পসরা সাজিয়ে সইদুল। — নিজস্ব চিত্র
হাঁড়ি তৈরি করা তাঁর পেশা। কিন্তু লকডাউনে সেই কাজ বন্ধ হওয়ায় বাড়িতে হাঁড়ি চড়ানোই কঠিন হয়ে পড়েছিল। অগত্যা লড়াকু শ্রমিকের পেশাবদল। হুগলির রিষড়া দাসপাড়ার শেখ সইদুল এখন মুড়ি, বিস্কুট আর ডিম বেচছেন।
স্ত্রী, চার ছেলেমেয়েকে নিয়ে এক কামরার ভাড়াবাড়িতে থাকেন বছর পঁয়তাল্লিশের সইদুল। বড় মেয়ে বিএ পাশ করে বসে আছেন। মেজো মেয়ে একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। ছোট মেয়ে এবং ছেলে পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়া। স্ত্রী-সন্তানকে সুখে রাখতে চেষ্টার কসুর করেন না সইদুল। উদয়াস্ত পরিশ্রম করেন লিলুয়ার একটি অ্যালুমিনিয়াম কারখানার শ্রমিক। ছোট ওই কারখানায় অ্যালুমিনিয়ামের হাঁড়ি, বালতি তৈরি হয়। সকাল ৮টা থেকে ৫টা পর্যন্ত কাজের পরে ‘ওভারটাইম’ করেন। মাসে রোজগার হাজার দশেক টাকা।
সইদুল জানান, বাড়িভাড়া, দৈনন্দিন খরচ, ছেলেমেয়ের পড়ার খরচ সামলে মাস শেষে হাতে টাকা থাকে না। তার উপরে লকডাউনে কারখানা বন্ধ হওয়ায় তিনি অথৈ জলে পড়েন। দু’মাস বেতন মেলেনি। ফোন করায় মালিক জানিয়েছেন, কারখানা না খুললে বেতন দেওয়ার পরিস্থিতি নেই। উপায়ান্তর না দেখে বিকল্প পথের সন্ধানে নামেন ছাপোষা মানুষটি। বাড়ির পাশেই কাঠগোলার সামনে টেবিল পেতে বসে মুড়ি, ডিম, বিস্কুট প্রভৃতি জিনিস বিক্রি শুরু করেন। প্রশাসনের নির্দেশ মেনে সকাল ৮টা থেকে ১২ পর্যন্ত খোলা থাকে তাঁর অস্থায়ী দোকান। দিনে রোজগার হয় কোনও দিন ১০০ টাকা, কোনও দিন ১২০ টাকা।
সইদুল বলেন, ‘‘কোনও রকমে চলছে। রেশনের চাল খাচ্ছি। তার সঙ্গে সব্জি, কোনও দিন ডাল-আলুসেদ্ধ। কোনও দিন এই পরিস্থিতি হয়নি। এখন বাধ্য হচ্ছি। জানেন, আমাদের রেশন কার্ড বড়লোকেদের। কি উল্টো নিয়ম!’’ সঙ্গে জুড়ে দেন, ‘‘আমরা শ্রমিক। লড়তে পারি। দেখা যাক কী হয়। কারখানা খুললে আশা করি আমার আগের অবস্থায় ফিরতে পারব। কবে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়, সেই অপেক্ষাতেই আছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy