Advertisement
১৩ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

করোনা-আক্রান্ত তৃণমূল নেতা

তৃণমূল সূত্রে খবর, এই প্রথম জেলায় দলের কোনও নেতার করোনায় আক্রান্ত হলেন।

অ-সচেতন: কারও মুখে মাস্ক নেই। আমপানে ক্ষতিপূরণ নিয়ে দূর্নীতির িবরুেদ্ধ তেহট্ট কাঁটাবেড়িয়া ২ পঞ্চায়েতে সিপিএমের স্মারকলিপি। ছবি: সুব্রত জানা

অ-সচেতন: কারও মুখে মাস্ক নেই। আমপানে ক্ষতিপূরণ নিয়ে দূর্নীতির িবরুেদ্ধ তেহট্ট কাঁটাবেড়িয়া ২ পঞ্চায়েতে সিপিএমের স্মারকলিপি। ছবি: সুব্রত জানা

নুরুল আবসার ও সুব্রত জানা
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২০ ০৩:৫৯
Share: Save:

করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন হাওড়ার আমতা ২ পঞ্চায়েত সমিতির এক গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী তথা জেলা তৃণমূলের প্রভাবশালী এক নেতা। গত দু’দিন ধরে তিনি জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। লালারস পরীক্ষার পরে সোমবার বিকেলে তাঁর করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। তাঁকে ফুলেশ্বরের একটি বেসরকারি করোনা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। করোনা সংক্রমণের আগে ওই তৃণমূল নেতা বেশ কয়েকটি দলীয় কর্মসূচিতে হাজির ছিলেন।

তৃণমূল সূত্রে খবর, এই প্রথম জেলায় দলের কোনও নেতার করোনায় আক্রান্ত হলেন। গত কয়েক দিনে তিনি দলের নানা কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন বলে তৃণমূল নেতারা জানিয়েছেন। তাঁর সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের বিষয়ে খোঁজখবর শুরু করছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। যদিও আমতার তাজপুরের বাসিন্দা করোনা-আক্রান্ত তৃণমূলের ওই জনপ্রতিনিধির দাবি, ‘‘জ্বর হওয়ার পরেই নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে নিয়েছিলাম। বাড়িতেই আইসোলেশনে ছিলাম। অফিসেও যাইনি। কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও যোগ দিইনি।’’ তৃণমূল নেতার করোনা সংক্রমণের খবর ছড়িয়ে পড়ায় প্রশ্ন উঠেছে, এ পরেও কি পথে নেমে কর্মসূচি চালিয়ে যাবে শাসকদল। গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় সরকারের নানা ‘জন‌বিরোধী’ নীতির প্রতিবাদে মিছিল করে তৃণমূল। দলের কর্মীরা মাস্ক পরে সেই কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন বলে দলের নেতারা দাবি করলেও, বাস্তবের ছবিটা ছিল ঠিক বিপরীত ছিল বলে অভিযোগ। পারস্পরিক দূরত্বও বজায় রাখা হয়নি। দলীয় নেতার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরে রাজনৈতিক কর্মসূচি কী ভাবে পালিত হবে তা নিয়ে দলের রাজ্য নেতাদের পরামর্শ চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন গ্রামীণ জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা উলুবেড়িয়া দক্ষিণের বিধায়ক পুলক রায়। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য নেতৃত্বকে বিষয়টি জানাব। তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় যা ঠিক হবে, তা-ই মেনে চলব।’’ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি অবশ্য এখনই রাজনৈতিক কর্মসূচি বন্ধ করছে না। বিজেপির হাওড়া গ্রামীণ জেলা সভাপতি শিবশঙ্কর বেজ এবং সিপিএমের জেলা সম্পাদক বিপ্লব মজুমদারের অভিযোগ, করোনা-প্রতিরোধে তৃণমূল সরকার ব্যর্থ। চিকিৎসকদের সব পরামর্শ উপেক্ষা করে তৃণমূল প্রকাশ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। প্রশাসনও ঢিলেঢালা মনোভাব দেখাচ্ছে। কোথাও কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। সেই কারণেই, জেলায় হু-হু করে করোনা ছড়াচ্ছে। বিপ্লববাবুর দাবি, ‘‘পারস্পরিক দূরত্ব রেখে মাস্ক পরে রাজনৈতিক কর্মসূচি করছি। আমাদের কোনও কর্মসূচির জন্য করোনা ছড়াচ্ছে, তা কেউ প্রমাণ করতে পারবে না।’’ সোমবার উলুবেড়িয়া ২ ব্লকের তেহট্ট কাঁটাবেড়িয়া ২ পঞ্চায়েতে আমপানে ক্ষতিপূরণ বিলি নিয়ে ‘দুর্নীতি’র অভিযোগ তুলে কয়েকশো সিপিএম কর্মী-সমর্থক প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দেন। তাঁদের অনেকের মুখে মাস্ক ছিল না বলে অভিযোগ। দূরত্ব-বিধিও মানা হয়নি। শিবশঙ্করবাবুর দাবি, ‘‘আমরা রাজনৈতিক কর্মসূচি করছি ঠিকই, তবে লোক সমাগম কমিয়ে দিচ্ছি। সকলে মাস্ক পরে এবং দূরত্ব বজায় রেখে কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছেন।’’ যদিও বাস্তব চিত্র বলছে, বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা বিধি উপেক্ষা করেই বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন বহু জায়গায়।

হাওড়ায় মঙ্গলবার নতুন করে ১১৯ জন করোনায় আক্রান্ত হন। বাড়ানো হয়েছে গণ্ডিবদ্ধ এ‌লাকার সংখ্যা।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in West Bengal Coronavirus TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE