গুড়িয়া হত্যা মামলায় শুক্রবার আদালতে সাক্ষ্য দিলেন হোমের তৎকালীন সহ-সম্পাদক সোনালি চক্রবর্তী। এর আগে নিজেদের সাক্ষ্যে হোমের কর্মী মানিক মণ্ডল এবং প্রোজেক্ট অফিসার আশুতোষ খাটুয়া হোমের মেয়েদের উপরে হোমের সম্পাদক উদয়চাঁদ কুমার এবং তার ঘনিষ্ঠ শ্যামল ঘোষ অত্যাচার করতো বলে জানিয়েছেন। এদিন ওই দু’জনের বিরুদ্ধে একই কথা বললেন সোনালি দেবীও।
চুঁচুড়া জেলা আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (ফাস্ট কোর্ট) অরূপ বসুর এজলাসে দাঁড়িয়ে সোনালিদেবী জানান, শ্যামল ঘোষ হোমের কেউ ছিল না। কিন্তু রোজই সেখানে আসত। কোর্টে উপস্থিত সব আসামীদের তিনি চেনেন বলেও আদালতকে জানান সোনালিদেবী। তিনি বলেন, ‘‘বড়দা অর্থাৎ উদয়চাঁদ কুমার ও শ্যামল ঘোষ প্রায় দিনই হোমের বাসিন্দাদের মারধর করত। শারীরিক নির্যাতন করত। ধর্ষণে বাধা দিলে মারধর করত।’’ পরে তিনি আরও বলেন, ‘‘গুড়িয়ার মৃত্যুর খবর আমাকে সুলেখা ঘোষ ২০১২ সালের ২ জুলাই জানান। শুনেছি শ্যামল ঘোষ ও উদয় তাঁকে হত্যা করেছে। মাথায় বাঁশের আঘাত করায় গুড়িয়ার মৃত্যু হয়েছিল এবং কাউকে কিছু না জানিয়ে সকলের অলক্ষ্যে হোমের পিছনের অংশে পুঁতে দেওয়া হয়েছিল। আমার অনুমান, গুড়িয়াকে শ্যামল ও উদয় দু’জনে ধর্ষণ করে খুন করেছিল।’’ মামলার সরকারি আইনজীবী বিদ্যুৎ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘এই নিয়ে হোমের বেশ কয়েক জন কর্মী আদালতে সাক্ষী দিলেন। মামলার প্রধান দুই অভিযুক্ত আবাসিকদের উপর অত্যাচার করত বলে তাঁদের প্রায় সকলেই আদালতকে জানিয়েছেন।’’
২০১২ সালের ১১ জুলাই গুড়াপের খাজুরদহ-মিল্কি এলাকার ওই হোম চত্বরে মাটি খুঁড়ে মানসিক ভারসাম্যহীন বছর বত্রিশের গুড়িয়ার দেহ উদ্ধার হয়। তাঁকে খুন করে মৃতদেহ পুঁতে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। প্রশাসনের চোখে ধুলো দিতে চিকিৎসকের সই জাল করে ‘ডেথ সার্টিফেকেট’ তৈরি করে গুড়িয়ার মৃত্যু স্বাভাবিক বলে দেখানোর চেষ্টাও হয় বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় ওঠে। মূল অভিযুক্ত উদয়চাঁদ এবং শ্যামল ঘোষ-সহ ১০ জনের বিরুদ্ধেই আদালতে চার্জশিট দাখিল করে সিবিআই। গুড়িয়ার ঘটনা সামনে আসার পরে তদন্তে নেমে বর্ধমানের জামালপুরে দামোদরের চরে মাটি খুঁড়ে ওই হোমের আরও কয়েকজন আবাসিকের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। হোমটি সিল করে দেয় রাজ্য সরকার।
ওই হোমেরই মানসিক প্রতিবন্ধী এক আবাসিককে ধর্ষণের মামলা চলছে চুঁচুড়া আদালতের তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক মানস বাসুর এজলাসে। মামলার সরকারি আইনজীবী বিদ্যুৎ রায়চৌধুরী জানান, এ দিন ওই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব শেষ হয়েছে। আগামী ২ ও ৫ অগস্ট শুনানির দিন ঠিক করেছেন বিচারক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy