প্রতীকী ছবি
আক্রান্তের তালিকায় যুক্ত হলেন আরও দু’জন।
শেওড়াফুলির করোনা আক্রান্ত প্রৌঢ়ের ছেলে এবং ভাইয়ের শরীরেও ওই ভাইরাসের উপস্থিতির প্রমাণ মিলল। ফলে, একই পরিবারের তিন জন এই ভাইরাসের কবলে পড়লেন। নতুন করে আক্রান্ত দু’জনকেই বুধবার শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ড থেকে কলকাতার বেলেঘাটা আইডি-তে পাঠানো হয়েছে।
উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে এ দিন বিকেলে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ড থেকে পরিজন-সহ ওই প্রৌঢ়ের সংস্পর্শে আসা ১২ জন বেরিয়ে যাওয়ায়। তাঁদের সিঙ্গুরে ট্রমা কেয়ার সেন্টারের কোয়রান্টিন শিবিরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে জানার পরেই তাঁরা বেরিয়ে যান। কয়েক জন বাড়িতেও ফিরে যান। হাসপাতালের তরফে পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়। সন্ধ্যায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, আট জনকে হাসপাতালে ফিরিয়ে আনা গিয়েছে। বাকি চার জনকেও পরে ফেরানো হয়। বুধবার রাতেই তাঁদের সিঙ্গুরে পাঠানো হয়।
এই ঘটনায় হাসপাতালের নজরদারি ব্যবস্থা নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠছে, তেমনই করোনা আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা লোকজনকে কেন এই ভাইরাসের ভয়াবহতার কথা বোঝানো গেল না, উঠছে সেই প্রশ্নও। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য অভিযোগ মানেননি। হাসপাতালের এক কর্তার দাবি, ‘‘নজরদারির অভাবের প্রশ্নই নেই। ওঁরা সরকারি কোয়রান্টিনে থাকার কথা শুনেই বেঁকে বসেন। রীতিমতো ঝগড়াঝাঁটি করে সবাই মিলে বেরিয়ে যান। পুলিশ এবং পুর-কাউন্সিলরকে বিষয়টি জানানো হয়।’’
শেওড়াফুলির ওই প্রৌঢ়ের বিদেশযাত্রার যোগ ছিল না। ভিন্ রাজ্যেও তিনি যাননি। তবে, গত ১৩ মার্চ তিনি ব্ল্যাক ডায়মন্ড এক্সপ্রেসে চেপে দুর্গাপুরে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে বাঁকুড়ার বড়জোড়াতেও যান। ওই রাতে তিনি ছিলেন দুর্গাপুরের একটি হোটেলে। পরের দিন ব্ল্যাক ডায়মন্ড এক্সপ্রেসে চেপে বাড়িতে ফেরেন। ১৫ তারিখ রাতে তাঁর জ্বর আসে। রবিবার রাতে তাঁর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ আসে। তিনি বর্তমানে সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সোমবার তাঁর স্ত্রী, ছেলে, ভাই, ভ্রাতৃবধূ এবং দুই নাবালক ভাইপোকে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়। তাঁদের দুই পরিচারিকা, এক পরিচারিকার স্বামী, দুই গাড়িচালক এবং এক গাড়িচালকের বাবা-মাকেও ওই ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়। সল্টলেকের হাসপাতালে ভর্তির আগে প্রৌঢ় কয়েক দিন ছিলেন চন্দননগরের একটি নার্সিংহোমে। সেখানকার সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, গত সোমবারই সকলের লালারসের নমুনা করোনা পরীক্ষার জন্য কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। বুধবার সকালে রিপোর্টে দেখা যায়, প্রৌঢ়ের ছেলে এবং ভাই করোনায় আক্রান্ত। বাকিদের রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’। এর পরেই ওই দুই আক্রান্তকে অ্যাম্বুল্যান্সে বেলেঘাটা আইডি-তে পাঠানো হয়। তাঁদের সংস্পর্শে কারা এসেছিলেন, তার তালিকা তৈরি করতে এ দিনই স্বাস্থ্য দফতর এবং প্রশাসনের কর্তাদের মধ্যে তৎপরতা শুরু হয়ে যায়। শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালের কর্তারা ওই দু’জনের সঙ্গে কথা বলেন।
প্রৌঢ়ের ছেলে কলকাতার একটি কলেজের আইনের ছাত্র। চিকিৎসকদের কাছে তিনি দাবি করেছেন, বাবার অসুস্থতার সময় থেকে তিনি বাড়ি থেকে কার্যত বেরোননি। এ কথা মানছেন এলাকাবাসীও। চিকিৎসকদের দাবি, ওই যুবকের কাকা পাড়ায় আড্ডা দিয়েছেন, ঘুরে বেরিয়েছেন এবং দোকানেও গিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তাঁর সংস্পর্শে এসেছিলেন, এমন কয়েকজনের নামও চিকিৎসকেরা তাঁর কাছ থেকে জানতে পেরেছেন। জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও জানিয়েছেন, প্রৌঢ়ের ভাইয়ের সংস্পর্শে এসেছিলেন এমন ১৭ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁদের হোম কোয়রান্টিনে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সকলে যাতে তা নিয়ম মেনে চলেন, সে জন্য বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy