Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

ত্রিকোণ প্রেমের জের, কিশোরীকে অপহরণের চেষ্টার অভিযোগে ধৃত ৪

পথচলতি মানুষ হঠাত্‌ই এমন দৃশ্য দেখে থমকে দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন। এক কিশোরীর দুই হাত দু’দিক থেকে টানাটানি করছে দুই যুবক। তাদের সঙ্গে চারজন যুবক। সেইসঙ্গে নিজেদের মধ্যে মারপিটও করছে। রাস্তার মধ্যে একটি মেয়েকে এ ভাবে হেনস্থা হতে দেখে নোকজন এগিয়ে এসে ওই চার যুবককে ধরে মারধর শুরু করেন। কিশোরীকে অপহরণের চেষ্টার অভিযোগে ওই চার যুবককে পরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। রবিবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটে আরামবাগের মুথাডাঙা বাসস্ট্যান্ডে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আরামবাগ শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:৪৪
Share: Save:

পথচলতি মানুষ হঠাত্‌ই এমন দৃশ্য দেখে থমকে দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন। এক কিশোরীর দুই হাত দু’দিক থেকে টানাটানি করছে দুই যুবক। তাদের সঙ্গে চারজন যুবক। সেইসঙ্গে নিজেদের মধ্যে মারপিটও করছে। রাস্তার মধ্যে একটি মেয়েকে এ ভাবে হেনস্থা হতে দেখে নোকজন এগিয়ে এসে ওই চার যুবককে ধরে মারধর শুরু করেন। কিশোরীকে অপহরণের চেষ্টার অভিযোগে ওই চার যুবককে পরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। রবিবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটে আরামবাগের মুথাডাঙা বাসস্ট্যান্ডে।

পুলিশ জানায় স্থানীয় বাসিন্দা, খোকন খন্দকারের অভিযোগের ভিত্তিতে দেবীপ্রসাদ দাস, সুভাষ রায়, তাপস দুলে এবং অভিজিত্‌ দুলে নামে ওই চার যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রথম জনের বাড়ি বর্ধমানের রামবাটি, দ্বিতীয় জনের বাড়ি আরামবাগের পল্লিশ্রী। বাকি দুজনের বাড়ি আরামবাগের নওপাড়ায়। সোমবার ধৃতদের আরামবাগ আদালতে তোলা হলে তাদের ১১ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। কিশোরীকে তাঁর ব্যক্তিগত জামিনে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, বছর উনিশের ওই কিশোরীর দুই হাত ধরে টানা হ্যাঁচড়া করছিল দুই যুবক। কাছেই দাঁড়িয়েছিল দু’টো ভাড়া করা গাড়ি। টানাটানিতে যন্ত্রণায় চিত্‌কার করছিলেন কিশোরীটি। স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং বাসের জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রীরা হতভম্ব হয়ে যান এ সব দেখে। কিশোরীর ডান হাত ধরে থাকা এক যুবক আচমকা কিডন্যাপ কিডন্যাপ বলে চেঁচিয়ে উঠতেই একটি গাড়ি থেকে আরও দুই যুবক নেমে তাঁকে চড়চাপড় মারতে মারা শুরু করে। সম্বিত ফিরলে লোকজন মারপিট ছাড়িয়ে ঘটনা জানতে চাইলে কিশোরীর বাঁ হাত ধরে থাকা যুবক সুভাষ দাবি করেন যে তাঁরা, মাস দেড়েক আগে কালীমন্দিরে বিয়ে করেছেন। সঙ্গে সঙ্গে ডান হাত ধরে থাকা যুবক দেবীপ্রসাদ দাবি করেন চার বছর ধরে তাঁরা পরস্পরকে ভালবাসেন। তিনি কিশোরীর গৃহশিক্ষক ছিলেন।

উপস্থিত লোকজন কিশোরীর কাছে প্রকৃত ঘটনা জানতে চান। কিন্তু কিশোরীটি এ নিয়ে কিছু না বলায় চার যুবককেই বেধড়ক মারধর করে পুলিশ ডাকেন লোকজন। কিশোরীকে তারা অপহরণ করার চেষ্টা করছিলেন বলে ওই চার যুবককে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ত্রিকোণ প্রেমের পরিণতিতেই এই ঘটনা। বর্ধমানের মাধবডিহি থানা এলাকার বাসিন্দা ওই কিশোরী দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় তার গৃহশিক্ষক ছিলেন পাশের গ্রাম রামবাটির দেবীপ্রসাদ দাস। মাসছয়েক আগে গৃহশিক্ষকের সঙ্গে মেয়ের সম্পর্কের কথা জানতে পেরে দেবীপ্রসাদকে নিষেধ করে দেন কিশোরীর পরিবার। কিন্তু তাতে দুজনের সম্পর্কে ছেদ পড়েনি। ফোন করে বাইরে দেখা সাক্ষাত্‌ চলছিল। অন্যদিকে ফোনে মিসড কলের সূত্র ধরে কিশোরীর সঙ্গে আলাপ হয় আরামবাগের পল্লিশ্রীর বাসিন্দা সুভাষের। সেই সম্পর্কও গভীর হয়। যদিও কিশোরীটি তার দুই প্রেমিকের কাছে সমস্ত বিষয়টি চেপে রেখে সম্পর্ক টিকিয়ে রেখেছিল।

রবিবার কিশোরীটি দেবীপ্রসাদকে ফোন করে বাসে একসঙ্গে আরামবাগ মেলায় আসে। মেলায় সুভাষও আসায় ত্রিকোণ প্রেমের বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়। সুভাষ ঝামেলা করতে পারে ভেবে দেবীপ্রসাদ প্রেমিকাকে নিয়ে গৌরহাটি মোড়ে এসে একটি গাড়ি ভাড়া করে তারকেশ্বরের দিকে পালাতে থাকে। সুভাষও তার দুই বন্ধুকে নিয়ে একটা গাড়ি ভাড়া করে পিছু ধাওয়া করে মুথাডাঙায় তাদের আটকায়। তারপরেই ঘটে এই ঘটনা।

অন্য বিষয়গুলি:

southbengal arambagh kidnap triangle love
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy