প্রতীকী ছবি
শ্রীরামপুরের পরে এ বার উত্তরপাড়া ও ডানকুনি।
‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’ হিসেবে চিহ্নিত উত্তরপাড়া শহরের ৯টি বাজার আজ, রবিবার থেকে বন্ধ হচ্ছে। বন্ধ হচ্ছে ডানকুনি পুর এলাকার সব বাজারও। দুই শহরের আনাজ বিক্রেতারা সরাসরি পৌঁছে যাবেন ক্রেতাদের বাড়িতে। ডানকুনির আনাজ-বিক্রেতাদের পুরসভার তরফে পরিচয়পত্র দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন উপ-পুরপ্রধান দেবাশিস মুখোপাধ্যায়।
লকডাউনেও এক শ্রেণির মানুষের প্রতিদিন বাজার করার প্রবণতা কিছুতেই আটকানো যাচ্ছিল না। ফলে, করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা বেড়েই যাচ্ছিল। সেই কারণে শ্রীরামপুরের বেশ কিছু বাজারকে আগেই বন্ধ করা হয়েছে। এ বার সেই তালিকায় নাম উঠল উত্তরপাড়া এবং ডানকুনির। ব্যবস্থা নেওয়া হল আরামবাগেও।
পুলিশ এবং উত্তরপাড়া পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, বাজার বন্ধ হলেও অত্যাবশ্যকীয় জিনিসের অভাব হবে না। ভ্যানে করে পাড়ায় পাড়ায় আনাজ বা মাছ-মাংস নিয়ে যাবেন বিক্রেতারা। কিন্তু প্রশাসনিক এই ব্যবস্থা কতটা মজবুত হবে, তা নিয়ে নাগরিকদের একাংশ সন্দিহান। সেই কারনে শনিবার শহরের প্রতিটি বাজারে ভিড় জমে।
পুরপ্রধান দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘লকডাউন ঘোষণার সময়েও এমনটাই হয়েছিল। কিন্তু মানুষের প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী পেতে কি সমস্যা হয়েছে? এ বারেও হবে না।’’
শ্রীরামপুর শহরের ১৭টি ওয়ার্ডে বৃহস্পতিবার থেকে কড়াকড়ি বেড়েছে। শহরের পাঁচটি বাজার বন্ধ। শনিবারেও পাড়ায় পাড়ায় আনাজ বা মাছ নিয়ে ভ্যান গিয়েছে। পুরসভা সূত্রের খবর, চিহ্নিত ওয়ার্ডগুলিতে ঘুরে আনাজ, মাছ বিক্রির জন্য ৫৫৭ জনের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। বিষয়টি তদারকি করছেন মহকুমাশাসক সম্রাট চক্রবর্তী।
পুরপ্রধান অমিয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট এলাকার বাইরে ভ্যান নিয়ে আনাজ বা মাছ বেচা যাবে না। সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রেতাদের ফোন নম্বর দিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’’ প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, আনাজ এবং মাছ বাদে অন্য কিছু ভ্যানে বিক্রি করা চলবে না।
লোকজন অকারণে রাস্তায় বেরোচ্ছে কিনা, সেই নজরদারির জন্য এ দিন কোন্নগরে হিলিয়াম বেলুন ওড়ানো হয়েছে। প্রশাসনের আধিকারিকরা জানান, বেলুনের মধ্যে লাগানো ক্যামেরায় ছবি উঠবে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে সেই ছবি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন। শ্রীরামপুরে কোন জায়গায় ওই বেলুন ওড়ানো হবে, তা চিহ্নিত করা হয়েছে।
শেওড়াফুলির কাঁচা আনাজের হাট শুক্রবার বৈদ্যবাটীর শাসমলপাড়ায় কৃষক বাজারে সরেছে। সেখানকার পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তুলে ভিন্ রাজ্যের আনাজ আনা বন্ধ করলেন ব্যবসায়ীরা। শনিবার হাটে আনাজের জোগান ছিল কম। দামও ছিল বেশি। ‘শেওড়াফুলি কাঁচা সব্জি বাজার সমিতি’র সম্পাদক সুকল্যাণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নতুন জায়গায় ট্রাক থেকে আনাজ নামানোর জন্য শ্রমিক মেলা ভার। শেওড়াফুলিতে বিধি মেনে বাজার চলতে পারে। নতুন জায়গায় তা সম্ভব নয়।’’
এ দিন আরামবাগে পুলিশ-প্রশাসন এবং পুরসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আজ থেকে শহরের বাজার সপ্তাহে তিন দিন (রবি, বুধ ও শুক্র) খোলা থাকবে। সকাল ১০টা পর্যন্ত বেচাকেনা করা যাবে। বাকি চার দিন প্রতি ওয়ার্ডে টোটোতে আনাজ এবং সাইকেল বা ভ্যানে মাছ নিয়ে যাবেন বিক্রেতারা। মুদিখানার সামগ্রীও টোটোতে করে পাড়ায় নিয়ে যাওয়া হবে। এসডিপিও (আরামবাগ) নির্মলকুমার দাস বলেন, ‘‘কোন ওয়ার্ডে কোন টোটো সামগ্রী নিয়ে যাবে, সেই তালিকা করা হয়েছে। ধীরে ধীরে বাজার সম্পূর্ণ বন্ধ করে ঘরে ঘরে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছনোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এর পরে মহকুমার বিভিন্ন গ্রামেও এই পদ্ধতি চালুর কথা ভাবা হচ্ছে।’’
পোলবার গোটু গ্রামে ঢোকার রাস্তা বন্ধ করেছে পুলিশ। বাইরের কেউ যাতে সেখানে না ঢোকেন, সেই নিয়ে মাইকে প্রচার চলছে। পুলিশ জানিয়েছে, কারও বিশেষ সমস্যা থাকলে থানায় ফোন করলে পুলিশ সাহায্য করবে। বাঁশবেড়িয়া শহরে বেশ কয়েকটি রাস্তা ‘সিল’ করে দিয়েছে পুলিশ। কয়েকটি জায়গায় ‘ড্রপ গেট’ করা হয়েছে। সেখানে পুলিশের কাছে উপযুক্ত কারণ দেখিয়ে তবেই গাড়ি নিয়ে যাওয়া যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy