দূষণ: দিল্লি রোডের ধারে এ ভাবেই পোড়ানো হচ্ছে জঞ্জাল। কালো হয়ে গিয়েছে গাছ। ছবি: দীপঙ্কর দে
রাস্তার ধারে দেদার পোড়ানো হচ্ছে জঞ্জাল। তাতে দূষণ ছড়াচ্ছে পরিবেশে। ঝলসে যাচ্ছে গাছগাছালি। হুগলিতে দিল্লি রোডের ধারের এই দূষণ রোধের দাবিতে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
ওই সংস্থার সদস্যদের অভিযোগ, শ্রীরামপুরের বাঙ্গিহাটি মোড়ে একটি ইস্পাত কারখানার পাশে ওই সড়কের ধারে কে বা কারা আবর্জনা ফেলে দিয়ে যায়। গাড়ি করে এনে প্রায় প্রতিদিনই প্রচুর পরিমাণে আবর্জনা ফেলা হয়। পরে সেই আবর্জনা পুড়িয়ে দেওয়া হয়। তাতে কালো ধোঁয়ায় চারদিক ঢেকে যায়। সেই ধোঁয়ায় যেমন পরিবেশ দূষিত হচ্ছে, তেমনই পাশে থাকা শিরিষ, বাবলা প্রভৃতি গাছ আগুনে ঝলসে যাচ্ছে। কিন্তু পঞ্চায়েত থেকে প্রশাসন, ভ্রুক্ষেপ নেই কারও।
সম্প্রতি ওই সংগঠনের পক্ষ থেকে জায়গাটি পরিদর্শন করা হয়। সভাপতি আবু আজাদের ক্ষোভ, ‘‘জঞ্জাল পোড়ানোর ধোঁয়া গাড়ি চালকদের নাকেমুখে ঢুকছে। তাঁদের ক্ষতি হচ্ছে। বেশ কিছু গাছ ঝলসে গিয়েছে। সার্বিক ভাবে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। কেউ দেখার নেই!’’ দূষণ থেকে পরিবেশকে বাঁচানোর আর্জিতে ওই সংগঠন স্থানীয় রাজ্যধরপুর পঞ্চায়েত থেকে হুগলির জেলাশাসক, বন ও পরিবেশ দফতর, শ্রীরামপুর থানায় লিখিত দরখাস্ত জমা দিয়েছে।
সমস্যার কথা মানছেন রাজ্যধরপুর পঞ্চায়েতের কর্তারা। তাঁদের অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে গাড়ি করে দিল্লি রোডের ধারে আবর্জনা ফেলে দেওয়া হয়। বাঙ্গিহাটি মোড় থেকে কিছুটা তফাতে একটি ইস্পাত কারখানার সামনে পর্যন্ত এই সমস্যা রয়েছে। এক যুবক সেগুলিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পঞ্চায়েতের এক কর্তার কথায়, ‘‘বিভিন্ন কল-কারখানার আবর্জনা এনে ফেলা হয়। সেখান থেকে কিছু ধাতব জিনিস সংগ্রহ করে বিক্রি করেন ওই যুবক। বাকি আবর্জনা পুড়িয়ে ফেলেন।’’
পঞ্চায়েত প্রধান মোহন মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা মৌখিক ভাবে অনেক বার ওই যুবককে নিষেধ করেছি। থানাকেও জানিয়েছিলাম। এ বার নোটিস দিয়ে এটা বন্ধ করা হবে। প্রশাসনকেও চিঠি দিচ্ছি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘রাতের অন্ধকারে কারা আবর্জনা ফেলে যাচ্ছে, বুঝতে পারা যাচ্ছে না। এই বিষয়টিও প্রশাসনকে জানাচ্ছি।’’
তবে শুধু ওই জায়গা নয়, দিল্লি রোড এবং মুম্বই রোডের বিভিন্ন অংশে এ ভাবে দূষণ ছড়ায় বলে পরিবেশকর্মীদের অভিযোগ। পরিবেশবিদ বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আবর্জনার সঙ্গে প্লাস্টিক, মেডিক্যাল বর্জ্যও পোড়ে। এতে মারাত্মক বায়ুদূষণ হয়। পুড়ে যাওয়া অবশিষ্টাংশ বা ছাই বৃষ্টির জলে ধুয়ে গিয়ে নিকাশি নালায় পড়ে, জলাশয়ে মেশে। জীববৈচিত্র ধ্বংস করে।’’ তিনি জানান, হাওড়া এবং হুগলিতে সড়কের ধারে এই সমস্যা নিয়ে তাঁরা বহু বার প্রশাসন থেকে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদে অভিযোগ জানিয়েছেন। কিন্তু পরিবেশের প্রতি মানুষের এই অত্যাচার বন্ধ হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy