কান্নায় ভেঙে পড়েছে পলাশ সামন্তর পরিবারদের লোকজন। —নিজস্ব চিত্র।
স্বামীকে হারিয়েছেন। তাঁর নিথর দেহ শোয়ানো আছে অ্যাম্বুল্যাম্সে। স্বামীর দেহ নিতে এসে সেই অ্যাম্বুল্যান্সেই মাথা ঠুকে কান্নায় ভেঙে পড়লেন হোমগার্ড পলাশ সামন্তের স্ত্রী পিয়ালি।
বৃহস্পতিবার ভোরে বাগনানের বরুন্দা গ্রামে মুম্বই রোডে পুলিশের টহলদারি গাড়িকে ধাক্কা মারে দশ চাকার ট্রাক। ঘটনাস্থলেই মারা যান বাগনান থানার সাব ইনস্পেক্টর সুজয় দাস এবং হোমগার্ড পলাশ সামন্ত। পরে তাঁদের দেহ আনা হয় বাগনান থানায়।
পলাশের বাড়ি বাগনানের দীপামালিতা গ্রামে। বছর সাতেক আগে তাঁর বিয়ে হয়। কয়েক বছর ধরে স্ত্রী পিয়ালি এবং পাঁচ বছরের মেয়ে পিয়াঞ্জনাকে নিয়ে বাগনানেই বাড়ি তৈরি করে থাকছিলেন।গ্রামের বাড়িতে থাকতেন তাঁর বাবা-মা। এ দিন পিয়ালির সঙ্গে এসেছিলেন পলাশের বাবা এবং আত্মীয়েরা। কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না পিয়ালি।
থানা সূত্রের খবর, পলাশ কর্মজীবন শুরু করেন বাগনান থানায় সিভিক ভলান্টিয়ার হিসাবে। পরে হোমগার্ড পদে চাকরি পান। বিভিন্ন থানা ঘুরে বছর তিনেক আগে ফের বাগনান থানাতেই বদলি হয়ে আসেন। ভাল ব্যবহারের জন্য সহকর্মীদের প্রিয় ছিলেন বলে জানালেন আধিকারিকেরা।
এ দিন সকালে বেলুড়ের কামাখ্যা নাথ চ্যাটার্জী স্ট্রিটে সুজয়ের বাড়িতে গিয়েও দেখা গেল, কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিজনেরা। তাঁরা জানালেন, ২০০৩ সালে কলেজে পড়ার সময়ে কনস্টেবল পদে চাকরি পান সুজয়। ভাল ফুটবল-ক্রিকেট খেলতেন। খেলার সুবাদেই মিলেছিল চাকরি। কনস্টেবল থেকে পদোন্নতি পেয়ে এএসআই হয়েছিলেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন থানায় ছিলেন। এসআই পদোন্নতি পেয়ে মাস ছয়েক হল বাগনান থানায় যোগ দেন। সুজয়ের বছর তিনেকের ছেলে ও বারো বছরের মেয়ে রয়েছে।
বুধবার রাত ১১টার সময়ে শেষ বারের মতো কথা হয়েছিল। মোবাইল ফোনের স্পিকার অন করে সুজয়ের সঙ্গে কথা বলেছিল মেয়ে। তখনই স্ত্রী ইনাকে সুজয় জানান, কাজে আছেন। ইনা বলেন, ‘‘কথাবার্তা বলে শুয়ে পড়ার কথা ছিল। কিন্তু পরে ফের টহলে বেরোন। তাতেই এত বড় সর্বনাশ হয়ে গেল!’’
এ দিন ভোর ৫টায় সুজয়ের দাদা সঞ্জয়ের কাছে ফোন আসে বাগনান থানা থেকে। জানানো হয় দুর্ঘটনার কথা। বেলুড় থেকে বাগনানে রওনা দেন সঞ্জয়েরা। পরিজনেরা জানান, বছর তেতাল্লিশের সুজয় দিন পনেরো অন্তর এক দিনের জন্য বাড়ি আসতেন। তবে ছেলের জন্মদিন উপলক্ষে ২৮ ডিসেম্বর তিন দিনের ছুটি নিয়ে বাড়িতে এসেছিলেন। এলাকায় মিশুকে হিসেবেই তাঁকে চিনতেন পড়শিরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy