোটবড় মিলিয়ে প্রায় ৮০টি দড়িকল আছে। অন্তত ১২০০ শ্রমিক দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করেন। রোজগার হারিয়ে তাঁরা মুষড়ে পড়েছেন।
প্রাত্যহিক জীবনে, ব্যবসায়িক নানা কাজে দড়ি প্রয়োজন হয়। এই কারবারের সঙ্গে যুক্ত লোকজন জানান, নাইলন, প্যারাসুট, পলিথিন প্রভৃতি নানা ধরনের সুতো পাকিয়ে দড়ি তৈরি করা হয়। কেউ নিজের জায়গায় ওই কাজ করেন। অনেকে জায়গা ভাড়া নিয়ে করেন। আগে চরকার সাহায্যে দড়ি পাকানো হতো। এখন যন্ত্রে হয়। প্রায় সকলের ঘরেই সুতো মজুত রয়েছে। শ্রমিকেরাও স্থানীয়। কিন্তু দড়ির বরাত নেই। তা ছাড়া, পরিবহণের অভাবে তৈরি সামগ্রী বাজারে পাঠানোও সম্ভব নয়। তার উপরে লকডাউন বিধি। এই পরিস্থিতিতে উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।
একটি দড়িকলের মালিক বাবলু সীট বলেন, ‘‘কলকাতার দড়ির ব্যবসাদার আমাদের সুতো দেন। আমরা দড়ি তৈরি করে দিই। আমার কাছে পাঁচ জন শ্রমিক কাজ করেন। এখন কাজ পুরোপুরি বন্ধ। লকডাউনের ফলে সকলেই কর্মহীন।’’ গোপাল ঘোষ নামে অন্য এক দড়িকল-মালিক বলেন, ‘‘কাঁচামাল থাকলেও কাজ করতে পারছি না। তৈরি মাল বাড়িতে পড়ে। যাচ্ছেতাই পরিস্থিতি। মার্চ মাসের মজুরি কোনও মতে দিতে পেরেছি। কাজ না হলে টাকা কোথায় পাব? এর পরে মজুরি কী ভাবে দেব? প্রশাসন আমাদের কথা একটু ভাবুক।’’
অনেক দড়িকল-মালিকের আশঙ্কা, কাজ না পেয়ে শ্রমিকেরা অন্য পেশায় চলে যেতে পারেন। কাপাসাহাড়িয়া পঞ্চায়েতের প্রধান সুরজিৎ পাল বলেন ‘‘দড়িকলে শ্রমিকের কাজ করে এলাকার অনেক যুবক স্বনির্ভর হয়েছেন। লকডাউনের জেরে এই শিল্প ধুঁকছে। আমরা পঞ্চায়েতের তরফে শ্রমিকদের ত্রাণ দেওয়ার কথা ভাবছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy