ক্লাসরুম: পুলিশের সচেতনতা শিবির চলছে চন্দননগরে। —িনজস্ব িচত্র
মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হলেই হুগলিতে নিয়মভাঙা পুলকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নামছে পুলিশ। তার আগে আপাতত বেলাগাম পুলকারকে বাগে আনতে সচেতনতা শিবিরে জোর দেওয়া হচ্ছে। পুলকার এবং তার চালকদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের কাজও জারি রাখছে পুলিশ। ইতিমধ্যে পুলকারের বিধিনিষেধ সংক্রান্ত রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা বিভিন্ন স্কুলে পাঠানো হয়েছে।
ব্যবস্থা গ্রহণে কিসের অপেক্ষা?
পুলিশকর্তাদের অভিমত, মাধ্যমিক চলাকালীন কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে এবং তার জেরে কোনও সমস্যা হলে আঁচ পরীক্ষার্থীদের উপর পড়তে পারে। তাই এখনই নিয়মভাঙা পুলকারের ক্ষেত্রে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। তা ছাড়া, পোলবার দুর্ঘটনার পরে পুলকার চালক এবং মালিকেরা পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে কিছুটা সময় চান। যাতে পুলকার সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্র তাঁরা তৈরি করে নিতে পারেন। তাই সব দিক বিবেচনা করে আপাতত কিছুটা ‘ধীরে চলো’ নীতি নেওয়া হয়েছে।
পুলকার নিয়ে পুলিশের সচেতনতা শিবির অবশ্য ইতিমধ্যেই চালু হয়ে গিয়েছে। রবিবার সিঙ্গুর থানায় জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের আওতায় থাকা ৮টি থানা এলাকার ওসি, পুলকার মালিক, চালক এবং অভিভাবকদের নিয়ে একটি বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে ডিসিপি (ট্রাফিক) অয়ন সাধু এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর)রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন। পুলিশের পদস্থকর্তারা ‘ভিডিয়ো ক্লিপিংস’-এর মাধ্যমে ঠিক কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে, তা সব পক্ষকে বুঝিয়ে বলেন। তার সাপেক্ষে গাড়ির মালিক, চালক এবং অভিভাবকদের ঠিক কী ভূমিকা হওয়া উচিত, তা ব্যাখ্যা করেন।
জেলা (গ্রামীণ) ডিএসপি ট্র্যাফিক অয়ন সাধু বলেন, ‘‘যে সব থানা এলাকায় বেশি পুলকার চলে, রবিবার সেখানকার সবাইকে ডাকা হয়েছে। কারণ, কোনও বিধি যখন প্রয়োগ করা হয়, তখন সংশ্লিষ্ট সব পক্ষেরই নির্দিষ্ট ভূমিকা থাকে। পুলিশ, অভিভাবক, গাড়ির মালিক, চালক, স্কুল কর্তৃপক্ষ— সবারই। আমরা এ দিনের বৈঠকে সেই ব্যাখ্যাই সকলের কাছে তুলে ধরেছি।’’
চুঁচুড়ার পরে শনিবার চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের পক্ষ থেকে চন্দননগরেও সচেতনতা শিবির হয়। সেখানে শহরের স্কুলগুলির গাড়ির চালক-মালিকদেরও ডাকা হয়। শিবিরে উপস্থিত প্রত্যেকের ভূমিকা ব্যাখ্যা করার পাশাপাশি তথ্য সংগ্রহের কাজও করে পুলিশ। পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘‘আমরা কমিশনারেটের প্রতিটি থানা এলাকা ধরে সব পক্ষকে নিয়ে শিবির করব। মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলে নিয়মভাঙা পুলকারের ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেব। এখন মূলত সবাইকে সচেতন করার কাজ করছি।’’
পুলকার নিয়ে বিভিন্ন স্কুলের নানা পদক্ষেপের বিষয়েও সমালোচনা উঠে এসেছে পুলিশকর্তাদের ব্যাখ্যায়। কমিশনারেটের এসিপি (ট্র্যাফিক) রিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ‘‘অনেক স্কুলের ভিতরেই যথেষ্ট জায়গা আছে। আমি নিজে গিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছি, বাচ্চাদের নিরাপত্তা আর সুরক্ষার জন্য গাড়ি স্কুলগেটের ভিতরে ঢুকতে দিন। চালকেরা বাচ্চা নামিয়েই ফিরে যাবেন। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ বহু ক্ষেত্রেই সেই অনুমতি দিচ্ছেন না।’’
পুলকার-চালকদের একাংশও মানছেন, অনেক পুলকার যথাযথ ভাবে নিয়ম মেনে চলে না। ফলে তাঁরাও চান, এ ক্ষেত্রে পুলিশ ব্যবস্থা নিক। সাম্প্রতিক পরিস্থিতির জেরে ‘হুগলি পুলকার অ্যাসোসিয়েশন’ নামে একটি সংগঠন তৈরি হয়েছে। শ্রীরামপুরের বাসিন্দা, পুলকার চালক প্রসেনজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গাড়িতে অগ্নি-নির্বাপণ যন্ত্র এবং ফার্স্ট-এড বক্স রাখা, পুরনো টায়ার পাল্টানো, ফিটনেস সার্টিফিকেট ঠিক করা-সহ নানা নির্দেশ এসেছে। এগুলো কার্যকর করার জন্য নির্দিষ্ট সময় দেওয়া দরকার। বেপরোয়া গাড়ির বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হোক। তবে সব পুলকার বাণিজ্যিক করতে হলে আমাদের ব্যবসা লাটে উঠবে। তাতে অনেক টাকা কর দিতে হবে। অভিভাবকেরা বাড়তি ভাড়া দিতে চাইবেন না। তখন তাঁরা হয়তো বাচ্চাকে টোটোতে পাঠাবেন। এই দিকটাও প্রশাসন ভেবে দেখুক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy