গত কয়েক মাসে পর পর একাধিক মন্দিরে চুরির ঘটনা ঘটে বিভিন্ন এলাকায়। চেষ্টা করেও চোরদের নাগাল পাচ্ছিল না পুলিশ। শেষ পর্যন্ত পুলিশের কাজ সহজ করে দেয় সিসিটিভি। শেষ যেখানে চুরি হয় সেই জাপানি গেটের মন্দিরের সামনে লাগানো সিসি টিভির ফুটেজ দেখে মন্দিরে চুরির ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গত মাসে তিন জনকে গ্রেফতারও করে হাওড়া সিটি পুলিশ। পুলিশের দাবি, ধৃত তিনজনই চুরির মূল মাথা। জেরায় ধৃতেরা প্রায় সব কটি মন্দিরে চুরিতে জড়িত থাকার কথা স্বীকারও করেছে। সম্প্রতি ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে ডোমজুড় থানা। জাপানি গেটের মন্দির থেকে চুরি যাওয়া প্রণামীর বাক্সটিও পাশের নয়ানজুলি থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই তিনজনকে ধরার ফলে জেলায় পরপর মন্দিরে চুরির রহস্যের কিনারা হল বলে মনে করছে জেলা গোয়েন্দা দফতর।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম মৌসিম খান, মইদুল ইসলাম ও মহম্মদ আবিদ। সকলেরই বাড়ি হাওড়া শহরে। মৌসিম ও মইদুল সম্পর্কে মামা-ভাগ্নে। তারা সবাই হাওড়া হাটে পোশাক ব্যবসায় যুক্ত। জেরায় ধৃতেরা জানিয়েছে, দ্রুত বাড়তি টাকা রোজগারের জন্যই তারা মন্দিরে চুরি করতে শুরু করেছিল। হাওড়া শহর, গোলাবাড়ি, জাপানি গেট, ডোমজুড়-সহ বেশ কয়েকটি এলাকার মন্দিরে চুরি করে তারা। সব কটি চুরিই হয়েছে ভোররাতে। কিন্তু চুরির জায়গা হিসেবে ভোররাতকে কেন বেছে নিয়েছিল তারা? পুলিশের কাছে ধৃতেরা জানিয়েছে, ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিসের মতো ব্যস্ত জায়গার তুলনায় যে কোনও ধর্মস্থানে পুলিশের নজরদারি অনেক কম থাকে। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ঢিলেঢালা। ভোররাতে নিরাপত্তা থাকে না বললেই চলে। অথচ বেশিরভাগ বিগ্রহের গায়েই বহুমূল্য অলঙ্কার রয়েছে। সেই সুযোগই কাজে লাগিয়েছিল তারা। চুরি করা অলঙ্কার ও অন্যান্য সামগ্রী হাওড়ার বিভিন্ন দোকানে বিক্রি করা হতো। দোকানগুলির সঙ্গেও ধৃতদের যোগাযোগ ছিল বলেই পুলিশের অনুমান। কিন্তু পরিকল্পনা ঠিক থাকলেও বাদ সাধল সিসি টিভি-র ক্যামেরা। জাপানি গেটের মন্দিরে লাগানো সিসিটিভি-র সৌজন্যেই শেষ পর্যন্ত পুলিশের জালে ধরা পড়ে ওই তিনজন।
জাপানিগেটের মন্দিরের সামনে লাগানো সিসিটিভির ফুটেজে দেখা গিয়েছে, রাত তিনটের পর একটি মোটরবাইকে তিনজন যুবক মন্দিরের সামনে এসে দাঁড়ায়। তারপর বাইক থেকে নেমে একজন মুখে রুমাল বেঁধে মন্দিরের দরজার সামনে চলে যায়। একজন মন্দিরের দেওয়াল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে পড়ে। আর এক জন মোটরবাইকটি নিয়ে মন্দিরের সামনের রাস্তা দিয়ে হাঁটতে শুরু করে। যাতে মনে হতে পারে গাড়ির তেল শেষ হয়ে গিয়েছে। এর পরেই একটি যন্ত্র নিয়ে দরজার তালা ভাঙা হয়। তার পর ভিতরে ঢুকে অলঙ্কার নিয়ে বেরিয়ে এসে ফের মোটরবাইকে উঠে চম্পট দেয় তারা।
জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চোরেদের মুখ শনাক্ত করা যায়। পরে তাদের ছবি বিভিন্ন থানা ও জেলা পুলিশের বিভিন্ন শাখায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। মুখ দেখে অভিযুক্তদের প্রথমে শনাক্ত করে হাওড়া সিটি পুলিশ। তার পরেই টিকিয়াপাড়া থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের হেফাজতে নেয় গোলাবাড়ি থানা। এখন ডোমজুড় থানার পুলিশ ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
ডোমজুড় থানার এক কর্তা জানান, ধৃতরা সম্প্রতি সব মন্দিরের চুরির কথা স্বীকার করলেও মাকড়দহের তারা-মা মন্দিরে চুরির কথা স্বীকার করেনি। ধৃতদের দাবি, ওই মন্দিরে চুরির সঙ্গে তাদের কোনও যোগ নেই। যদিও পুলিশের অনুমান, মাকড়দহের মন্দিরে চুরির পিছনেও এই চক্রের হাত রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy