প্রতীকী ছবি।
কাজ শেষের সময়সীমা ধার্য হয়েছিল চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস। তার পরে আট মাস পেরোতে চলল। খানাকুলের মুচিঘাটা সেতু নির্মাণের কাজ এখনও গতি পেল না। সেতুর দু’দিকের সংযোগকারী রাস্তার জন্য এখনও জমি অধিগ্রহণই হয়নি। ফলে, কবে তাঁদের দুর্ভোগ মিটবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় গ্রামবাসী।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সেতুর দু’দিকে সংযোগকারী রাস্তার জন্য মোট ১৪ বিঘা জমির প্রয়োজন। সরকারি জমি মিলেছে মাত্র দু’বিঘা। বাকি ১২ বিঘা জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। সেই জমি চিহ্নিত হয়ে গিয়েছে অনেক আগে। কিন্তু তার মধ্যে একদিকে দু’টি বসতবাড়ি পড়ে যাওয়ায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৩৬ জনের জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। কিন্তু জমি-মালিকেরা কাঠাপ্রতি ৫-৭ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন। বসতবাড়ি রয়েছে, এমন একটি পরিবার আবার তাদের সকলের জন্য সরকারি প্রকল্পে বাড়ি-সহ কিছু দাবি তুলেছেন। সে সব খতিয়ে দেখে জমির সমস্যা মেটানো হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।
খানাকুল-২ ব্লকের পলাশপাই-১ এবং পলাশপাই-২ পঞ্চায়েতের মধ্যে মুচিঘাটাতে মুণ্ডেশ্বরী নদীর শাখা হুড়হুড়া খালের উপর পঞ্চায়েত সমিতির কাঠের সাঁকোর পরিবর্তে ১১০ মিটার লম্বা স্থায়ী সেতু নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। হাওড়া ও হুগলির সীমানাবর্তী এলাকাটি বন্যার সময়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। খানাকুলের বিধায়ক ইকবাল আহমেদ ২০১২ সালের ৫ মার্চ ওই বিষয়টির গুরুত্ব মুখ্যমন্ত্রীকে জানান। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পূর্ত দফতর জমি জরিপের কাজ শুরু করে ২০১৩ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি। সেতু নির্মাণের অনুমোদন মেলে। গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন তহবিলের (আরআইডিএফ) প্রায় ৮ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকায় সেতুটি তৈরি হচ্ছে জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে।
২০১৬ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি সেতুটির শিলান্যাস করেছিলেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। সেতুটি চওড়া হবে ১১.০৫ মিটার এবং সংযোগকারী রাস্তা হবে ৫৪৩.২০ মিটার লম্বা। কিন্তু এতদিনে সেতুর স্তম্ভ হয়েছে শুধু। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, যে গতিতে কাজ হচ্ছে, তাতে সেতু কবে সম্পূর্ণ হবে, তা অনিশ্চিত। সংযোগকারী রাস্তা না-হওয়ায় সেতুর উপরের রাস্তাও তৈরি হয়নি।
বিডিও দেবল উপাধ্যায় জানান, পলাশপাই-১ পঞ্চায়েতের দিকে এখনই যে জমির প্রয়োজন, তার মালিকদের সঙ্গে সম্প্রতি আলোচনা হয়েছে। সমস্যা মিটে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ওই এলাকায় বসবাড়ি রয়েছে দু’টি। পলাশপাই-২ ব্লকে চিহ্নিত জমিতে অবশ্য কোনও বসতবাড়ি নেই। ওই বৈঠকে ছিলেন খানাকুলের বিধায়কও। তিনি বলেন, ‘‘সেতুর সংযোগকারী রাস্তার জন্য একটি পরিবারের বসতবাড়ির কিছুটা ক্ষতি হবে। তাঁদের জন্য সরকারি আবাসনের ব্যবস্থা হবে। পানীয় জলের সমস্যাও মেটানো হবে। বাকি জমির মালিকদের সঙ্গেও শীঘ্রই আলোচনা করা হবে। জমির সমস্যা থাকবে না।”
নতুন সেতুটিকে কেন্দ্র করে খানাকুলের দু’টি ব্লক এবং হাওড়ার আমতা ও উদয়নারায়ণপুর ব্লক এলাকার কয়েক লক্ষ মানুষ অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বপ্ন দেখছেন। এতে কলকাতা বা হাওড়ায় পৌঁছনোর রাস্তা কমবে। গ্রামবাসীরা সহজেই বাজারে কৃষিপণ্য পৌঁছতে পারবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy