এক ফ্রেমে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে পান্ডুয়া ও ধনেখালির আদিবাসীরা। নিজস্ব চিত্র।
ওঁরা মাঠেঘাটে কাজ করেন। পাশাপাশি, নানা অনুষ্ঠানে আদিবাসী নৃত্য প্রদর্শন করে। আগে কখনও ভিন্ রাজ্যে অনুষ্ঠান করতে যাওয়ার সুযোগ মেলেনি। এ বারই প্রথম সুযোগ। তা-ও একেবারে রাষ্ট্রপতির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে। খোদ রাইসিনা হিলসের নয়া বাসিন্দা ছবি তুললেন ওঁদের সঙ্গে। রাজধানী দিল্লির বুকে জমকালো সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পেরে আপ্লুত হুগলির পান্ডুয়া এবং ধনেখালির আদিবাসী সম্প্রদায়ের ২৭ জন নৃত্যশিল্পী।
দেশের পঞ্চদশ রাষ্ট্রপতি হিসেবে গত সোমবার শপথ নেন দ্রৌপদী মুর্মু। তিনি নিজে আদিবাসী। তাঁর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানেই পান্ডুয়া ব্লকের ১৮ জন এবং ধনেখালি ব্লকের ৯ জন নিজেদের শিল্প নিয়ে উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা জানান, শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের আগে বিভিন্ন প্রাদেশিক শিল্প প্রদর্শিত হয়। সেখানেই তাঁরা আদিবাসী নাচ দেখান। ধামসা-মাদলের সুরে নাচের ছন্দ হাততালি আদায় করে নেয়। বুধবার সন্ধ্যায় তাঁরা বাড়ি ফিরেছেন।
বৃহস্পতিবার পান্ডুয়া ব্লকের হরাল-দাসপুর পঞ্চায়েতের হাতনি গ্রামে নিজেদের বাড়ির মাটির দাওয়ায় বসে কয়েক জন শিল্পী শোনালেন অভিজ্ঞতার কথা। দিল্লিতে তাঁরা ছিলেন রাষ্ট্রপতি ভবনের উল্টো দিকে যুব আবাসে। দলনেত্রী পূর্ণিমা মান্ডি জানান, রাষ্ট্রপতি সাঁওতালি ভাষায় তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন। কুশল বিনিময় হয়। পূর্ণিমা বলেন, ‘‘রাষ্ট্রপতি সৌজন্য দেখিয়ে আমাদের নমস্কার করেন। আমরা ওঁর সঙ্গে অনেক ছবি তুলেছি। খুব আনন্দ হয়েছে। এমন মুহূর্ত আমাদের জীবনে আসবে, কোনও দিন ভাবিনি। ওই অনুষ্ঠানের কথা কোনও দিন ভুলব না।’’ পূর্ণিমা হরাল-দাসপুরের বিজেপি মণ্ডলের সাধারণ সম্পাদক।
অনুষ্ঠানের চাকচিক্য, এলাহি আয়োজন ওই দলের সদস্যদের কার্যত চোখে লেগে রয়েছে। এক সদস্যের কথায়, তাঁরা গ্রামের গরিব মানুষ। সমাজের তথাকথিত উঁচু শ্রেণির লোকেরা তাঁদের সঙ্গে ভাল করে কথা বলেন না। সেই জায়গায় দিল্লির ওই অনুষ্ঠানে তাঁদের যে ভাবে আপ্যায়ন করা হয়েছে, তাতে তাঁরা আপ্লুত। ষাটোর্ধ্ব রঞ্জিত মান্ডি বলেন, ‘‘ওখানে মন্ত্রী থেকে পুলিশকর্তা আমাদের সঙ্গে একসঙ্গে খাবার খেয়েছেন।’’ সুন্দরী মান্ডি, শ্যামলাল মান্ডিরা বলেন, ‘‘আমরা মাটিতে ঘুমোই। ওখানে দামি বিছানায় শুয়েছি।’’ অনুষ্ঠান করে পারিশ্রমিক না পেলেও আতিথেয়তার বহরে তাঁদের খেদ নেই বলে শিল্পীদের একাংশ জানান। তাঁরা যাতায়াত করেছেন নিখরচায়।
সুন্দরীরা জানান, তাঁরা রাজ্য সরকারের তরফে শিল্পী-ভাতা পান। আবাস যোজনায় কারও কারও ঘর হয়েছে। বাড়ি ফিরে রাষ্ট্রপতি ভবনের স্মৃতি বুকে নিয়ে বৃহস্পতিবার মাঠের কাজে লেগে পড়েছেনশিল্পীদের অনেকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy