দ্বারকেশ্বরের বাঁধের উপর অস্থায়ী ঘরের প্রস্তুতি চলছে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ।
টানা বৃষ্টিতে প্রমাদ গুনছিলেন সেচকর্তারা। তাঁদের আশঙ্কামতো আরামবাগ মহকুমায় দ্বারকেশ্বর নদের জলস্তর প্রাথমিক বিপদসীমার (১৬.৬১ মিটার) কাছে চলে এল বৃহস্পতিবার সকালে। বাঁধ উপচে নদের জল ঢুকল আরামবাগ শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সতীতলা এবং মনসাতলায়। বিপদের আশঙ্কায় নদ তীরবর্তী এলাকার লোকজনকে নিরাপদ জায়গায় সরানো শুরু করে দেয় প্রশাসন।
ঝাড়খণ্ড এবং বাঁকুড়ার বৃষ্টির জমা জল (বাঁকুড়া ক্যাচমেন্ট এরিয়া) মূলত আরামবাগ শহরের গা দিয়ে বয়ে যাওয়া দ্বারকেশ্বর নদ হয়ে দক্ষিণে রূপনারায়ণে পড়ে। দ্বারকেশ্বর দিয়ে প্রায় ৪০ হাজার কিউসেক হারে জল বয়েছে এ দিন সকাল থেকে। বিকেলে জলের চাপ কিছুটা কমলেও পরে ফের বাড়ে বলে জানিয়েছেন সেচ দফতরের আরামবাগ মহকুমার সহকারী বাস্তুকার শ্রীকান্ত পাল। তিনি বলেন, ‘‘দ্বারকেশ্বরে জলের চাপ তো আছেই, ফের নতুন করে প্রায় ৪৯ হাজার কিউসেক জল আসছে বাঁকুড়া ক্যাচমেন্ট এরিয়া থেকে। শুক্রবার সকালেই তা চলে আসার কথা। ফলে, আমাদের উদ্বেগ রয়েছে।’’
প্রায় প্রতি বছর দ্বারকেশ্বর নদের বাঁধ ভেঙে কিংবা জল উপচে প্লাবিত হয় আরামবাগ মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা। তার মধ্যে রয়েছে আরামবাগ পুরসভা, আরামবাগ ব্লক এবং গোঘাট-১, খানাকুল-১ ও ২ ব্লক। গত মঙ্গলবার থেকে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। বাঁকুড়াতেও ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এর জেরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দ্বারকেশ্বর ফুলে ওঠে। অবশ্য বুধবার বিকেল থেকেই পুর কর্তৃপক্ষ এবং নদ সংলগ্ন পঞ্চায়েতগুলি বাঁধের ধারে বসবাসকারীদের জন্য মাইকে সতর্কবার্তা প্রচার করে।
বৃহস্পতিবার ভোরেই পুরসভার পক্ষ থেকে সতীতলায় বাঁধের ভিতরে বসবাসকারী প্রায় ১৫০টি পরিবারকে বাঁধের উপরে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে আনা হয়। পুরপ্রশাসক স্বপন নন্দী বলেন, ‘‘যে দুই জায়গায় বাঁধ উপছে জল ঢুকেছে, সেখানে সেচ দফতর বালির বস্তা দিয়ে সামাল দিয়েছে। আমরা যে সব পরিবারকে বাঁধের উপরে নিরাপদ জায়গায় তুলে এনেছি, তাদের জন্য ত্রাণেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
আরামবাগের সালেপুর-১ পঞ্চায়েতের মোবারকপুর, পার্বতীচক ও সালেপুর-২ পঞ্চায়েতের বেড়াবেড়ে, ডহরকুণ্ডু এলাকার নদ সংলগ্ন বাসিন্দাদের নিরাপদ জায়গায় আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিডিও কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায়। খানাকুলের দু’টি ব্লক এলাকার কাউকে অবশ্য এ দিন বিকেল পর্যন্ত সরাতে হয়নি। তবে, খানাকুল-১ ব্লকের কিশোরপুর-১ পঞ্চায়েতের বন্দিপুরে বাঁধের গর্ত (ঘোগ) দিয়ে বাইরে জল বের হওয়ায় সকালে আতঙ্ক ছড়ায়। সেচ দফতর বালির বস্তা দিয়ে তা দ্রুত মেরামত করে বলে জানিয়েছেন বিডিও শান্তনু চক্রবর্তী। বৃষ্টিতে খানাকুল-২ ব্লকের বেশিরভাগ মাঠঘাট ডুবেছে।
ডিভিসি-র ছাড়া জলে দামোদর এবং মুণ্ডেশ্বরীতে জল বাড়লেও এখনও তা প্রাথমিক বিপদসীমা থেকে অনেক নীচে থাকায় বিপদের আশঙ্কা নেই বলে সেচ দফতর জানিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy