অ-সচেতন: চন্দননগর স্পোর্টিং অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালনায় সিনিয়র ফুটবল লিগের ফাইনালে ভিড় দর্শকের। শনিবার কুঠির মাঠে। নিজস্ব চিত্র
কোথাও মাঠ ভরা দর্শক, কোথাও ঘাট ভরা পুণ্যার্থী, কোথাও জমজমাট মেলা!
দেশ ‘বিপর্যয়’-এর মুখে। হেলদোল নেই হুগলিতে!
নোভেল করোনাভাইরাসে এ দেশেও আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। পরিস্থিতিকে ‘বিপর্যয়’ বলে ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। রাজ্য সরকার নানা পদক্ষেপ করছে। যে কোনও রকম জমায়েতে না করা হচ্ছে। আইপিএল পিছিয়ে গিয়েছে। ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট সিরিজ বাতিল হয়েছে। ফাঁকা স্টেডিয়ামে হয়েছে আইএসএল ফাইনাল। বাতিল ডার্বি ম্যাচ। দরজা বন্ধ হয়েছে সায়েন্স সিটি, জাদুঘর, বিড়লা তারামণ্ডলের। সমস্ত খেলা বাতিল করেছে দুর্গাপুর মহকুমা ক্রীড়া সংস্থাও।
হুগলি যেন ভিন্ গ্রহের! করোনা-সচেতনতার নামগন্ধ নেই। পুলিশ প্রশাসনের নড়াচড়াই বা কই! শনিবার বিকেলে কচিকাঁচা-সহ শ’তিনেক দর্শকের উপস্থিতিতে চন্দননগরের কুঠির মাঠে ফুটবল ম্যাচ হল। গাজন উপলক্ষে বৈদ্যবাটীর নিমাইতীর্থ ঘাটে রবিবার প্রায় দশ হাজার মানুষের সমাগম হল। উত্তরপাড়ার দু’জায়গায় আবার মেলায় ভিড়। দেখা মিলছে না পুলিশ প্রশাসনের। এ সব বন্ধ করবে কে, প্রশ্ন তুলছেন পরিবেশবিদরা। চিকিৎসকদের একাংশও এই কাণ্ডজ্ঞানহীনতায় অসন্তুষ্ট। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী জানান, করোনাভাইরাসের সতর্কতা হিসেবে এক জায়গায় বহু মানুষের জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। সমস্ত খেলার ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য। এ ক্ষেত্রে কী হয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে হবে।
জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন, ‘‘আমরা সর্তকতা অবলম্বন করছি। কিন্তু এখনও সরকারি ভাবে মেলা বা খেলা বন্ধের নির্দেশিকা পাইনি। তবে আমরা প্রচারে বার বার মানুষজনকে বলছি, একটা ছোট জায়গায় বহু মানুষের সমাগম এড়িয়ে চলুন। তাই বলব, মেলা বা খেলার মাঠে কয়েকদিন যাবেন না। ঝুঁকি নেবেন না।’’
হুগলিতে এ পর্যন্ত কোনও করোনা-আক্রান্তের হদিস মেলেনি ঠিকই। কিন্তু যে গতিতে ভাইরাসটি ছড়াচ্ছে, তাতে প্রতিদিনই দেশে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। রোগ মোকাবিলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বেশি জোর দিচ্ছে সচেতনতায়। ফাঁকা স্টেডিয়ামে যদি আইএসএল ফাইনাল হতে পারে, তা হলে চন্দননগর কুটির মাঠে সিনিয়র ফুটবল লিগের ওই ফাইনাল হতে পারে না কেন?
লিগটির আয়োজক চন্দননগর স্পোর্টিং অ্যাসোসিয়েশন। তাদের দাবি, মাঠে হাজির দর্শকদের বের করে দেওয়া যায় না। অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বামাপদ চট্ট্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খেলায় বাইরের কোনও দল ছিল না। স্থানীয় ক্লাবের মধ্যে প্রতিযোগিতা হয়। সরকারি ভাবে খেলা বন্ধের কোনও নির্দেশ আসেনি।’’ তবে,
এমন আয়োজনে ক্ষুব্ধ শহরবাসীর একাংশও। তাঁদের মধ্যে এক প্রবীণ নাগরিক বলেন, ‘‘সব কাজে চন্দননগর আগে সাড়া দেয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কী হচ্ছে? চন্দননগরকে তো দেখে আমাদের মনে হচ্ছে না করোনা নিয়ে কোথাও কোনও সচেতনতার বাতাবরণ আছে।’’
দোল থেকে মেলা শুরু হয়েছে উত্তরপাড়ার দোলতলা এবং শখের বাজারের বলাকা মাঠে। জিটি রোডের ধারে মেলা, সেখানে লোক সমাগম হলেও প্রশাসনের চোখে পড়ছে না? পুরপ্রধান দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘দোল অনেকদিন মিটে গিয়েছে। আমরা চাইছি, মেলাগুলো আর যেন বেশিদিন না চলে। পুলিশ ও জেলাশাসককে জরুরি ভিত্তিতে বিষয়টি জানিয়েছি।’’
জনসমাগম হয়, এমন কিছু না করা বা তেমন জায়গায় আপাতত না যাওয়াতেই জোর দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy