দ্বারকেশ্বর নদে রামকৃষ্ণ সেতুর নীচে ভরাট করা সেই চর। ছবি: মোহন দাস।
এমনিতেই বন্যাপ্রবণ সমগ্র মহকুমা। তার উপর দ্বারকেশ্বর নদীর চর বেআইনিভাবে ভরাট করে ব্যবসায়িক ভাবে কাজে লাগানোর অভিযোগ উঠল আরামবাগ পুরসভার বিরুদ্ধে।
নদীর প্রবাহ পথে এ ভাবে বাধা সৃষ্টির জেরে বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন গোঘাটের চারটি পঞ্চায়েত এলাকার মানুষ।ওই চার পঞ্চায়েতের প্রধানরা এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে গোঘাটের বিধায়কের কাছে অভিযোগ করেছেন। সেচ দফতরেও চিঠি পাঠিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে খবর, যে অংশে চরে মাটি ফেলে ভরাট করে মাঠ তৈরি হয়েছে তার মাঝে পড়ছে ভাদুর, রঘুবাটি এবং কুমুড়শা পঞ্চায়েত এলাকা। ভাদুর পঞ্চায়েতের প্রধান মধুমিতা খাঁর অভিযোগ, “প্রতিবার বন্যায় এমনিতেই বিরামপুর, কুলকি, বাঘারপাড়, মণ্ডলগাঁতি প্রভৃতি ৮-৯টি গ্রামের মানুষদের সরে যেতে সরাতে হয়। নদীর পশ্চিমদিক বরাবর কোন বাঁধও নেই। এখন পুরসভা আবার চর ভরাট করে মাঠ করেছে। এর পর বন্যার জলের চাপে গ্রামগুলো আর আস্ত থাকবেনা। সব জেনেও প্রশাসন কেন উদাসীন বুঝতে পারছি না।’’ একই আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন রঘুবাটি পঞ্চায়েতের প্রধান অচিন্ত্য রায়, কুমারগঞ্জের প্রধান অসীমা সাঁতরা এবং কুমুড়শার প্রধান হানুফা বেগম।
সেচ দফতরের আরামবাগ মহকুমা আধিকারিক প্রিয়ম পাল বলেন, “পুরসভার পক্ষ থেকে একটি গার্ড ওয়াল দেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছে। সেটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষর কাছে পাঠানো হয়েছে। নদীর চর ভরাট করার কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
আরামবাগ পুরসভা সূত্রে খবর, শহরের পল্লিশ্রীতে দ্বারকেশ্বর নদীর উপর রামকৃষ্ণ সেতুর নীচে নদীবাঁধের ভিতর দিকে বিশাল এলাকা জুড়ে চর রয়েছে। দিনের পর দিন চরে আবর্জনা ফেলার জেরে তা দূষণ ছড়াচ্ছিল। মাস ছয়েক আগে পরিচ্ছন্ন শহর গড়ার লক্ষ্যে ওই চর থেকে আবর্জনা পরিষ্কার করে পুরসভা। পুর চেয়ারম্যাম স্বপন নন্দীর বক্তব্য, ‘‘জায়গাটা আবর্জনায় ভাগাড় হয়ে উঠেছিল। শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে আবর্জনা সরিয়ে মাটি ভরাট করে মাঠ করা হয়েছে। ষেখানে খেলাধূলা-সহ নানা অনুষ্ঠান, সভা-সমাবেশ করা যাবে।” পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, ভরাট করা অংশটি নদীর স্থির জোন (বলয়) এলাকা বলে তাঁরা জেনেছেন। ফলে মূল নদীর গতিপথ বাধাপ্রাপ্ত হবে না।
বিধায়ক মানস মজুমদার বলেন, ‘‘এ ভাবে নদীর গতিপথে বাধা সৃষ্টি করে গোঘাটকে বিপর্যস্ত হতে দেওয়া যাবে না। বিষয়টা নিয়ে আরামবাগ পুরসভা এবং সেচ দফতরের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।’’
নদী বিশেষজ্ঞ কল্যাণ রুদ্রর বক্তব্য, ‘‘এ ধরনের কাজ সাধারণত আমরা অনুমোদন করি না। তবে সেচ দফতরের সঙ্গে কথা বলে এমনটা করা হয়েছে কি না তা না জেনে এবং ওই জায়গা না দেখে কিছু বলা যাবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy