পথে বেরোলেই নজরে পড়ে ‘সেফ ড্রাইভ, সেফ লাইফ’ লেখা বড় বড় পোস্টার। এই বিষয় নিয়ে রাতদিন টিভিতে, রাস্তায় মাইকে প্রচারও চলছে। শুধু পোস্টার বা টিভিতে নয়। এ বারে জেলার অধিকাংশ দুর্গাপুজো কমিটি তাদের থিম হিসেবে বেছে নিয়েছিল ‘সেফ ড্রাইভ, সেফ লাইফ’-কে। সেই থিম থেকে বহু পুজো কমিটি দর্শকদের হাততালি কুড়িয়েছে। কিন্তু যে উদ্দেশ্য নিয়ে এ সব করা, তার সাফল্য নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
কেন না, বৃহস্পতিবার দুপুরে বেপরোয়া গতিতে মোটরবাইক চালাতে গিয়ে ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে গুরুতর জখম হলেন তিন আরোহী। ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির বৈদ্যবাটি চৌমাথার কাছে এনটি রোডে। কারও মাথাতেই হেলমেট ছিল না। আহত ওই বাইক আরোহীদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিল্লি রোডের সঙ্গে জিটি রোডের ওই সংযোগকারী রাস্তা ধরে বৈদ্যবাটি চৌমাথার দিকে আসছিলেন ওই তিন বাইক আরোহী। উল্টোদিকে জিটি রোড থেকে দিল্লি রোডের দিকে যাচ্ছিল একটি ট্রাক। দুপুর ৩টে নাগাদ রথতলা এলাকায় ট্রাকটির সঙ্গে বাইকটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। তিন যুবকই রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন। খবর পেয়ে শেওড়াফুলি ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্রের খবর, তিন জনের আঘাতই গুরুতর। জখম যুবকদের পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ। তারা জানায়, তিন জনেই ভদ্রেশ্বরের অ্যাঙ্গাস এলাকার বাসিন্দা। তাঁদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে পুলিশ জেনেছে, বাইকটি দ্রুত গতিতে যাচ্ছিল।
শুধু এ দিনই নয়, প্রায় দিনই হাওড়া ও হুগলি জেলার নানা প্রান্ত থেকে বাইক-সহ অন্য গাড়ি দুর্ঘটনার খবর মেলে। আর বাইক দুর্ঘটনার পরেই জানা যায়, চালক বা আরোহী কারও মাথায় হেলমেট নেই। অথচ পুলিশ দাবি করছে, নিরাপদে গাড়ি চালানো নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে জেলা জুড়ে নানা কর্মসূচি নেওয়া হয় পুলিশ-প্রশাসনের তরফে। বাইক আরোহীদের সচেতন করতে বিভিন্ন জায়গায় হেলমেট পর্যন্ত বিলি করা হয়। এর ফলে গত কয়েক মাসে দুর্ঘটনার সংখ্যা কমেছে। কমেছে দুর্ঘটনায় মৃত্যু সংখ্যাও। তাদের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী হুগলি জেলায় জুন মাসে দুর্ঘটনা হয়েছে ৮৭, মৃত্যু ৪৭, জুলাইতে দুর্ঘটনা ৮০, মৃত্যু ৪৭, অগস্টে দুর্ঘটনা ৭৯, মৃত্যু ৩৪ এবং সেপ্টেম্বরে দুর্ঘটনা ৭০, মৃত্যু ২৪।
কিন্তু পরিসংখ্যান যাই হোক না কেন, স্থানীয় বাসিন্দারা অবশ্য বলছেন, দুর্ঘটনা কমেনি। তাঁদের অভিযোগ, সব রকম ভাবে চেষ্টা সত্বেও পুলিশের তৎপরতা কিছুটা আলগা হতেই প্রায় সর্বত্রই হেলমেট পরার প্রবণতা ফের কমেছে। অপেক্ষাকৃত কম বয়সী বাইক আরোহীদের ক্ষেত্রে আইন না মানার প্রবণতা বেশি। এ প্রসঙ্গে হুগলি জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘নিয়ম মেনে চললে যে আখেরে নিজেদের জীবনই সুরক্ষিত থাকবে, এটাই হয় তো অনেকে বুঝতে চান না। তার ফলেই বহু দুর্ঘটনা ঘটে। নিরাপদে গাড়ি চালানো নিয়ে ফের চেষ্টা করা হবে। তাতে যদি শুভবুদ্ধি ফেরে মানুষের!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy