হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুক্তিদেবী। ছবি: তাপস ঘোষ।
হুগলির ভদ্রেশ্বর থানার খুড়িগাছিতে সোমবার ওই ঘটনায় আহত মুক্তি চক্রবর্তীকে চন্দননগর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। অভিযোগ, তাঁর ছেলেকেই উচ্ছেদের জন্য দোকানের মালিক দুষ্কৃতী দিয়ে ওই হামলা চালায়। পুলিশের এক পদস্থ কর্তা জানান, প্রাথমিক তদন্তে মনে হয়েছে বাড়ির মালিক পুরনো ভাড়াটে তুলে আরও বেশি ভাড়া পেতেই ভাড়াটে উচ্ছেদে হামলা চালিয়েছে। আহতের পরিবারের তরফে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ দিন ঘটনার পর থেকেই দোকানমালিক নাণ্টু ভৌমিক পলাতক বলে পুলিশ জানিয়েছে। পুলিশ তাঁর বাড়িতে গেলে পরিবারের লোকেরা জানান, তিনি বেরিয়ে গিয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, খুড়িগাছি এলাকার বাসিন্দা নাণ্টুর একটি দোকান ঘর ভাড়া নিয়ে মোবাইল সারাইয়ের ব্যবসা করতেন এলাকারই বাসিন্দা গোবিন্দ চক্রবর্তী। ১৬ বছর ধরে তিনি এই দোকানে ব্যবসা করছেন। গোবিন্দবাবু বলেন, ‘‘ভাড়ার জন্য রসিদ পেলেও কতদিনের জন্য ভাড়া তা নিয়ে মালিকের সঙ্গে কোনও চুক্তি ছিল না।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘গত ১ সেপ্টেম্বর নাণ্টু আমাকে দোকান ছেড়ে দিতে বলেন। এমনকী হুমকি দেওয়া হয়, সাত দিনের মধ্যে দোকান না ছাড়লে দোকান ভেঙে জিনিসপত্র বাইরে ফেলে দেওয়া হবে।’’ নিরুপায় গোবিন্দবাবু পরদিনই চাঁপদানি পুরসভার দ্বারস্থ হন। পুরপ্রধানের সঙ্গে দেখা করে তাঁকে উচ্ছেদের হুমকির কথা জানান। তারপর থেকে রবিবার পর্যন্ত দোকান বন্ধ রেখেছিলেন। সোমবার বিকেলে তিনি একবার দোকান খুলে দেখতে গিয়েছিলেন সব ঠিক আছে কি না। সাড়ে ৪টে নাগাদ দোকান বন্ধ করে অন্যত্র কাজে বেরিয়ে যান।
দোকানের অদূরেই গোবিন্দবাবুর বাড়ি। অভিযোগ, পৌনে পাঁচটা নাগাদ স্থানীয় কিছু যুবক তাঁর বাড়িতে গিয়ে জানায় দোকান ছেড়ে দিতে হবে। বাড়িতে তখন গোবিন্দবাবুর স্ত্রী ও মা ছিলেন। তাঁরা ফোন করলে গোবিন্দবাবু বাড়ি ফিরে আসেন। তাঁকে দেখে ওই যুবকরা চলে যায়। একটু পরে ফের জনা ১৫ যুবক এসে গোবিন্দবাবুকে বাড়ির বাইরে ডাকে। তিনি বেরিয়ে এলে তাঁকে মারধর শুরু করে। ছেলেকে মারতে দেখে মা মুক্তিদেবী এবং স্ত্রী বেরিয়ে এসে হামলাকারীদের না মারতে অনুরোধ করেন। কিন্তু তারা তাতে কান না দিয়ে উল্টে তাঁদের উপর চড়াও হয়। চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে বাসিন্দারা ছুটে এলে তাঁদেরও কয়েকজনকে হামলাকারীরা মারধর করে। আরও লোকজন জড়ো হলে অবস্থা বেগতিক বুঝে পালানোর সময় ভয় দেখাতে হামলাকারীরা কয়েকটি বোমা ফাটায়। বোমার টুকরোয় আহত হন গোবিন্দবাবুর ৬০ বছরের বৃদ্ধা মা মুক্তিদেবী। তাঁর মুখে, পিঠে আঘাত লাগে। পুলিশ এসে মুক্তিদেবীকে চন্দননগর হাসপাতালে ভর্তি করে। ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। তাঁদের অভিযোগ বাইরে থেকে গুণ্ডা এনে হামলা চালানো হয়েছে। দোষীদের গ্রেফতার করে উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy