Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
বিপর্যয় মোকাবিলা নিয়ে প্রশ্ন
mundeswari river

মুণ্ডেশ্বরীতে নিখোঁজের দেহ মিলল ১০ দিন পরে

১০ দিনের মাথায়, শুক্রবার বিকেলে বালিপুর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে হরিশচক এলাকায় ওই নদী থেকেই তাঁর দেহ মিলল। একই সঙ্গে মহকুমার বিপর্যয় মোকাবিলা ব্যবস্থাপনা নিয়েও প্রশ্ন উঠল।

বিপর্যয় মোকাবিলার এই বাহিনীই ব্যর্থ হয়েছিল। —নিজস্ব চিত্র

বিপর্যয় মোকাবিলার এই বাহিনীই ব্যর্থ হয়েছিল। —নিজস্ব চিত্র

পীযূষ নন্দী
খানাকুল শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০১:১৩
Share: Save:

দিন দশেক আগে মুণ্ডেশ্বরী নদীতে স্নান করতে নেমে তলিয়ে গিয়েছিলেন খানাকুলের বালিপুর গ্রামের শেখ মসিয়ার রহমান (৪৯)। অসামরিক প্রতিরক্ষা দফতরের (সিভিল ডিফেন্স) দল এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী তাঁকে উদ্ধারের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। ১০ দিনের মাথায়, শুক্রবার বিকেলে বালিপুর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে হরিশচক এলাকায় ওই নদী থেকেই তাঁর দেহ মিলল। একই সঙ্গে মহকুমার বিপর্যয় মোকাবিলা ব্যবস্থাপনা নিয়েও প্রশ্ন উঠল।
রাজ্যের ‘অতি বন্যাপ্রবণ’ এলাকাগুলির মধ্যে আরামবাগ মহকুমা অন্যতম। এখানকার ৬টি ব্লকের ৬৩টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ৫৩টিই সরকারি ভাবে ‘বন্যাপ্রবণ’ বলে চিহ্নিত। তারপরেও হাতের কাছে কেন বিপর্যয় মোকাবিলার উপযুক্ত সরঞ্জাম এবং প্রশিক্ষিত উদ্ধারকারী দল থাকবে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ মানুষ। মৃতের স্ত্রী মুর্শিদা বেগমের ক্ষোভ, “আমরা ডুবুরি এনে তল্লাশির কথা বলেছিলাম। কিন্তু হয়নি।”
মহকুমা বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এখানে ‘সিভিল ডিফেন্স’-এর একটিই ইউনিট আছে। তাতে জনাপঞ্চাশ সদস্য রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৫ জন প্রশিক্ষিত। বিপর্যয় মোকাবিলার সরঞ্জাম বলতে উদ্ধারকারী গাড়ি রয়েছে একটি। স্পিডবোট দু’টি। ১৬টি লাইফ-জ্যাকেট। বন্যার সময় কয়েক মাস অবশ্য মহকুমার চারটি থানা এলাকার জন্য চারটি স্পিডবোট আনা হয়।
পরিকাঠামোগত ত্রুটির কথা মেনে নিয়েছেন বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মহকুমা আধিকারিক হেমন্তকুমার চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “মহকুমার প্রতিটি ব্লকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দলের পাশাপাশি আরও খানছয়েক স্পিডবোট থাকলে ভাল হয়। সবচেয়ে সমস্যা একজনও ডুবুরি নেই। ডুবুরির জন্য কলকাতায় খবর পাঠাতে হয়। এ ছাড়া জলের মধ্যে দেখার বিশেষ ক্যামেরাও নেই। দফতরে কর্মীরও অভাব রয়েছে।”
গত ২৬ অগস্ট দুপুরে তলিয়ে গিয়েছিলেন শেখ মসিয়ার। ওই দুপুর থেকে তিন দিন ধরে সিভিল ডিফেন্স এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর প্রায় ১৮ জনের দল তল্লাশি চালিয়েও তাঁর সন্ধান পায়নি। চার দিনের মাথায় ফিরে যায় জাতীয় বিপর্যায় মোকাবিলা বাহিনী। ওই সময় ব্লক প্রশাসন এবং পুলিশ থেকে বলা হয়েছিল, নদীর স্রোত বরাবর প্রায় ২০-২৫ কিলোমিটার (হাওড়ার ঝিকিরা পর্যন্ত) অনুসন্ধান চালিয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। দেহ পাওয়া যাবে না ধরে নিয়েই তল্লাশি বন্ধ করে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
শুক্রবার বিকেলে মসিয়ারের দেহটি হরিশচকে নদীতে ভেঙে পড়া একটি গাছের ডালপালায় আটকে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন স্থানীয় মানুষ। পুলিশ পচাগলা দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়।
মহকুমার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি, সম্পত্তি রক্ষা করা না গেলেও অন্তত জীবনহানি রুখতে আরামবাগে একটি বিপর্যয় মোকাবিলা সংক্রান্ত ব্যবস্থা তৈরির। এই দাবি যুক্তিসঙ্গত বলে মেনে নিয়েছেন মহকুমার দুই বিধায়ক— গোঘাটের মানস মজুদার এবং আরামবাগের কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা। তাঁরা জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে তাঁরা রাজ্যস্তরে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। নতুন করে তদ্বিরও করা হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Mundeswari River Accident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy