প্রতীকী ছবি
কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে তটস্থ প্রশাসন। ভাইরাসকে বাগে আনতে নিরন্তর পরিকল্পনা চলছে। পরিকাঠামো তৈরিতে বিস্তর অর্থব্যয় হচ্ছে। অথচ, কোভিড-বর্জ্য নিষ্কাষণ নিয়ে সুষ্ঠু ব্যবস্থা এখনও হল না হুগলি জেলায়। যদিও, কোভিড-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এই রোগ মোকাবিলায় মহা গুরুত্বপূর্ণ বলে বিশেষজ্ঞরা সাবধান করছেন। ফলে, হুগলিতে এই ঢিলেঢালা মনোভাব নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠছে। সমস্যার কথা মানছেন স্বাস্থ্য দফতর এবং প্রশাসনের আধিকারিকরাও।
হুগলিতে হাসপাতাল, নার্সিংহোম থেকে মেডিক্যাল-বর্জ্য সংগ্রহের জন্য একটি বেসরকারি সংস্থা চুক্তিবদ্ধ। কোভিড-হাসপাতাল বা সেফ হাউসের বর্জ্যও তারাই সংগ্রহ করে। সংস্থার কল্যাণী প্ল্যান্টে নিয়ে গিয়ে ওই বর্জ্য বিশেষ প্রক্রিয়ায় নষ্ট করা হয়। অভিযোগ, কোভিড-পর্বে তারা হাসপাতালের মেডিক্যাল-বর্জ্য নিয়মিত ভাবে তুলছে না। ফলে, ওই বর্জ্য জমছে। বৃষ্টিতে তা জলে চুঁইয়ে যাচ্ছে। কখনও কুকুর টানাটানি করছে। এতে সংক্রমণের আশঙ্কা থাকছে।শুধু কোভিড-হাসপাতাল নয়, অন্যান্য স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানেও এই সমস্যা হচ্ছে। তাদের বক্তব্য, বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে করোনার উপসর্গ নিয়ে অনেকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি থাকছেন। তাঁদের বর্জ্যও থাকছে। অথচ নিয়মিত তা নেওয়া হচ্ছে না। দিনভর বহু রোগী বা তাঁদের আত্মীয়স্বজন হাসপাতালে আসেন। চিকিৎসক-নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশাপাশি তাঁদেরও সংক্রমিত হওয়ার ভয় থাকছে। বিভিন্ন হাসপাতালের তরফে জেলা স্বাস্থ্য দফতরে বার বার সমস্যার কথা জানানো হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্তাদের বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি সেই তিমিরেই রয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি রাজ্য স্বাস্থ্য ভবনের অজানা নয় বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।একটি সরকারি হাসপাতালের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ধরুন, কয়েক দিন পরে সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্মীরা এলেন। গাড়িতে জায়গা না থাকার কারণ দেখিয়ে কিছুটা বর্জ্য তুলেই চলে যাচ্ছেন। বাকিটা থেকে যাচ্ছে। বড় গাড়ি কেন পাঠানো হচ্ছে না?’’
অপর এক সরকারি হাসপাতালের এক কর্তা বলেন, ‘‘সমস্যা তো হচ্ছেই। অনেক বর্জ্য জমে গেলে জেলা প্রশাসনকে জানাই। প্রশাসনই ওই সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে।’’
সংশ্লিষ্ট সংস্থা অপারগ হলে অন্য কাউকে কেন দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে না, উঠছে সেই প্রশ্নও। এক হাসপাতাল-কর্তার ক্ষোভ, ‘‘সাবধানতা অবলম্বন এই রোগ মোকাবিলায় প্রধান হাতিয়ার। অথচ বর্জ্যের বিষয়টি অবহেলিত।’’ওই সংস্থা সূত্রের বক্তব্য, কল্যাণীর প্ল্যান্টে একাধিক জেলার চিকিৎসা-বর্জ্য যায়। বিপুল পরিমান কোভিড-বর্জ্যের চাপেই এই পরিস্থিতি। হুগলির পোলবার ওচাই গ্রামে তাদের একটি প্ল্যান্ট দেড় বছর ধরে বন্ধ গ্রামবাসীদের একাংশের বাধায়। ফলে, একদিকে যখন হাসপাতালে কোভিড-বর্জ্য ডাঁই হচ্ছে, তখন ওই প্ল্যান্টে চিকিৎসা-বর্জ্য নষ্ট করার যন্ত্রপাতি পড়ে নষ্ট হচ্ছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘বিষয়টি সত্যিই চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওই সংস্থা জানিয়েছে, পোলবার প্ল্যান্টটি চালু হলে সমস্যা থাকত না। ওখানে চারটি গাড়িও আটকে আছে। গ্রামবাসীরা রাস্তা কেটে দেওয়ায় বের করা যাচ্ছে না। সংস্থাটির সঙ্গে কথা বলা ছাড়া বিকল্প ভাবনা আমাদের হাতে নেই। বিষয়টি রাজ্যের গোচরে রয়েছে।’’
সমাধান কোন পথে, সেই উত্তর মিলছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy