—ফাইল চিত্র।
চাঁদের মাটিতে চন্দ্রযান-২ এর ল্যান্ডার বিক্রমের সফল অবতরণ দেখতে শনিবার গভীর রাতে টিভিতে চোখ রেখেছিলেন হুগলির বহু মানুষ। মনোবাঞ্ছা পূর্ণ না হলেও দেশের বিজ্ঞানীদের উপরে আস্থা হারাতে রাজি নন তাঁরা।
বিক্রমের সঙ্গে ইসরোর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঘোষণা শোনা ইস্তক সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘কমেন্ট’ শুরু হয়ে যায়। অনেকেই এই প্রচেষ্টার জন্য ইসরোর বিজ্ঞানীদের অভিনন্দন জানান। চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে মাত্র দু’কিলোমিটার অবস্থানেও বিক্রমের উপস্থিতি ধরা পড়েছিল। সেই বিষয়টি উল্লেখ করে কেউ লিখেছেন, ‘এখন দূরত্ব মাত্র দুই’। কারও মন্তব্য, ‘সাথে আছি ইসরো। সাথে আছি বিজ্ঞান’। ইসরোর চেয়ারম্যান কে শিবনের ছবি পোস্ট করে লেখা হয়েছে, ‘স্যার, আপনাকে স্যালুট’।
হরিপালের দ্বারহাট্টা পঞ্চায়েতের দলপতিপুর গ্রামের ছেলে সঞ্চয়ন বন্দ্যোপাধ্যায় বর্তমানে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনে পদার্থবিদ্যা নিয়ে পড়ছেন। ভবিষ্যতে মহাকাশ-বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে চান। তিনি জানান, বিক্রমের গতিবিধির কথা জানতে রাত সাড়ে তিনটে পর্যন্ত রেডিও-তে কান পেতেছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘এই অভিযান নিয়ে খুব রোমাঞ্চ হচ্ছিল। বিক্রম ঠিকঠাক ভাবে চাঁদের মাটি ছুঁয়ে ফেলবে ভেবেছিলাম। শেষ মুহূর্তে বিগড়ে যাওয়াটা বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিল।’’ একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘গোলযোগ হতেই পারে। অন্য দেশের তুলনায় অনেক কম খরচে এবং চাঁদের দক্ষিণ মেরুর মতো জায়গায় পৌঁছে যাওয়াটাই তো অবিশ্বাস্য। ভবিষ্যতে সাফল্য আসবেই। ছাত্র হিসেবেও বিষয়টা নিয়ে উৎসাহিত বোধ করছি। যাঁরা এই বিষয়ে আগ্রহী, তাঁদের জন্য এই অভিযান দুর্দান্ত অনুপ্রেরণা। আমাদের দেশে যে প্রতিভার অভাব নেই, এটাও প্রমাণিত হয়ে গেল।’’
শ্রীরামপুর কলেজের পদার্থবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক দীপঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘‘এত কাছে গিয়েও কাঙ্ক্ষিত ঘটনা না-ঘটায় খারাপ তো লাগছেই। এ ধরনের অভিযানে বহু পরিশ্রম লাগে। ঠিক কী কারণে এমন হল, জানতে নিশ্চয়ই তথ্য বিশ্লেষণ করা হবে। আগামী দিনের গবেষণায় এই অভিযান ভীষণ ভাবে কাজে লাগবে। বিজ্ঞান-প্রযুক্তির জন্য এই অভিজ্ঞতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’’ তিনি জানান, ইসরোর বিজ্ঞানীরা খুব ভাল কাজ করেছেন। আরও কিছু সময় এবং অর্থ খরচ হলেও ভবিষ্যতে অভিযান সফল হবেই। ঠিকঠাক ল্যান্ডিং না-হলে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, গবেষণা কোন পথে এগোবে সেই পরিকল্পনা নিশ্চয়ই বিজ্ঞানীরা আগাম ছকে রেখেছেন বলে তিনি মনে করেন।
হিন্দমোটরের বাসিন্দা প্রণব দাস মনে করেন, মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে ‘নতুন যুগের’ সূচনা হয়েছে এই অভিযানে। তিনি বলেন, ‘‘এ ধরনের দুর্দান্ত অভিযানে আমাদেরই জেলার বাসিন্দা চন্দ্রকান্ত কুমার ভীষণ ভাবে জড়িয়ে রয়েছেন জেনে রোমাঞ্চিত হচ্ছি। চন্দ্রকান্ত-সহ ইসরোর বিজ্ঞানীদের গোটা দলটা যে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন কয়েক বছর ধরে, তা বিফলে যাবে না। বিজ্ঞানের কোনও গবেষণাই বিফলে যায় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy