Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Interstate Migrant Workmen Act 1979

পরিযায়ী শ্রমিকদের সুরক্ষায় চিঠি কেন্দ্রের

বছরের বিভিন্ন সময়ে কাজের সূত্রে এক রাজ্য থেকে শ্রমিকেরা অন্য রাজ্যে যান।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

প্রকাশ পাল
চন্দননগর শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২০ ০১:২০
Share: Save:

গোটা দেশে পরিযায়ী শ্রমিকদের সুরক্ষায় নির্দিষ্ট আইন কার্যকর করতে উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্র। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় শ্রম দফতরের তরফে এই মর্মে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। চন্দননগরের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘আইন পরিষেবা কেন্দ্র’-এর আবেদনের ভিত্তিতে এই নির্দেশ বলে ওই নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে। এর আগে, পশ্চিমবঙ্গে পরিযায়ী শ্রমিকদের অধিকার সুনিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় শ্রম দফতরের তরফে রাজ্যের শ্রম দফতরকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল।

ওই সংগঠনের কর্ণধার বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শুধু কাগজপত্রেই যেন উদ্যোগ থেমে না-থাকে। আইন যেন আক্ষরিক অর্থেই কার্যকর করা হয়। না হলে আমাদের সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার কথা ভাবতে হবে।’’

বছরের বিভিন্ন সময়ে কাজের সূত্রে এক রাজ্য থেকে শ্রমিকেরা অন্য রাজ্যে যান। তাঁদের অধিকার নিয়ে নির্দিষ্ট আইন রয়েছে (ইন্টার স্টেট মাইগ্র্যান্ট ওয়ার্কমেন অ্যাক্ট ১৯৭৯)। সেই আইনে পরিযায়ী শ্রমিকদের কর্মনিযুক্তির নিয়ম এবং কাজের শর্ত ব্যাখ্যা করা হয়েছে। কিন্তু পরিযায়ী শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠনের অভিযোগ, সেই আইন ঠিক ভাবে কার্যকর হয় না। ফলে, শ্রমিকেরা অধিকার এবং ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হন।

দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় ইটভাটা, পাথর খাদান বা নির্মাণশিল্পে কাজ করতে ভিন্‌ রাজ্য থেকে বহু শ্রমিক আসেন। আইন পরিষেবা কেন্দ্রের তরফে এই সব শ্রমিকদের উপরে সমীক্ষা চালানো হয়। তাতেই বিশেষত ভাটা এবং পাথর-খাদানের শ্রমিকদের দুর্দশার চিত্র উঠে আসে আসে। সংগঠনের সদস্যদের অভিযোগ, অধিকাংশ ভাটা বা খাদানে শ্রমিকেরা ন্যূনতম স্বাচ্ছন্দ্য থেকে বঞ্চিত। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে ওই আইন কার্যকর করার দাবি জানান।

বিশ্বজিৎবাবু জানান, নিয়ম অনুযায়ী পরিযায়ী শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি, ইএসআই, প্রভিডেন্ট ফান্ডের সুবিধা দিতে হবে। ইএসআই না থাকলে উপযুক্ত চিকিৎসার বন্দোবস্ত করতে হবে। শ্রমিকদের ছেলেমেয়ের পড়াশোনার ব্যবস্থা করতে হবে। শিশুদের ক্ষেত্রে অঙ্গনওয়াড়ি জাতীয় প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থা করতে হবে। সংশ্লিষ্ট শ্রমিক যে প্রদেশের বাসিন্দা এবং যে রাজ্যে কর্মরত— দুই জায়গাতেই তাঁদের নাম নথিভুক্ত করতে হবে। শ্রম দফতরের অনুমতি নিয়ে তাঁদের কাজে নিতে হবে। প্রতি শ্রমিকপিছু নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা শ্রম দফতরে জমা রাখতে হবে, যাতে মজুরি না-পেলে ওই দফতর তা মেটাতে পারে।

বিশ্বজিৎবাবুদের দাবি, কোথাও এই নিয়ম মানা হয় না। অল্প টাকায় শ্রমিকদের খাটিয়ে নেওয়া হয়। একচিলতে ঘরে, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকতে হয়। পরিচ্ছন্ন শৌচাগার, পর্যাপ্ত জ‌ল, চিকিৎসা মেলে না। তাঁদের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা হয় না। ওই সব শ্রমিকদের অধিকাংশই আদিবাসী, নিরক্ষর বা স্বল্পশিক্ষিত। দারিদ্র এবং অজ্ঞতার জন্য তাঁরা সব মুখ বুজে মেনে নেন। সেই কারণেই এই সংগঠন ওই শ্রমিকদের অধিকার সুনিশ্চিত করার দাবিতে আন্দোলন করছে।

তাদের পাঠানো চিঠির ভিত্তিতে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের শ্রম দফতরের পদস্থ আধিকারিক অঙ্কুর দালালের পাঠানো এক নির্দেশিকায় দেশের সমস্ত রাজ্যের শ্রম কমিশনার এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের আঞ্চ‌লিক প্রধানদের বলা হয়েছে, পরিযায়ী শ্রমিক সংক্রান্ত আইন কার্যকর করতে পদক্ষেপ করতে হবে। প্রভিডেন্ট ফান্ড দফতরও নড়েচড়ে বসেছে। হাওড়া ও হুগলি জেলায় কতগুলি ইটভাটা রয়েছে, তাদের নাম-ঠিকানা সংশ্লিষ্ট ভূমি দফতর এবং রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাছ থেকে সম্প্রতি তারা জানতে চেয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Interstate Migrant Workmen Act 1979 Migrant Workers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy