Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
ফের গ্রামীণ হাওড়ায় দুষ্কৃতী-দৌরাত্ম্য
Snatch

ছিনতাইয়ে বাধা, গুলি

অপরাধমূলক কাজ রোধ করার জন্য সাঁকরাইল থানার অধীনে ধূলাগড়িতে পুলিশ ফাঁড়ি রয়েছে। সাধারণ মানুষের অভিযোগ,  ফাঁড়ি থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে এই কাণ্ড ঘটছে।

n মর্মান্তিক: হাসপাতালে সিরাতুল হাসান। ছবি: সুব্রত জানা

n মর্মান্তিক: হাসপাতালে সিরাতুল হাসান। ছবি: সুব্রত জানা

নিজস্ব সংবাদদাতা
সাঁকরাইল শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২০ ০৫:১৩
Share: Save:

বেশ কিছুদিন ধরেই চুরি-ছিনতাই বেড়েছে গ্রামীণ হাওড়ায়। এ বার ছিনতাইয়ে বাধা দেওয়ায় এক যুবককে গুলি করে খুনের চেষ্টা করল দুষ্কৃতীরা।

বৃহস্পতিবার রাতে সাঁকরাইলের ধূলাগড়ির যে এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে, সেখান থেকে পুলিশ ফাঁড়ি মাত্র এক কিলোমিটার দূরে। শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত দুষ্কৃতীদের কাউকে ধরতে পারেনি পুলিশ। সিরাতুল হাসান শেখ নামে বছর চল্লিশের ওই যুবককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবিতে স্থানীয় বাসিন্দারা শুক্রবার সকালে প্রায় আধ ঘণ্টা জুজারশা-ধূলাগড়ি রোড অবরোধ করেন।

পুলিশ জানিয়েছে, সিরাতুলের মুখের বাঁ দিকের চোয়ালে গুলি আটকে রয়েছে। অস্ত্রোপচার করে তা বের করার চেষ্টা করছেন চিকিৎসকেরা। যে এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে সেটি হাওড়া সিটি পুলিশের আওতাধীন। সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘তদন্ত শুরু হয়েছে। আশেপাশের সমস্ত সিসিক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা চলছে।’’ আর এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘সিরাতুলের সঙ্গে এক পড়শির দীর্ঘদিন ধরে জমি-বিবাদ চলছে। তার সঙ্গে ছিনতাইয়ের যোগ রয়েছে কিনা, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সিরাতুল সাঁকরাইলের দক্ষিণ করোলা এলাকার বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার দুপুরে ধূলাগড়িতে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে একটি গ্যারাজে নিজের মোটরবাইক রেখে ট্রেনে বাউড়িয়ায় শ্বশুরবাড়ি যান। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ ধূলাগড়ি ফেরেন। তখন গ্যারাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জুজারশা-ধূলাগড়ি রোড ধরে হেঁটেই বাড়ি ফিরছিলেন।

পুলিশ ও পরিবারের লোকজনকে সিরাতুন জানিয়েছেন, রাস্তায় দুই দুষ্কৃতী তাঁর পথ আটকায়। মোবাইল ও টাকা ছিনতাইয়ের চেষ্টা করলে তিনি বাধা দেন। তখনই খুব কাছ থেকে তাঁকে গুলি করে দুষ্কৃতীরা। তারপর কিছু টাকা ছিনিয়ে নিয়ে চম্পট দেয়।

রক্তাক্ত অবস্থায় প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার হেঁটে রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ বাড়ি ফেরেন সিরাতুল। বাড়ির লোকজন ধূলাগড়ি পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দিয়ে সিরাতুলকে নিয়ে কলকাতা এসএসকেএম হাসপাতালে যান।

অপরাধমূলক কাজ রোধ করার জন্য সাঁকরাইল থানার অধীনে ধূলাগড়িতে পুলিশ ফাঁড়ি রয়েছে। সাধারণ মানুষের অভিযোগ, ফাঁড়ি থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে এই কাণ্ড ঘটছে। অথচ, পুলিশের নজর নেই। তাঁদের দাবি, রাতের রাস্তায় পুলিশের টহল থাকে না। এলাকাটি দুষ্কৃতীদের স্বর্গরাজ্য হয়ে গিয়েছে। ছিনতাইকারীদের হাতে প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র এসেছে। পুলিশ কোনও খোঁজ রাখে না।

পুলিশ এ সব অভিযোগ মানেননি। রাতে টহল চলে বলে পুলিশ দাবি করেছে। তবে, ঘটনা হল, গ্রামীণ হাওড়ায় বেশ কিছুদিন ধরে চুরি-ছিনতাই চলছেই। দিন পনেরো আগে খলিসানির কাছে ভরদুপুরে বাইকে করে এসে দুষ্কৃতীরা এক মহিলার গলা থেকে হার ছিনতাই করে পালায়। দিন চারেক আগে উলুবেড়িয়া জোড়া কলতলায় ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে এক ব্যবসায়ীকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে বাইক থেকে ফেলে দিয়ে দু’লক্ষ টাকা ছিনতাই হয়। পুলিশ এই সব ঘটনায় জড়িত কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি।

অন্য বিষয়গুলি:

Snatch robbery man shot sankrail
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE